ফটিকছড়ি উপজেলা সংবাদদাতা : ফটিকছড়িতে মায়ের আকুতি এবং ইউএনও’র নির্দেশ উপেক্ষা করে ৬ষ্ঠ শ্রেণীর এক ছাত্রীকে জোরপূর্বক বাল্যবিবাহ দেয়ার অপরাধে পিতাকে একমাসের কারাদÐ দিয়ে কারাগারে পাঠিয়েছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। এ ঘটনায় পুরো এলাকাজুড়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।
জানা যায়, উপজেলার লেলাং ইউপির দমদমা গ্রামের মোজাফফর চৌধুরী বাড়ীর জনৈক মোহাম্মদ এনামুল হক তার স্ত্রীকে ছেড়ে দেয়। স্ত্রীকে ছেড়ে দেবার পর ওই ঘরের কন্যা জান্নাতুল মাওয়া (১৩) আত্মীয়’র বাসায় থেকে চট্টগ্রাম শহরের হামজারবাগস্থ রহমানিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে ৬ষ্ঠ শ্রেণীতে পড়া-লেখা করে আসছিল। এরই মধ্যে তার বাবা এনাম মেয়েকে বিয়ে দেয়ার চেষ্টা করে। তালাকপ্রাপ্তা মা বিষয়টি আঁচ করতে পেরে স্থানীয় লেলাং ইউপি চেয়ারম্যান সরোয়ার উদ্দিন শাহীনকে জানায়। ইতোমধ্যে কিশোরীর বাবা জন্মসনদে বয়স বৃদ্ধি করতে ইউপিতে গেলে চেয়ারম্যান নিষেধ করেন। কিন্তু চেয়ারম্যানের কথা না শুনে মেয়ের বাবা বিবাহ পাকাপাকি করে ফেলে। বিষয়টি বিভিন্ন মাধ্যমে জানতে পেরে ফটিকছড়ি’র ইউএনও মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম ইউপি চেয়ারম্যান-সদস্য মারফত খবর পাঠিয়ে বাল্যবিবাহ দেয়া থেকে বিরত থাকার জন্য মেয়ের পিতাকে নির্দেশ দেন। কিন্তু তাতেও কর্ণপাত না করে তিনি গত বুধবার (২৬ অক্টোবর) চট্টগ্রাম কোর্ট বিল্ডিং এলাকায় গিয়ে একই উপজেলার পূর্ব মাইজভান্ডার (আমতলী) গ্রামের মুহাম্মদ ইলিয়াছের ছেলে মুহাম্মদ রাসেলের সাথে কোর্ট ম্যারেজের মাধ্যমে মেয়ের বাল্যবিবাহ’র কাজ সম্পন্ন করে ফেলে। নির্দেশ উপেক্ষা করে এ বাল্যবিবাহ’র সংবাদ পেয়ে ইউএনও নজরুল স্থানীয় ইউপি সদস্যদের মাধ্যমে মেয়েটির পিতা এনামকে বুধবার (২৬ অক্টোবর) রাত ১০টা নাগাদ তার কার্যালয়ে নেয়ার ব্যবস্থা করেন। রাতে নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) মুহাম্মদ নাজিমুল হায়দার জিজ্ঞাসাবাদ করলে মেয়েটির পিতা এনাম বাল্যবিয়ের কথা স্বীকার করেন। এ সময় বাল্যবিবাহ নিরোধ আইনের ১৯২৩(৫)১ ধারায় মেয়ের পিতা এনামকে এক মাসের কারাদÐ দিয়ে ফটিকছড়ি থানায় সোপর্দ করে। ফটিকছড়ি থানার ওসি আবু ইউসুফ মিয়া বলেন, দÐপ্রাপ্ত এনামকে বৃহস্পতিবার (২৭ অক্টোবর) সকালে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
ইউএনও ফটিকছড়ি জানান, বাল্যবিবাহ’র ঘটনার বর ও তার পিতাকে আমার কার্যালয়ে নিয়ে আসতে নানুপুর ইউপি চেয়ারম্যানকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন