ফেনীতে ফখরুল ইসলাম (৩৫) নামে এক যুবকের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ শনিবার (১৫ জানুয়ারি) সকালে সদর উপজেলার ফরহাদনগর ইউনিয়নের মান্তী ভূঞা বাড়ীর সামনে একটি গাছের সাথে গলায় রশি লাগানো অবস্থায় লাশটি পাওয়া যায়। নিহত ফখরুল একই ইউনিয়নের পূর্ব সুলতান পুর গ্রামের জলিশ খোন্দকার বাড়ির মোঃ ইলিয়াছ খোন্দকারের ছোট ছেলে। পুলিশ সকালে লাশটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ফেনী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করে।
এদিকে স্থানীয় ও প্রতিবেশীরা জানান, গত শুক্রবার রাত ১০ টার দিকে তাদের বসতঘরে বাপ ছেলের তুমুল কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে বাপ ছেলের ঝগড়া যখন মারমুখী পর্যায়ে তখন ফখরুল রাগ করে ঘর থেকে বের হয়ে চলে যায়। সাথে সাথে বাবা ইলিয়াছ ঘর থেকে বের হয়ে চোর চোর বলে ছেলের পিছনে পিছনে দৌঁড়াতে থাকেন। পরে রাতে তাকে অনেক খোঁজাখুঁজি করে আর পাওয়া যায়নি। আজ ভোরে তার লাশ পাশে মান্তী ভূঞা বাড়ির সামনে একটি গাছের সাথে গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় দেখতে পায় ওই বাড়ির ফজরের নামাজ পড়তে যাওয়া লোকজন। এরপরে তারা তার পরিবারকে খবর দেন। তাদের ছেলের লাশ শনাক্ত হলে তখন এক হ্রদয় বিদারক অবস্থার সৃষ্টি হয়। পরে স্থানীয়রা সকালে ইউনিয়নের চেয়ারম্যান, মেম্বার ও পুলিশকে বিষয়টি জানায়। পুলিশ এসে তার লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।
স্থানীয়রা ও প্রতিবেশীরা আরও জানান, এ ঘটনায় পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সন্দেহভাজন দুইজনকে আটক করে। আটককৃতরা হলেন একই ইউনিয়নের পূর্ব সুলতানপুর গ্রামের আমজাদ ফকির বড় বাড়ির জাগির আহাম্মদের ছেলে সাইফুল ইসলাম ও ফকির আহাম্মদের ছেলে সাখাওয়াত হোসেন। এরা দুজন ঘটনার রাতে ফখরুলের বাবা ইলিয়াছের সাথে দেখা হলে বলেন ফখরুলকে তারা খুঁজে বাড়িত পৌঁছে দিবেন।
এঘটনার সঠিক রহস্য উদঘাটন করে সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে মুল হোতাদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসার আহবান জানান এলাকাবাসী ও প্রতিবেশীরা।
নিহতের পিতা মো: ইলিয়াছ খোন্দকার বলেন,তার ছেলে ফখরুল গতকাল বিকেলে পরিবারের সবার অজান্তে ঘর থেকে এক লক্ষ টাকা নিয়ে গেছে। তিনি বলেন, তার নিরীহ ছেলে এ ধরনের কাজ করতে পারেনা। আমার ছেলের কাছে এতোগুলো টাকা দেখে লোভে এবং সে হয়তো ছিনতাইকারীদের চিনে ফেলায় তাকে হত্যা করেছে। তিনি আরও বলেন আমার ছেলে আত্মহত্যা করতে পারেনা। কারণ আমার ছেলে সহজ সরল প্রকৃতির,তার সাথে কারো কোন প্রকার বিরোধ ছিলনা। সে আমার সাথে সাংসারিক কাজকর্ম করতো এবং আমাদের গরু আছে সেগুলো দেখাশোনা করতো। তিনি ছেলে হত্যার সুষ্ঠু বিচার চান।
এ বিষয়ে ফেনী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নিজাম উদ্দিন জানান, পুলিশ প্রাথমিক ভাবে ধারণা করছে ফখরুল আত্মহত্যা করছে। এ ব্যাপারে একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে। দুইজন আটকের ব্যাপারে তিনি জানান, ঘটনার রাতে ফখরুলের বাবা যখন তাকে পিছন থেকে দৌড়াচ্ছে তখন পথে ওই দুটি ছেলের সাথে তার (ফখরুলের বাবার) দেখা হয়েছে। সেজন্য ওদেরকে এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করা হয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে সন্ধ্যায় তার লাশ দাফন করা হয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন