দক্ষিণ এশিয়ার সর্ববৃহৎ হাওর হাকালুকি। মিঠাপানির বৃহত্তম এ জলাভূমি ১৮ হাজার ১১৫ হেক্টর আয়তনের। এই হাকালুকি হাওর বাংলাদেশের সংরক্ষিত একটি জলাভূমি। এমনকি দেশের অন্যতম মাদার ফিশারিজ হচ্ছে এ হাওরটি। এছাড়া রয়েছে কীট-পতঙ্গ, জলজ ও স্থলজ ক্ষুদ্র অনুজীবের প্রাচুর্য। প্রকৃতির বিশালতায় ভরপুর এ হাওরের অবস্থান সিলেট ও মৌলভীবাজারের ৫টি উপজেলায় বিস্তৃত। হাকালুকি হাওর বাংলাদেশের সংরক্ষিত একটি জলাভূমি। যা দেশের অন্যতম মাদার ফিশারিজ। এই হাওর রূপ বদলায় বর্ষা ও শীতে। প্রকৃতিও এখানে ধাঁধাঁ ছড়ায় আপন গতিতে। হাকালুকি হাওরের সৌন্দর্যে বিভোর হয়ে এখানে প্রতিবছর ছুটে আসেন হাজার হাজার দশনার্থী ও পর্যটক। কিন্তু পর্যটনবান্ধব অবকাঠামোগত ও সুযোগ-সুবিধার অভাবে হাকালুকির এখনো প্রদীপের নিচে অন্ধকারের মতো। অথচ সম্ভাবনার বিপুলতা রয়েছে এ হাওরে। বিনোদনে যেমন থাকবে বাড়তি উপাত্ত , তেমনি খুলবে রাজস্বের বিশাল দ্বার। এছাড়া জলজ, মৎসখাতের সম্ভাবনা তো বলা বাহুল্য। সেই ঘুমন্ত সম্ভাবনায় দ্যুতি ছড়াতে হাতে নেওয়া হয়েছে শত কোটি টাকার প্রকল্প। এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে হাকালুকি হাওর স্বীকৃতি পাবে পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে। এতে স্থানীয় মানুষের জীবনমান ও অর্থনীতিতে ঘটবে বৈপ্লবিক পরিবর্তন। গৃহীত প্রকল্পের ব্যাপারে সিলেট-৩ আসনের সংসদ সদস্য হাবিবুর রহমান হাবিব জানান, হাকালুকি হাওরের ফেঞ্চুগঞ্জ অংশকে পর্যটন কেন্দ্রে রূপান্তরের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ লক্ষে গ্রহণ করা হয়েছে ১০০ কোটি টাকার একটি প্রকল্প। প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে হাওরের সৌন্দর্য বাড়াতে দৃষ্টিনন্দন ওয়াকওয়ে, হাওড় এলাকায় বোরো ফসল রক্ষার্থে বেড়িবাঁধ নির্মাণ, পর্যটক আকর্ষণে ঢাকার হাতিরঝিলের মতো আর্চ ব্রিজ নির্মাণ। এছাড়া পর্যটকদের বসার জন্য বেঞ্চ, শিশুদের জন্য দোলনাসহ বিভিন্ন রকমের রাইড বসানো হবে। হাওরপাড়ে গত বছরের ডিসেম্বরে পানিসম্পদ উপমন্ত্রী এনামুল হক শামীম সিলেট সফরে আসলে হাকালুকি হাওরকে পর্যটনকেন্দ্রে রূপান্তরে সহযোগিতা চান। তখন পানিসম্পদ উপমন্ত্রী সহযোগিতার আশ্বাস দেন। এমপি হাবিব জানান, ইতোমধ্যে পর্যটনকেন্দ্রে প্রাথমিক কাজ শুরু হয়েছে। প্রকৌশলীরা এলাকা ঘুরে এসে প্রকল্প বাস্তবায়নের শুরু করেছেন পরিকল্পনা। বর্ষায় হাকালুকি রূপ নেয় সাগরেও সীমতায়। হাওরের অথৈ জলরাশির বড় বড় ঢেউ পড়ে পাড়ে আছড়ে। উত্তাল সেই হাওরে নৌকা ও টুরিস্ট লঞ্চ নিয়ে ঘুরে বেড়ান দশনার্থী পর্যটকরা। ওয়াচ টাওয়ারে চড়ে হাকালুকির রূপ-সৌন্দর্য্যে চোখ বুলানোর চেষ্টা করেন পর্যটকরা।
শীতে অন্য রূপের দেখা মিলে হাকালুকিতে। বর্ষায় যে হাওরে থাকে অথৈ জল, শীতে সেটা হয়ে ওঠে ফসলী মাঠ। হলুদ সর্ষে ক্ষেত বা সোনালী বরো ধানে অন্য হাকালুকির দেখা মিলে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন