শিবগঞ্জ (চাঁপাইনবাবগঞ্জ) উপজেলা সংবাদদাতা : দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম এবং উত্তরবঙ্গের বৃহত্তম চাঁপাই নবাবগঞ্জের সোনামসজিদ স্থলবন্দরে টানা পাঁচ দিন বন্ধ থাকার পর বৃহস্পতিবার থেকে আবারো পাথর আমদানি কার্যক্রম শুরু হয়েছে। যথারীতি এ বন্দরে ভারত থেকে পাথরবাহী ট্রাক আসা শুরু করেছে। তবে পাঁচ দিন বন্ধ থাকার থাকায় প্রায় ৫ কোটি টাকা রাজস্ব ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। সোনামসজিদ কাস্টমস ও বন্দর সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, সারাদিন স্বাভাবিক ভাবে এ বন্দর দিয়ে পাথর আমদানি হয়েছে। বন্দরে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ২শ’ ৯৭টি পাথরবাহী ট্রাক প্রবেশ করেছে। বাংলাদেশে প্রবেশের অপেক্ষায় ওপারে ভারতের মহদীপুর স্থলবন্দরে কয়েক হাজার পাথরবাহী ট্রাক অপেক্ষা করছে। অপেক্ষামাণ ট্রাক বাংলাদেশে প্রবেশ করতেই এক সপ্তাহের বেশি সময় লেগে যাবে বলে মহদীপুর সিএন্ডএফ এজেন্ট এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ভূপতি মন্ডল জানান। এছাড়াও মহদীপুরে ইয়ার্ডগুলোয় বিপুল পরিমাণ পাথর রাখা আছে বাংলাদেশে পাঠানোর জন্য। পাথর আমদানি টানা পাঁচ দিন বন্ধ থাকায় এ বন্দরে রাজস্ব ক্ষতি হয়েছে প্রায় ৫ কোটি টাকা। সোনামসজিদ স্থলবন্দর কাস্টমসের সহকারি কমিশনার সাঈদ আহমেদ রুবেল জানান, এ বন্দর দিয়ে প্রতিদিন গড়ে ৩শ’ পাথরবাহী ট্রাক বাংলাদেশে প্রবেশ করে। পাথর থেকেই প্রতিদিন রাজস্ব আদায় হয় প্রায় এক কোটি টাকা। সে হিসাবে পাঁচ দিন বন্ধ থাকায় বন্দরের পাঁচ কোটি টাকা রাজস্ব ক্ষতি হয়েছে। তিনি আরও জানান, রাজস্ব ক্ষতি হলেও রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রায় কোন ঘাটতি হবে না। কারণ ওই পাঁচ বন্দর দিয়ে অন্য পণ্য আমদানি স্বাভাবিক ছিল। তাছাড়া বন্দরে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি রাজস্ব আদায় হয়। বন্দরের পাথর বিষয়ক কমিটির আহŸায়ক সাহাবুদ্দিন জানান, বৃহস্পতিবার তুলনামূলক ভাল মানের পাথর দিয়েছে ভারত। বেশির ভাগ ট্রাকে আগের মতো ধুলো-বালি, মাটি বা ব্যবহার অনুপযোগি পাথর ছিল না। তবে আগেই লোড করা হয়েছে কিছু ট্রাকে আগের মতোই ধুলো-বালি ও মাটি এসেছে। সোনামসজিদ স্থলবন্দর আমদানি-রপ্তানিকারক গ্রæপের সভাপতি কাবিরুল ইসলাম খোকন জানান, ভারতীয় রপ্তানিকারকরা বাংলাদেশি আমদানিকারকদের দাবি মেনে নেয়ার আশ্বাসের পর পর বৃহস্পতিবার থেকে পাথর আমদানি শুরু হয়। আগামি ২০ ফেব্রæয়ারি পর্যন্ত স্বাভাবিক ভাবেই পাথর আমদানি করা হবে। এ সময়ের মধ্যে বাংলাদেশি আমদানিকারকদের দাবি মেনে নিয়ে তা বাস্তবায়ন করা না হলে আবারো পাথর আমদানি বন্ধ করে দেয়া হবে। তিনি জানান, আমদানিকারকদের দাবি ছিল ধুলো-বালি ও মাটিসহ ব্যবহার অনুপযোগি পাথর পাঠানো যাবে না ও যখন তখন পাথরের মূল্য বৃদ্ধি করা যাবে না এবং পাথরের রপ্তানি মূল্য পুনঃনির্ধারণ করতে হবে। এদিকে পাথর আমদানি শুরু হওয়ায় আবারো কর্মচাঞ্চ্যলতা ফিরে এসেছে বন্দরে। দিনভর পাথর লোড-আনলোড ব্যস্ত সময় পার করছেন শ্রমিকরা। পাথর লোড-আনলোডে বন্দরের প্রায় ১০ হাজার শ্রমিক নিয়োজিত থাকে। এই পাঁচ দিন অনেক শ্রমিক প্রায় কাজ শূন্য বসে ছিলেন। কেউ কেউ অন্য পণ্য লোড-আনলোড করলেও আয় হয়েছে তুলনামূলক কম।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন