যশোরের ঝিকরগাছা পৌরসভা সীমানা সংক্রান্ত মামলায় দীর্ঘ ২১ বছর আঁটকে থাকার পর গত রবিবার (১৬ জানুয়ারি) নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। নির্বাচনের ফলাফলে নয়টি সাধারণ ওয়ার্ড ও তিনটি সংরক্ষিত ওয়ার্ডেই জয়ী হতে চলেছে নতুন মূখ। বর্তমান কাউন্সিলরদের মধ্যে কাওকেই বেসরকারীভাবে বিজয়ী ঘোষনা করা হয়নি।
প্রাপ্ত ফলাফলের ভিত্তিতে পৌরসভার ১নম্বর ওয়ার্ডে নজরুল ইসলাম, ২নম্বর ওয়ার্ডে আরিফুর রহমান, ৩নম্বর ওয়ার্ডে সাজ্জাতুল জামান রনি, ৪নম্বর ওয়ার্ডে আলীম গাজী, ৬নম্বর ওয়ার্ডে নুরুজ্জামান বাবু, ৭নম্বর ওয়ার্ডে আমিরুল ইসলাম রাজা, ৮নম্বর ওয়ার্ডে মোঃ তারিকুজ্জামান, ৯নম্বর ওয়ার্ডে ইউনুস আলী বেসরকারীভাবে বিজয়ী হয়েছেন। ১,২ ও ৩ নম্বর সংরক্ষিত ওয়ার্ডে শ্যামলী খাতুন, ৭,৮ ও ৯ নম্বর সংরক্ষিত ওয়ার্ডে নাজমুন নাহার নাজু বিজয়ী হয়েছেন।
তবে উচ্চ আদালতের স্থগিতাদেশের কারণে মেয়র পদে মোস্তফা আনোয়ার পাশা জামাল, কাউন্সিলর পদে ৫নম্বর সাধারণ ওয়ার্ডে একরামুল হক খোকন এবং ৪,৫ ও ৬নম্বর সংরক্ষিত ওয়ার্ডে জেসমিন সুলতানা সবথেকে বেশি ভোট পেলেও তাদের বিজয়ী ঘোষনা করা হয়নি। তারা এখন নিজেদের বিজয়ী ঘোষনা শুনতে নির্বাচনের কমিশনের ঘোষনার অপেক্ষায় আছেন।
একরামুল হক খোকন বলেন, শান্তিপূর্ণ ভাবে সুষ্ঠু ভোট হয়েছে। আমি বিপুল ভোটে বিজয়ী হয়েছি। আমার বিজয় ঘোষনায় আইনত কোন বাঁধা দেখছিনা।
জানা যায়, ৫নম্বর ওয়ার্ডের খাদেমুল ইনসান দাতব্য চিকিৎসালয় কেন্দ্রের ফলাফল স্থগিত করে উচ্চ আদালত। নির্বাচনের তিনদিন আগে কেন্দ্র পরিবর্তন নিয়ে উচ্চ আদালতে একটি রিটের কারণে শেষ সময়ে এসে এই জটিলতা সৃষ্টি হয়।
নির্বাচনী ফলাফল বিশ্লেষন করলে দেখা যায় মেয়র পদে বর্তমান মেয়র বিজয়ের পথে এগিয়ে থাকলেও বর্তমান কাউন্সিলর সবাই পরাজিত হয়েছেন। সব ওয়ার্ডেই এসেছে নতুন মুখ।
ঝিকরগাছার সেবা সংগঠনের সভাপতি ও পৌরসভার ভোটার মাষ্টার আশরাফুজ্জামান বাবু বলেন, ২১ বছর ক্ষমতায় থেকে বর্তমান কাউন্সিলররা সাধারণ জনগণকে কাঙখিত সেবা দিতে ব্যর্থ হয়েছেন। এজন্যই মানুষ পরিবর্তনের আশায় নতুন কাউন্সিলর নির্বাচিত করেছে। প্রসঙ্গত, ঝিকরগাছা পৌরসভায় প্রথম নির্বাচন হয়েছিল ২০০১ সালের ২এপ্রিল। ২১ বছর পর গত ১৬ জানুয়ারি কোনরকম অপ্রীতিকর পরিস্থিতি ছাড়ায় শান্তিপূর্ণ ও সুষ্ঠুভাবে দ্বিতীয়বার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। পৌরসভায় মোট ভোটার ২৫ হাজার ৯'শ ৩১। মোট ভোটকেন্দ্র ছিল ১৪টি এবং বুথ ছিল ৮৬টি।
মেয়র পদে, আওয়ামী লীগ মনোনিত নৌকা মার্কার প্রার্থী মোস্তফা আনোয়ার পাশা জামাল পেয়েছেন ৭ হাজার ৩শ ৭৫ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি কম্পিউটার প্রতিকে স্বতন্ত্র প্রার্থী ইমরান হাসান সামাদ নিপুণ পেয়েছেন ৬ হাজার ১শ ২৬ ভোট। জগ প্রতিকে ছেলিমুক হক সালাম পেয়েছেন ১ হাজার ৯’শ ভোট, নারিকেল গাছ প্রতিকে একেএম আমানুল কাদির টুল্লু পেয়েছেন ১ হাজার ৩৫ ভোট, রেল ইঞ্জিন প্রতিকে আব্দুল্লাহ আল সাঈদ পেয়েছেন ১ হাজার ১’শ ৩০ ভোট, মোবাইল প্রতিকে ইমতিয়াজ আহমেদ শিপন পেয়েছেন ৬’শ ২৪ ভোট, চামচ প্রতিকে জাহাঙ্গীর আলম মুকুল পেয়েছেন ৯২ ভোট তবে তিনি নির্বাচনের আগে ভোট থেকে সরে দাঁড়িয়েছিলেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন