খাগড়াছড়ির বিভিন্ন উপজেলায় সদর এলাকার বাহিরে দুর্গম অঞ্চলে নেই কোন মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এতে প্রাথমিক স্তর পেরোতেই ঝড়ে পড়েছে বেশির ভাগ শিক্ষার্থী। জেলার মাটিরাঙ্গা উপজেলা সদর থেকে প্রায় ১৮ কি.মি দূরে তৈকাথাং মৌজা। এতে প্রায় ১০টি গ্রামের ৪০০ পরিবারের বসবাস। দুর্গম এলাকায় অবকাঠামো সুবিধা না থাকায় নেই কোনো সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। একটি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থাকলেও সেটা তৃতীয় শ্রেণির পর্যন্ত। তার ও বেহাল অবস্থা। শিশুদের জন্য নেই কোনো বসার স্থান, নেই অবকাঠামোগত সুযোগ-সুবিধা। জেলায় সব দুর্গম এলাকাতেই প্রায় একই চিত্র। মাধ্যমিক বিদ্যালয় না থাকাই কোনো রকমেই প্রাথমিক গন্ডি পেরোলে বন্ধ হয়ে যায় পড়াশোনা। এতে খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার দুর্গম এলাকায় সঠিক জরিপ চালিয়ে মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবি জানিয়েছেন সুবিধাবঞ্চিতরা।
স্থানীয় তৈকাথাং আশা হফনুং বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি রাজেন্দ্র ত্রিপুরা জানান, প্রায় ৭-৮ কি.মি দূরে মাটিরাঙ্গা বাজারের হাইস্কুলে গিয়ে লেখাপড়া করতে হয়। শিক্ষার মানোন্নয়নের জন্য কাজ, শিক্ষা উন্নয়ন সংস্থার সমন্বয়ক নবলেশ্বর ত্রিপুরা লায়ন বলেন, দুর্গম এলাকায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান না থাকার কারণে অধিকাংশই শিশু শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এ কারণে এলাকায় অন্ততঃ প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিত করা দরকার বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।
খাগড়াছড়ি জেলার মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা উত্তম খীসা বলেন, যে সমস্ত এলাকাগুলো দুর্গম সেখানে যদি, যারা শিক্ষানুরাগী ও সচ্ছল ব্যক্তিরা যদি স্কুল প্রতিষ্ঠায় এগিয়ে আসে, তাহলে পরবর্তীতে সরকারের তরফ থেকে অবকাঠামো উন্নয়ন, শিক্ষক প্রদান, শিক্ষকদের বেতন-ভাতার জন্য এমপিওভুক্তিগুলো সরকার ব্যবস্থা করবে। এর আগে প্রথমে স্থানীয় পর্যায়ে ভূমিদাতা ও শিক্ষানুরাগীদের এগিয়ে আসতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক প্রতাপ চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, দশ কি.মি. ভিতরেও হাই স্কুল নেই এমন জায়গা আছে। সেই প্রেক্ষিতে মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদফতরে যারা আছে, তাদের তালিকা করতে হবে। সেই তালিকা অনুযায়ী সুনির্দিষ্ট একটি দূরত্বের ব্যবধানে আমাদের বাচ্চারা যেন প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা দুটোটেই সুযোগ পায়, সেজন্য অবকাঠামো উন্নয়নে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড ও পার্বত্য জেলা পরিষদকে করতে হবে। পার্বত্য জেলায় দুর্গম এলাকায় মাধ্যমিক শিক্ষা নিশ্চিত করতে বিশেষ প্রকল্প ও অবকাঠামো উন্নয়নের জন্য পার্বত্য চট্টগ্রামের উন্নয়ন সংস্থাগুলোকেও দায়িত্ব নেওয়ার আহবান জানান তিনি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন