কুষ্টিয়া জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক জিয়াউল হক স্বপনের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে। স্বপন কুমারখালী উপজেলার কয়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান। চার বছর আগে এক নারীর কাছ থেকে তার স্বামীকে আমেরিকা (বিদেশ) পাঠানোর কথা বলে সাড়ে ৬ লাখ টাকা নেন যুবলীগ নেতা স্বপন।
এ ঘটনায় ওই নারী কুষ্টিয়ার কুমারখালী থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।পুলিশ গত ৯ জানুয়ারি অভিযোগটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) হিসেবে গ্রহণ করেছে। জিডি নম্বর ৩৮৭।
কুষ্টিয়া শহরের কাস্টম মোড়ের কলা বাগ রোডের বাসিন্দা মোছা. ফিরোজা তার অভিযোগে উল্লেখ করেন, গত চার বছর আগে তার স্বামী মামুন আল জাহিদকে বিদেশে পাঠানোর কথা বলে জিয়াউল হক স্বপন নগদ সাড়ে ৬ লাখ টাকা নেন। নির্দিষ্ট সময় পার হলেও তার স্বামীকে বিদেশে পাঠাননি।এরপর টাকা ফেরত চাইলে স্বপন তালবাহানা শুরু করে।
কথা হলে ফিরোজা বলেন, চার বছর আগে স্বামী একটা চাকরি করতো। সেই চাকরি চলে যাওয়াকে কেন্দ্র করে ও রাজনীতির সূত্র ধরে স্বপনের সাথে আমাদের পরিচয় ঘটে। সেই সময় স্বপন বলেছিলেন তার পরিবারের ২৬ জন আমেরিকা থাকে।
তাই আমেরিকা পাঠাতে পারবেন বলেন নগদ সাড়ে ৬ লাখ টাকা নেন। সেই সময় সাড়ে ৬ লাখ টাকার একটি চেক দিলেও কৌশলে তা আবার ফেরত নিয়ে নেন স্বপন। ফেরত নিয়ে স্বপন ৫০ হাজার টাকা ফেরত দেয়। এই চার বছরে অল্প অল্প করে কিছু টাকা সে ফেরত দিয়েছে। এখনও ৩ লাখ ৯০ হাজার টাকা পাবেন তিনি।
সম্প্রতি টাকার জন্য চাপ দিলে স্বপন বলেন, ইউপি নির্বাচনের পরে টাকা দিয়ে দেবেন। চতুর্থ ধাপে কয়া ইউনিয়ন থেকে স্বপনের ভাবি নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন। ভোটের পরে গেলে স্বপন বলেন, নির্বাচনে অনেক টাকা খরচ হয়েছে। ৭ তারিখে আসেন টাকা দিয়ে দেবো। ৭ জানুয়ারি গেলে স্বপন চরম খারাপ ব্যবহার করেন। গালিগালাজ করেন। টাকার কথা বললে মারতে পর্যন্ত যান ফিরোজাকে। একপর্যায়ে স্বপন নিজের স্ত্রীকে আগ্নেয়াস্ত্র বের করতে বলেন। এ সময় ফিরোজা চলে আসেন।
এছাড়াও ফোনে গালিগালাজ করে হত্যার হুমকিও দিয়েছেন স্বপন। এসব ফোন রেকর্ড আছে বলেও জানান ফিরোজা। স্বপন অনেক ক্ষমতাধর তাই নিজের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে ফিরোজা থানায় অভিযোগ দেন। অভিযোগের পর স্বপন বিষয়টি নিয়ে আরও ক্ষুব্ধ হন। ফিরোজার ভাই ও ফিরোজার সাথে মিলমিশ করার চেষ্টা করেন। তবে কোনো মিলমিশ হয়নি বলে জানান ফিরোজা। ফিরোজা বলেন, স্বপন তার সাথে প্রতারণা করেছেন। এর বিচার চান তিনি।
এ বিষয়ে কুষ্টিয়া জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক জিয়াউল হক স্বপন বলেন, টাকা পয়সা লেনদেন হয়েছিল। তবে কিছু টাকা ফেরত দিয়ে দিয়েছি। এখনও কিছু টাকা পাবে, সেটাও দিয়ে দেবো। কেউ শত্রুতা করে ফিরোজাকে ভুল বুঝিয়ে তাকে দিয়ে অভিযোগ দিয়েছেন।
এ ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি কামরুজ্জামান তালুকদার জিডি’র বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
ক্যাপশন-জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক জিয়াউল হক
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন