শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সারা বাংলার খবর

বেলকুচির ঐতিহ্যবাহী তাঁতের শাড়ির সুনাম দেশ-বিদেশে

আব্দুর রাজ্জাক বাবু, বেলকুচি (সিরাজগঞ্জ) : | প্রকাশের সময় : ১১ জানুয়ারি, ২০২২, ১২:০২ এএম

সিরাজগঞ্জ বেলকুচি উপজেলার তাঁতের শাড়ির সুনাম রয়েছে দেশ - বিদেশ। এখানে তৈরি তাঁতের সুতি শাড়ির পাশাপাশি বেশ জনপ্রিয় ঐতিহ্যবাহী জামদানিও। দশ পনেরো বছর ধরে পাওয়ারলুমে বেলকুচিতে তঁতের শাড়ি ব্যাপকভাবে তৈরি শুরু হয়েছে। তাঁতপল্লীগুলো ভোর থেকে রাত পর্যন্ত শ্রমিকরা পাওয়ারলুম-পিটলুম ও হস্তচালিত তাঁতে নিখুঁতভাবে তৈরি করছেন সুতি কাতান, সুতি জামদানী, সিল্ক, রেশম ও গ্যাস শাড়ি।

বেলকুচিতে হস্তচালিতসহ বিভিন্ন শ্রেণির প্রায় ৬০ হাজার তাঁত রয়েছে। এসব হচ্ছে পিটলুম তাঁত ও পাওয়ারলুম তাঁত। এই শিল্পে ৮ হাজারেরও বেশি তাঁত কারখানা মালিক রয়েছেন। নারী-পুরুষ মিলিয়ে লাখেরও বেশি শ্রমিক কাজ করছেন।

একজন শ্রমিক সাধারণত হস্তচালিত তাঁতে একদিনে একটি শাড়ি বুনতে পারেন। আর পাওয়ারলুমে দিনে দুই টি শাড়ি বুনতে পারে। তবে বেশি মাত্রার স্ক্ষ্মু কারুকাজ করা শাড়ি বুনতে সময় লাগে বেশি। শাড়ি বুননের পর ফুল তোলা বা নকশা কাটার বাড়তি সুতা কাঁচি দিয়ে কেটে চূড়ান্তভাবে নকশা ফুটিয়ে তোলেন নারীরা। একজন পুরুষ তাঁত শ্রমিক দিনে ৩০০ টাকা থেকে ৫০০ টাকা ও মহিলা তাঁতশিল্পী বাড়ির কাজের ফাঁকে ফাঁকে চরকা ও নকশা কাটার কাজে দিনে ৫০ টাকা থেকে ১৫০ টাকা পর্যন্ত আয় করেন।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বেলকুচি উপজেলার, তামাই, বওড়া, শেরনগর, গাড়ামাসী, চনন্দগাঁতী, চালা গ্রামের তাঁত কারখানাগুলোয় খটখট শব্দ। নারী পুরুষদের পাশাপাশি নারীরা নাটাই ঘুড়িয়ে নলিতে সুতা তুলছেন কেউবা কাপড়ের বাড়তি সুতা কেটে গুছিয়ে রাখছেন।
এ অঞ্চলের তৈরি কাপড় দেশের নামি দামী ব্যান্ডের শো-রুমে যাচ্ছে। ¯ট্যান্ডার্ড, আমানত শাহ্, আড়ংসহ দেশের বড় বড় কোম্পানিগুলোতে। কোম্পানিগুলো অফ সিজনে তাদের দেয়া ডিজাইনে তাঁতিদের কাছ থেকে হাজার হাজার শাড়ি কম মূল্যে কিনে মজুদ করে রাখেন। পরে সিজনের সময় নিজেদের লেভেল লাগিয়ে দ্বিগুন দামে দেশের বিভিন্ন স্থানের পাশাপাশি ভারতসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রপ্তানি করেন। এছাড়াও তাঁতিরা তাদের উৎপাদিত তাঁত পণ্য জেলার শাহজাদপুর, এনায়েতপুর, সোহাগপুর, সিরাজগঞ্জ নিউমার্কেট ও টাঙ্গাইলের করটিয়ায় কাপড়ের হাটেও বিক্রি করেন। এসব হাট থেকে ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জেলার পাইকাররা কিনে নিয়ে যাচ্ছেন।

বেলকুচির পাইকারি বিক্রেতা বসুন্ধারার রাজরাণী টেক্সটাইলের মালিক আব্দুল্লাহ জানান, দেশের দুর দুরান্ত থেকে পাইকারি শাড়ি কাপড় কেনার জন্য নিয়মিত ক্রেতারা আসেন। পাশাপাশি অনেক ক্রেতা নিজেরা ব্যবহার করার জন্য আমাদের কাছে এসে শাড়ি কিনে নিয়ে যান। আমাদের এখানে সীমিত লাভ করে শাড়ি কাপড় বিক্রি করা হয়। খুচরার চেয়ে বেশি বিক্রয় হয় পাইকারি ।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন