বুধবার ১৩ নভেম্বর ২০২৪, ২৯ কার্তিক ১৪৩১, ১১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

স্বাস্থ্য

শীতের ফলমূল

| প্রকাশের সময় : ১৪ জানুয়ারি, ২০২২, ১২:০৩ এএম

কমলা : শীতের অন্যতম প্রধান ফল হলো কমলা। কমলাকে শীতের ফলের রাজা বলা যায়। গুণে ও মানে এর তুলনা নেই। কমলা বিভিন্ন জাত, প্রকার ও আকৃতির হয়। আমাদের স্বাধীনতাপ্রাপ্তির আগ পর্যন্ত সিলেটের কমলা বাংলাদেশের কমলার চাহিদা পূরণ করত। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের সময় হানাদার বাহিনী এসব কমলার বাগানে আগুন লাগিয়ে দেয়। স্বাধীনতাপ্রাপ্তির পর আবার সিলেট, রাঙ্গামাটি, পার্বত্য চট্টগ্রাম, পঞ্চগড় প্রভৃতি জায়গায় কমলার চাষ হচ্ছে। কমলা অত্যন্ত ভিটামিন ‘সি’-সমৃদ্ধ ফল। যা আবাল-বৃদ্ধ-বণিতা সবার ভিটামিন ‘সি’-এর ঘাটতি পূরণে সমান এবং রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। শীতকালে রোজ সকালে নাশতা শেষে এক কাপ কমলার রস রোগ প্রতিরোধে ধন্বন্তরী। যারা হৃদরোগী তাদের জন্য কমলার রস খুবই উপকারী। যেসব লোক অপুষ্টিতে ভুগছে তারা এই শীতকালে প্রতিদিন একটা কমলা খেলে অপুষ্টি দূর হবে। সদ্য রোগমুক্ত ও প্রসবকারিণীমা দৈনিক একটা কমলা খেলে তাড়াতাড়ি সুস্থ সবল হয়ে উঠবে। কমলা কেনার সময় সবাই মিষ্টি কমলা খোঁজেন। কিন্তু কবিরাজ বলেন, মিষ্টি চেয়ে ঈষৎ টক কমলা বেশি উপকারী। মাথার যন্ত্রণা অসহ্য হয়ে উঠলে কমলার রসের সঙ্গে সামান্য ঘৃত মিশিয়ে চোখের দুই পাশের রগে লাগালে মাথার যন্ত্রণা দূর হবে। কমলা হিস্টিরিয়া রোগনাশক।

সফেদা : সফেদা দেখতে অসুন্দর গাবের মতো, কিন্তু এমন সুমিষ্ট ও স্বাদগন্ধযুক্ত ফল বোধ হয় আর বাংলাদেশে নেই। এই ফসেদা নানা গুণে সমৃদ্ধ। অপুষ্টি পরিশ্রমজনিত ক্লান্তি, হার্টের দুর্বলতা, বার্ধক্যে, প্রসবান্তিক দুর্বলতা, মায়ের বুকের দুধের স্বল্পতা প্রভৃতি সমস্যা পাকা সফেতা খেলে সমাধান হয়।

ডালিম -বেদানা : ডালিম ও বেদনা দুই রকম হলেও জাত এক। ডালিম বিশ্বের সর্বত্র পাওযয়া যায়। বেদানা সর্বত্র হয় না। ডালিমের ভেতরের দানা সাদা এবং বেদানা দানা লাল টকটকে। হিন্দুশাস্ত্রে তিন প্রকার ডালিমের উল্লেখ পাওয়া যায়। যথা-মধুর ডালিম, কষায় ডালিম, টক ডালিম। মধুর ডালিম যার দানা লাল অধিক উপকারী এবং রসাল অধিক গর্ভস্রাব আমাশয়, হৃদরোগ, লিভার বৃদ্ধি অনিদ্রা, অজীর্ণ, রক্তপিত্ত, অরুচি, ক্রিমি, শ্বেতপ্রদর, মেধাহ্রাস প্রভৃতি সমস্যায় কবিরাজের পরামর্শে ব্যবহার করলে উপকার জয়।

কুল : শীতের আরেক জনপ্রিয় ফল কুল। কুল নানা জাতের হয়। যেমন-নারকেল কুল, বিবি কুল, আপেল কুল, বাদাম কুল প্রভৃতি। সব কুলই জনপ্রিয় ও উপকারী। অর্শের যন্ত্রণা, বিষাক্ত পোকামাকড়ের কামড় বা দংশন, ফোড়া হৃদরোগ, কোষ্ঠবদ্ধতা, প্রদর, রক্ত আমাশয়, মাথাব্যথা-প্রভৃতি সমস্যা কুল, কুলের পাতা ছাল সমাধান করতে পারে।

কামরাঙা : কামরাঙা একটি সুন্দর ফল। এর পাঁচটি ধঘার থাকে। এ ফল দুই জাতের যথা মিষ্টি ও টক কামরাঙা। বড় ও ছোট দুই প্রকার পাওয়া যায়। কাঁচা ও পাকা দু’ভাবেই খাওয়া চলে। সালাদ করে ভাতের সঙ্গেও খাওয়া যায়। পুরাতন জ্বর, লিভার ব্যথা, অরুচি, প্রভৃতি সমস্যা কামরাঙা উপকারী। এতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ‘স’ রয়েছে।

মো. লোকমান হেকিম
চিকিৎক-কলামিস্ট,
মোবাইল-০১৭১৬২৭০১২০

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন