শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মহানগর

স্বাস্থ্যঝুঁকিতে লাখ মানুষ

চট্টগ্রামে মানহীন ‘মিনারেল ওয়াটার’ ব্যবসা

প্রকাশের সময় : ৩০ অক্টোবর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

আইয়ুব আলী : চট্টগ্রাম মহানগরীর অলিগলিতে গজিয়ে উঠেছে অনুমোদন ও লাইসেন্সবিহীন মানহীন মিনারেল ওয়াটার উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান। অসৎ চক্র প্রশাসন ও বিএসটিআইকে ফাঁকি দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে এ প্রতারণার ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। টাকা দিয়ে এসব মানহীন বোতলজাত মিনারেল ওয়াটার কিনে সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ছে। নগর থেকে গ্রামাঞ্চলের হাটবাজার পর্যন্ত মানহীন এসব মিনারেল ওয়াটার দেদারছে বিক্রি হচ্ছে।
বিএসটিআই সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রাম বিভাগের ১১ জেলায় লাইসেন্সধারী ৩০-৩৫টি মিনারেল ওয়াটার উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এর বাইরে দেড় থেকে দুই শতাধিক লাইসেন্সবিহীন অবৈধ মিনারেল ওয়াটার উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এগুলোর বেশিরভাগ ডিপ টিউবওয়েলের পানি এবং বৃষ্টির পানি সংগ্রহ করে আকর্ষণীয় লেভেলে বোতলজাত করে বাজারজাত করছে।
বিএসটিআইর পক্ষ থেকে বিভিন্ন সময়ে এসব অবৈধ মিনারেল ওয়াটার উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে জেল-জরিমানা করলেও এদের লাগাম টেনে ধরতে পারছে না। লোকবল সঙ্কটের কথা উল্লেখ করে বিএসটিআইর পক্ষ থেকে জানানো হয়, এসব অবৈধ প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মোবাইল কোর্টের অভিযান চলমান রয়েছে এবং অবৈধ লাইসেন্সবিহীন প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে স্পেশাল মোবাইল কোর্ট পরিচালনা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
চিটাগাং ড্রিংকিং ওয়াটার মেনুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের এক কর্মকর্তা জানান, অবৈধ মিনারেল ওয়াটার উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের কারণে মান লাইসেন্সধারী প্রতিষ্ঠানের ব্যবসা বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। তারা মানবিহীন দূষিত পানি বোতলজাত করে বাজারে কম দামে সরবরাহ করছে। কিন্তু লাইসেন্সধারী মিনারেল ওয়াটার উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো মানসম্মত মিনারেল ওয়াটার বাজারে সরবরাহ করতে গিয়ে হোঁচট খাচ্ছে। ভোক্তারা মান যাচাই না করে কম দামে বোতলজাত পানি ক্রয় করছে। মানবিহীন এ বোতলজাত পানি ব্যাংক-বীমা, অভিজাত হোটেল, রেস্টুরেন্ট, অফিসপাড়া পর্যন্ত বিপণন করা হচ্ছে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, চট্টগ্রামে প্রায় দেড় থেকে দুই শতাধিক অবৈধ মিনারেল ওয়াটার উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এদের বিরুদ্ধে প্রশাসনের যথাযথ কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা দরকার। এছাড়া ভোক্তারা যদি সচেতন হয় এবং মানবিহীন বোতলজাত পানি পরিহার করে তাহলে আস্তে আস্তে এসব দুষ্টচক্রের অপতৎপরতা বন্ধ হয়ে যাবে। তিনি বলেন, মাইক্রোবায়োলজিক্যাল পরীক্ষার জন্য নিয়ম অনুযায়ী নমুনা সংগ্রহের পর যথাযথ সময়ের মধ্যে নমুনা পরীক্ষা করা আবশ্যক।
চট্টগ্রামসহ সারাদেশে আনুমানিক ৮শ’র ওপরে মিনারেল ওয়াটার উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এর মধ্যে অধিকাংশ প্রতিষ্ঠান লাইসেন্সবিহীন এবং মেয়াদোত্তীর্ণ। এ প্রতিষ্ঠানসমূহ থেকে সরকার বছরে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব বঞ্চিত হওয়ার পাশাপাশি বিএসটিআইর বাইরে থাকায় মানসম্মত মিনারেল ওয়াটার উৎপাদন ও বিপণন নিশ্চিত করা সম্ভব হচ্ছে না। তাছাড়া ব্যবসায়ীদের মধ্যে অসুস্থ প্রতিযোগিতা এবং বৈষম্য দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এসব মিনারেল ওয়াটার উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানকে লাইসেন্সের আওতায় আনা হলে সরকারের বড় অংকের রাজস্ব আদায়ের পাশাপাশি মানসম্মত মিনারেল ওয়াটার উৎপাদন ও বিপণন নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন