শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

চলাচল অনুপোযোগী আঞ্চলিক সড়ক

বামনায় অবৈধ ভারি যানবাহনের দাপট

বরগুনা জেলা সংবাদদাতা : | প্রকাশের সময় : ১৭ জানুয়ারি, ২০২২, ১২:০১ এএম

সংস্কারের দুই বছরের মাথায় ফের চলাচল অনুপযোগী হয়ে পড়েছে বরগুনার বামনা উপজেলার ১৫টি সড়ক। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর এলজিইডির আওতাভুক্ত সড়কগুলোতে অনুমতি ছাড়াই অবৈধ যানবাহনের অবাধ চলাচলের ফলে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ।
নিষিদ্ধ এসব যানবাহন চলাচল বন্ধে ইতোমধ্যেই জেলা প্রশাসক ও স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের বরগুনা জেলা কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলীর কাছে এলাকাবাসী লিখিত আবেদন দিয়েছেন। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর বামনা উপজেলা প্রকৌশলী কার্যালয়ের তথ্যমতে, এলজিইডির আওতায় ২০১৭ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত ১৫টি সড়ক সংস্কার করা হয়। স্থানীয় বাসিন্দা ও যানবাহন চালকরা জানান, সড়কগুলো সংস্কারের পর থেকেই ছয়চাকার মাহিন্দ্রা ট্রাক্টর ইটভাটার জন্য মাটি, পাথর বালিসহ ইটভাটার মালামাল বহন করে সড়ক দিয়ে চলাচল করে। যে কারণে সড়কের বিভিন্ন স্থান ভেঙে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে, ধুলা জমে থাকায় পথ চলতে গিয়ে ভোগান্তিতে পড়তে হয় পথচারীদের।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, প্রভাবশালী ব্যক্তিরা এসব মাহিন্দ্রা ও টাফি ট্রাক্টরের মালিক। এদের অনেকেই ইটভাটার মালিক। স্থানীয়দের কাছ থেকে বিষখালী নদী তীরবর্তী মাটি কিনে সেসব মাটি ভেকু দিয়ে কেটে বোঝাই করে প্রতিদিন ট্রাক্টরে করে বহন করছে ইটভাটা ও বসতবাড়ির মালিকদের কাছে। ভারি যানবাহনে ভেকু নদী তীরে নিয়ে যেতে হয়। ধারণক্ষমতার বেশি মালামালবাহী ট্রাক্টরের চাকায় সড়ক দেবে ও ভেঙে অধিকাংশ সড়কেরই এখন বেহাল অবস্থা। ভারি মালামাল বহন করায় সড়কের বিভিন্ন স্থানে ভেঙে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে, খানা-খন্দে পরিণত হয়েছে সড়কের অধিকাংশ এলাকা। এছাড়া ধুলা জমে থাকায় পথ চলতে গিয়ে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে পথচারীদের। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বামনা হাসপাতাল থেকে সোনাখালী সড়ক, বামনা-বুকাবুনিয়া সড়ক, ডৌয়াতলা-বামনা সড়ক, দক্ষিণ রামনা থেকে খোলপটুয়া সড়কসহ উপজেলার এলজিইডির আওতাধীন ১৫টি সড়কই ভারি যানবাহন চলাচল করায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। রামনা এলাকার কৃষক আলতাফ হোসেন বলেন, কয়েক বছর আগে শহীদ ইঞ্জিনিয়ার মানুষের চলাচলের জন্য রাস্তাটি নির্মাণ করে দেন। এরপর থেকে নিয়মিতই মাটিভর্তি গাড়ি চলাচল করায় বর্তমানে রাস্তাটি নষ্ট হয়ে গেছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা জানান, আওয়ামী লীগের জনৈক নেতা নিজস্ব জমির মাটি ভেকু দিয়ে কেটে বামনা উপজেলার বিভিন্ন ইটভাটা এবং পারিবারিক নিচু জমি ভরাটের জন্য মাটি বিক্রি করেন। এ নিয়ে এলাকাবাসী কিছু বলতে গেলে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন।
আবদুল খালেক নামে এক রিকশাচালক বলেন, বামনা উপেজলার এমন কোনো সড়ক নেই যে সড়কে ছয় চাকার মাহিন্দ্রা, টাফিসহ ভারি যানবাহন চলাচল করেনা। এরা বামনার অলিগলি দাপিয়ে বেড়ায়। যে কারণে এখন সবগুলো সড়কই চলাচল অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। আমরা এখন এসব রাস্তায় রিকশা পর্যন্ত চালাতে পারছি না।
এলজিইডি উপজেলা প্রকৌশলী সাইফুল ইসলাম বলেন, উপজেলা এলজিইডির আওতায় বামনায় ১৫টি সড়ক রয়েছে। প্রভাবশালীদের একটি সিন্ডিকেট আছে যারা ছয় চাকার মাটি বহনকারী গাড়ির মালিক। এরা মাটি লোড দিয়ে গাড়ি চালাচ্ছে। তারাই রাস্তা নষ্ট করে ফেলছে। বিষয়টি নিয়ে উপজেলা আইনশৃঙ্খলা সভায় আলোচনা করব এবং প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেয়ার জন্য পদক্ষেপ নেব।
বামনা উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিবেক সরকার বলেন, ধারণক্ষমতার চেয়ে বেশি লোড নেয়া সড়কে চলাচল নিষিদ্ধ কিছু যানবাহন উপজেলার সড়কগুলো ক্ষতিগ্রস্ত করছে। এতে এজন্য একদিকে সরকারের রাজস্ব খাতের অর্থ নষ্ট হচ্ছে তেমনি এলাকাবাসী এই সুফল থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এ নিয়ে খুব শিগগিরই আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বরগুনার জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমান বলেন, গত ৪ জানুয়ারি বামনা থেকে এলাকাবাসীর একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে আমি বামনা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছি।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন