বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

মাঘের বৃষ্টিতে শীত জেঁকে বসেছে

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৪ জানুয়ারি, ২০২২, ১২:০০ এএম

রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে গতকাল রোববার দিনভর বিরাজ করেছে মেঘলা আবহাওয়া। রাজশাহী, খুলনা, বগুড়াসহ বিভিন্ন স্থানে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হয়। এতে জনজীবন বিপর্যস্ত পড়ে। গুঁড়ি বৃষ্টি এবং তীব্র শীতে বিপাকে পড়ে নিম্নআয়ের মানুষ। আমাদের সংবাদদাতাদের পাঠানো তথ্যে প্রতিবেদন-

রাজশাহী ব্যুরো জানায়, রাজশাহী মহানগরীতে গতকাল রোববার সারাদিনই মেঘলা আবহাওয়া বিরাজ করেছে। দিনভরই দেখা মেলেনি সূর্যের। সকাল থেকে শুরু হয় গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি। এর সাথে শুরু হয় হাড় কাঁপানো শীত। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েন অফিসগামী মানুষ। সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়ে নিম্নআয়ের মানুষ। রাস্তার মোড়ে মোড়ে দেখা যায় মানুষ দলবদ্ধ হয়ে আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারণ করতে।

বগুড়া ব্যুরো জানায়, মাঘের প্রথম প্রান্তিকের মাঝামাঝি সময়ে এসে গতকাল রোববার সকালের দিকে হালকা রোদ হেসে উঠলেও দুপুরের পর বদলে যায় প্রকৃতি। ধোঁয়াশা মেঘে ছেয়ে যায় আকাশ। বিকেল নাগাদ শুরু হয় গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি। বৃষ্টির কারণে জবুথুবু হয়ে ওঠে জনজীবন। রাস্তাঘাট ফাঁকা হয়ে যায়। হঠাৎই বৃষ্টির কারণে অনেক পথিককেই পলিথিন মুড়ি দিয়ে রাস্তায় চলাচল করতে দেখা যায়। বগুড়া আবহাওয়া অফিস জানায়, মেঘবৃষ্টি কেটে গেলেও শীত বহালই থাকবে। তবে মধ্য মাঘের পর ধীরে ধীরে বিদায় নেবে শীত।

খুলনা ব্যুরো জানায়, মাঘের কনকনে শীত, সাথে তিন-চার দিন ধরে থেমে থেমে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি। অন্যদিকে মহামারীর করোনার থাবা। এর মাঝেও থেমে নেই খুলনার নিম্ন আয়ের মানুষের প্রতিদিনকার জীবনযুদ্ধ। বৈরী আবহাওয়াকে উপেক্ষা করে কাকডাকা ভোরে তারা বের হচ্ছেন জীবিকার সন্ধানে। শীত-বৃষ্টি উপেক্ষা করা যায়, করোনাকেও অবহেলা করা যায় কিন্তু ক্ষিদের জ্বালা উপেক্ষা করার সুযোগ নেই তাদের। তাই নিজের ও পরিবারের সদস্যদের অন্ন সংস্থানের জন্য ঝুঁকি মাথায় নিয়ে ঘর হতে বের হতেই হচ্ছে।

গতকাল রোববার দুপুরে খুলনার আলমনগর মোড় এলাকায় দেখা গেছে, যান্ত্রিক মেশিনে ইট ভাঙ্গছেন ৫-৬ জন শ্রমিক। সারাদিন ইট ভেঙে একেক জন পাবেন ৩শ’ থেকে সাড়ে ৩শ’ টাকা। চুক্তিতে কাজ করছেন তারা। তাদের মুখে মাস্ক নেই। টিকাও নেননি তারা এ পর্যন্ত। প্রত্যেকেই পরিবার নিয়ে নগরীর বিভিন্ন বস্তিতে থাকেন। তাদের সরদার ইসমাইল হোসেন জানালেন, একদিন কাজ না করলে, না খেয়ে ঘরে বসে থাকতে হয়। পরিবারের সদস্যদের মুখে খাবার ওঠে না। আবহাওয়া অনুকূলে না থাকলেও বাধ্য হয়ে কাজে নামতে হয়।

আদমদীঘি (বগুড়া) উপজেলা সংবাদদাতা জানান, গত কয়েক দিনের দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া ঘন কুয়াশা ও হাড় কাঁপানো তীব্র শীতে আদমদীঘি উপজেলা সদর ও সান্তাহার পৌর এলাকা এবং এর আশপাশ এলাকার মানুষ কাবু হয়ে পড়েছে। ঘন কুয়াশা আর হাড় কাঁপানো তীব্র শীতে বেড়েছে জনদুর্ভোগ। শীতের তীব্রতা বাড়ার কারণে এসব এলাকার শিশু, নারী, পুরুষসহ বিভিন্ন বয়সের ব্যক্তিরা শীতজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। এসব আক্রান্ত রোগীরা স্থানীয় বিভিন্ন ক্লিনিক ও চিকিৎসালয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন বলে জানা গেছে। শীত থেকে বাঁচতে খড় জ্বালিয়ে আগুনের তাপ নিচ্ছেন শিশু, কিশোরসহ সব বয়সের মানুষ। গত তিন চার দিন এসব এলাকায় মাঝে মধ্যে সূর্যের আলো দেখা গেলেও গতকাল রোববার সারাদিন দেখা মিলেনি। তীব্র শীতের সাথে ঘন কুয়াশার কারণে শ্রমজীবী মানুষ পড়েছে বেশি দুর্ভোগে। শীত বস্ত্রের অভাবে রেল স্টেশনে আশ্রয় নেওয়া হতদরিদ্র পরিবার ও ছিন্নমূল মানুষ কাহিল হয়ে পড়েছে।

লালপুর (নাটোর) উপজেলা সংবাদদাতা জানান, মাঘের শুরু থেকেই উত্তরাঞ্চলের পদ্মানদী বিধৌত নাটোরের লালপুর উপজেলায় বেড়েছে শীতের তীব্রতা। গতকাল রোববার সকাল থেকে ঘনকুয়াশা, হাড় কাঁপানো কনকনে শীত তার উপরে দিনব্যাপী গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি শুরু হয়েছে। এতে শীতের তীব্রতা আরও বেড়েছে। অসহায় খেটে খাওয়া মানুষ পড়েছেন চরম বিপাকে। গত দু’দিন ধরে দেখা মেলেনি সূর্যের। হিমেল হাওয়া, ঘনকুয়াশা, বৃৃষ্টি আর মেঘে সূর্য ঢাকা থাকায় শীতে যোগ হয়েছে নতুন মাত্রা। শীত জেঁকে বসায় সবচেয়ে বেশি বিপদে পড়েছেন ছিন্নমূল ও নিম্ন আয়ের মানুষ।

ঘনকুয়াশা আর গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি হওয়ায় উপজেলার প্রধান সড়কে যানবাহন ছিলো কম। কিছু যানবাহন চলাচল করলেও হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করতে দেখা গেছে। দিনে তাপমাত্রার পারদও ওঠানামা করছে। ফলে প্রতিদিনই শীতজনিত নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়ছে এই অঞ্চলের বয়স্ক ও শিশুরা। একটু উষ্ণতার পরশ নেওয়ার জন্য অনেককে খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করতে দেখা গেছে। শীত থেকে বাঁচতে নিম্ন আয়ের মানুষ ভিড় জমাচ্ছেন পুরাতন গরম কাপড়ের দোকানে। উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ইসাহাক আলী জানায়, উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নে অসহায় শীতার্ত মানুষের মাঝে উপজেলা পরিষদের পক্ষ থেকে শীতবস্ত্র বিতরণ কার্যক্রম অব্যহত রয়েছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন