নওগাঁর মান্দা উপজেলার সদর প্রসাদপুর খেয়াঘাটে একটি সেতুর অভাবে প্রায় দুই লাখ মানুষ চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। স্বাধীনতার ৫০ বছর পরেও এখানে একটি কংক্রিটের সেতুর নির্মাণ হয়নি। বর্ষায় নৌকা আর শুষ্ক মওসুমে নড়বড়ে বাঁশের সাঁকোই তাদের নদী পারাপারের একমাত্র ভরসা। উপজেলা প্রকৌশল অধিদফতর বলছে, ওই খেয়াঘাটে একটি সেতু নির্মাণের জন্য কয়েক দফায় মাটি পরীক্ষা, স্থান নির্ধারণ ও সেতুর ধরণ নিয়ে একাধিক জরিপ কাজ করেছেন এলজিইডি প্রধান কার্যালয়ের প্রতিনিধি দল। খুব শিগগিরই সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু করা যাবে। স্থানীয়দের দাবি, এখানে সেতু নির্মিাণ হলে তাদের ঘুরতে হবে না ৫ কিলোমিটার পথ। মাত্র ২০০ মিটার পথ পাড়ি দিয়ে উপজেলা সদরে পৌঁছে যাবে।
রোগীদের সহজেই নেয়া যাবে মান্দা হাসপাতালসহ রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালেও। কৃষকদের উৎপাদিত ধান,পাট, আখ, তিল, সরিষাসহ নানা পণ্য পরিবহনে ভোগান্তি ও ব্যয় কমবে। একই সাথে উপজেলার ৭ নং প্রসাদপুর, ৫ নং গনেশপুর, ৬ নং মৈনম, ১২ নং কাশোপাড়া ও ১৩ কশব ইউনিয়নের লোকজন সহজেই উপজেলা সদরে যাতায়াত করতে পারবেন।
তারা জানান, আত্রাই নদীর প্রসাদপুর খেয়াঘাটে একটি সেতুর অভাবে পারাপারের জন্য দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হয় স্কুল, কলেজ, মাদরাসার শিক্ষার্থী, শিক্ষক, অফিসগামীসহ সর্ব সাধারণ লোকজনকে। অনেক শিক্ষার্থীদের ক্লাস মিসের ঘটনাও ঘটে। এছাড়া জরুরি রোগিদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়।
প্রসাদপুর গ্রামের বাসিন্দা ঔষধ ব্যবসায়ী জয়নাল আবেদীন মন্ডল ও বাসুদেব কুমার দাসসহ অনেকেই বলেন, শুষ্ক মৌসুমে বাঁশের নড়বড়ে সাঁকো দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে লোকজন নদী পারাপার হন। বর্ষা মৌসুমে নদীর পানি বাড়লে ঝুঁঁকি তখন আরও বেড়ে যায়।
এ সময় নৌকার জন্য দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হয়। পারাপারে সমস্যার কারণে সময়মত গন্তব্যে পৌঁছানো যায় না। রাত ১০ টার পর পারাপার বন্ধ হয়ে গেলে পাঁচ কিলোমিটার ঘুরে পরে গন্তব্যে যেতে হয়।
প্রসাদপুর ইউনিয়ন পরিষদের ২ নং ওয়ার্ড সদস্য শরিফ উদ্দিন বাচ্চু বলেন, ভরা বর্ষায় এক সাথে অতিরিক্ত লোক নৌকার চড়লে ঝুঁঁকিপূর্ণ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।
প্রসাদপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বেলাল হোসেন খাঁন বলেন, সংকটাপন্ন রোগীদের হাসপাতালে নিতে এ অঞ্চলের মানুষকে চরম ভোগান্তি পোহাতে হয়। বিশেষ করে সন্তানসম্ভবা মায়েদের জন্য খুবই মারাত্মক সমস্যা দেখা দেয়। দীর্ঘ সময়ের কারণে এসব রোগীদের অনেককেই বাঁচানো সম্ভব হয় না। পথেই অনেকে মৃত্যুবরণ করেন।
গনেশপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হানিফ উদ্দিন মন্ডল বলেন, সেতুটি নির্মাণ করা হলে সাতবাড়িয়া মোড় হয়ে গনেশপুর, মৈনম, কাঁশোপাড়া ও কশব ইউনিয়নের লোকজন মহাসড়ক ব্যবহার না করে তাড়াতাড়ি উপজেলা সদরে পৌঁছাতে পারবেন। দক্ষিণ এলাকার লোকজনও একইভাবে সতিহাটসহ নওগাঁ শহরে যাওয়ার সুবিধা পাবেন। গোটগাড়ী শহীদ মামুন সরকারি হাইস্কুল ও কলেজের অধ্যক্ষ জহুরুল ইসলাম বলেন, গতবছর সেতু নির্মাণ কাজের সমীক্ষা প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক সেতুটির সম্ভাব্যতা সরেজমিনে পরিদর্শন করেছেন। সেসসয় তিনি বলেছেন, দ্রুত এ সেতু নির্মাণ কাজ শুরু করা হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন