খুনি ও ধর্ষকের পরিচয় গোপন করতে পিতার দেয়া নাম হেলাল ইসলামের বদলে কিশোরগঞ্জের ভৈরব স্টেশনে পরিচিত হয়ে উঠেছিলেন সেলিম ফকির ওরফে বাউল সেলিম নামে। গলায় বাউল গানের সূর থাকায় আয় রোজগার মন্দ হতোনা। স্থানীয় এক নারীকে বিয়ে করে সংসারও পেতে ছিলেন হেলাল। কিন্তু একজন ইউটিউবার
তাকে মডেল বানিয়ে তার গানের ভিডিও ভার্চুয়াল জগতে ছেড়ে দিলে আস্তে আস্তে তার পরিচিতজনরা তাকে শনাক্ত করে। এর আগে এলাকাসীর ধারণা ছিলো হেলাল হয়তো আর বেঁচেই নেই। হেলালের হাতে নিহত তিন ব্যক্তির স্বজনরা তার সম্পর্কে পুলিশ ও র্যাবের কাছে তার সম্পর্কে রিপোর্ট করলে গত বুধবার সে ভৈরবেই ধরা পড়ে। গত শুক্রবার তাকে বগুড়া সদর থানায় হস্তান্তর করা হলে পুলিশ তাকে আদালতের মাধ্যমে বগুড়া জেল হাজতে পাঠিয়ে দেয়। এর আগে র্যাব তাকে গ্রেফতার করে রাজধানীতে মিডিয়া ব্রিফিং করে। এ সময় তাকে সিরিয়াল কিলার হিসেবে তুলে ধরলে মডিয়ায় তাকে নিয়ে মাতামাতি শুরু হয়। হেলালের ছেলে শিমুলসহ তার পরিবারের সদস্যরা জানতে পারে যে হেলাল জীবীত আছে ! গত শুক্রবার আদালতের হাজত খানায় তার ছেলে শিমুলসহ কয়েকজন নিকটাত্মীয় হেলালের সঙ্গে দেখা করেছেন।
বগুড়া সদর থানার রেকর্ড সুত্রে জানা যায়, দুরন্ত প্রকৃৃতির হেলাল ১৯৯৭ সালেই মারামারি করতে গেলে তার বাম হাত অবশ হয়ে যায়। তখন তার নাম হয় লুলা হেলাল। এরপর সে পরবর্তী কয়েক বছরে ৩ টি হত্যা ও একটি ধর্ষণ মামলার আসামী হয়। হয়ে ওঠে কন্ট্রাক্ট কিলার। ২০১৫ সালে গ্রেফতার হয়ে জেল হাজতে যায়। প্রভাবশালীদের হস্তক্ষেপে এক সময় জেল হাজত থেকে জামিনে মুক্ত হয়েই সে গোপনে বগুড়া ছাড়ে। পরে দেশের বিভিন্ন মাজার দরগাহ শরীফে অবস্থান করে পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়েছে। শিখেছে বাউল গান। গলায় সুর থাকায় বাউল শিল্পীর পরিচয়ে পরিচিত হয়ে উঠেছে সে। তবে শেষ পর্যন্ত সে আইনের হাতেই ধরা পড়লো। ফিরলো জন্মস্থান বগুড়ায় । তবে ঠাঁই হল বগুড়া কারাগারে।
উল্লেখ্য একটি হত্যা মামলায় সে যাবজ্জীবন সাজা প্রাপ্ত আসামি। ওই মামলায় তার গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি ছিলো বলে জানিয়েছেন বগুড়া সদর থানা কতৃপক্ষ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন