করোনাকালীন সময়ে স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকায় কিশোর-কিশোরীদের ঘরে বসে সময় কাটাতে হচ্ছে। দেখা যাচ্ছে বাবা-মা কিংবা পরিবারের অন্য সদস্যরা তাদের বিনোদনের কথা চিন্তা করে হাতে তুলে দিচ্ছে স্মার্টফোন, ট্যাব কিংবা ল্যাপটপ। কিছু ক্ষেত্রে অনলাইন ক্লাসের খাতিরে বাবা-মা বাচ্চার হাতে মোবাইল তুলে দিতে বাধ্য হচ্ছেন। ফলে কিশোর-কিশোরীরা খুব সহজেই ইউটিউব, টিকটক, লাইকি, ফেইসবুক, বিভিন্ন গেইম এমনকি পর্নগ্রাফিতে আসক্ত হয়ে যাচ্ছে। অনেক সময় আবার বাবা মা সন্তানের প্রাইভেসির কথা চিন্তা করে আলাদা কক্ষ দিয়ে থাকে তবে তারা কী করে তা সঠিক ভাবে তদারকি করেন না। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের এই সাইডগুলোতে কিশোররা আসক্ত হয়ে পড়ে এবং এখান থেকে অনেক সময় বিভিন্ন অপরাধ কার্যক্রম তারা শিখে থাকে। কিশোরদের ভিতর ডেভিয়েন্ট বিহেভিয়ার বা সমাজচ্যুত আচারণ দিন দিন উল্লেখযোগ্য হারে বেড়ে চলছে। সুতরাং পরিবার, আর খুব সুনির্দিষ্ট করে বলতে গেলে বাবা-মার কিছু দায়িত্বহীনতা এই শিশু কিশোরদের অপরাধমুখী করে তুলছে। বাংলাদেশে ক্রম বর্ধমান অপরাধের তুলনায় কিশোর সংশোধন কেন্দ্রের সংখ্যা অনেক নগন্য। সারাদেশে মাত্র তিনটি সংশোধন কেন্দ্র রয়েছে। এসব কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য ছিল অপরাধীদের প্রশিক্ষণ দেয়া, বিভিন্নভাবে অনুপ্রেরণা দেয়া, যাতে তারা স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে পারে। তবে অভিযোগ রয়েছে, এসব সংশোধন কেন্দ্রে তারা বিভিন্ন মানসিক নির্যাতনের শিকার হয়। কিশোর সংশোধন কেন্দ্র বাড়িয়ে, দক্ষ এবং প্রশিক্ষিত কর্মচারীদের মাধ্যমে কিশোরদের প্রশিক্ষণ দিতে হবে। দরিদ্র কিশোরদের যথাযথ কারিগরি শিক্ষা, ইলেকট্রনিক ওয়ার্ক এর শিক্ষা প্রদান করতে হবে। সংশোধন কেন্দ্রগুলোর কর্মকর্তা কর্মচারী দের তদারকির ভিতরে রাখতে হবে। কিশোরদের জন্য সংশোধন কেন্দ্রগুলোতে পর্যাপ্ত বিনোদন ব্যবস্থা, শরীর চর্চা, ধর্মশিক্ষা, নৈতিকতা শিক্ষার ব্যবস্থা রাখতে হবে, যাতে তারা সহজে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে পারে এবং একটি সুন্দর সমাজ গঠক করে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে।
সৈয়দা আনিকা বুশরা
শিক্ষার্থী, ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন