রানির পর এবার সাভারে বিশ্বের সবচেয়ে ছোট গরু হিসেবে গিনেস বুকে জায়গা করে নিয়েছে চারু নামে খর্বাকৃতির একটি গরু। চারুর মতো শিকড় অ্যাগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড নামে খামারে বেড়ে উঠেছিল রানিও। তবে রানি মারা গেলেও চারু এখনও জীবিত। বুধবার সকালে সাভার আশুলিয়ার চারিগ্রাম এলাকায় শিকড় অ্যাগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাজী সুফিয়ান এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
এর আগে ২০২১ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর শিকড় অ্যাগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ গিনেস বুকে ইমেইলের মাধ্যমে আবেদন করে। পরে গতকাল মঙ্গলবার গিনেস কর্তৃপক্ষ চারুকে বিশ্বের সবচেয়ে ছোট জীবিত গরুর স্বীকৃতি দিয়ে ইমেইল পাঠায়। খামার কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, চারু নামে গরুটির জন্ম ২০১৯ সালের জুলাই মাসে। সে হিসাবে তার বয়স আড়াই বছর। চারুর এখন চার দাঁত। উচ্চতা ২৩.৫০ ইঞ্চি, লম্বা ২৭ ইঞ্চি ও ওজন ৩৯ কেজি। রানিকে দেখভালের দায়িত্বে থাকা খামারের কর্মচারী মো. মামুন এখন চারুকে নিয়ে ব্যস্ত। প্রসঙ্গত, ২০২১ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর গিনেস বুকে মৃত গরু হিসেবে রেকর্ড গড়া রানির উচ্চতা ছিল ২০ ইঞ্চি, লম্বা ২৪ ইঞ্চি ও ওজন ২৬ কেজি। গত ১৯ আগস্ট দুই বছর বয়সে অসুস্থ হয়ে মারা যায় রানি।
তিনি বলেন, আমাদের শিকড় অ্যাগ্রো ইন্ড্রাস্ট্রিজের অনেক রকমের পশু-পাখি পালন করি। রানি মারা যাওয়ার পর প্রায় ছয় মাস আগে চারুকে আমরা সিলেট থেকে সংগ্রহ করেছিলাম। যেভাবে রানিকে সংগ্রহ করা হয়েছে, সেভাবেই চারুকে আনা হয়। এরপর থেকে এই খামারে চারুকে প্রাকৃতিক খোলামেলা পরিবেশে পালন করছি। তিনি বলেন, আগে যেহেতু রানি মারা গেছে, তাই চারুর প্রতি একটু বেশি যত্ন নেই। কর্মকর্তারা এখানে আনার পর ওর নাম চারু দিয়েছে। গিনেস বুক কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অনুযায়ী একাধিকবার চারুর মাপের ছবি এবং ভিডিও পাঠানো হয়েছে। শিকড় অ্যাগ্রোর পশু চিকিৎসক প্রতি দু’সপ্তাহ পরপর চারুকে দেখতে আসেন এবং ওজন, শরীর চকচকে আছে কি না, গঠন বাড়ছে কি না এসব পরীক্ষা করেন।
খামারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও কাজী সুফিয়ান বলেন, অল্প কয়েকদিনেই রানির উল্লেখযোগ্য ভক্ত তৈরি হয়েছিল। আর তাই বেশিরভাগ মানুষই রানির মৃত্যু মেনে নিতে পারেনি। আমরা অনেক টাকায় বিক্রির অফার পেয়েও কেন বিক্রি করিনি সেটা নিয়ে অনেকে বিদ্রূপ করেছেন। কেউ কেউ গাফেলতির কথা বলে আমাদের বকাও দিয়েছেন। তখন ভীষণ খারাপ লাগলেও আমরা দাঁতে দাঁত চেপে পরিস্থিতি মেনে নিয়েছিলাম। আসলে রানির প্রতি সবার ভালবাসাটা আমরা বুঝতাম।
তিনি আরও বলেন, রানির মৃত্যুর পর গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস কর্তৃপক্ষ শোক প্রকাশ করে আমাদের ইমেইল পাঠায়। তারা জানায়, রানির সম্মানার্থে পৃথিবীর সবচেয়ে জীবিত ছোট গরু হিসেবে আরও একটা ক্যাটাগরি তারা চালু করবে এবং আমাদের কাছে প্রতিযোগিতা করার মত কিছু থাকলে ইচ্ছা করলে এতে অংশ নিতে পারব। যারা শিকড় অ্যাগ্রো সম্পর্কে খোঁজ-খবর রাখেন, তারা নিশ্চয়ই জানেন, আমাদের সুদক্ষ এবং নির্ভরশীল কর্মীরা প্রতিদিনই দেশের আনাচে-কানাচে ঘুরে বেড়ায়। রানির জীবদ্দশায়ই আমাদের সংগ্রহশালায় নতুন চমক হিসেবে যোগ হয় ৪ দাঁতের প্রাপ্তবয়স্ক দেশীয় প্রজাতির বামন গরু চারু। যার উচ্চতা ২৩.৫০ ইঞ্চি, লম্বা ২৭ ইঞ্চি এবং ওজন ৩৯ কেজি। যাকে বর্তমানে পৃথিবীর সবচেয়ে জীবিত ছোট গরু হিসেবে গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস কর্তৃপক্ষ স্বীকৃতি দিয়েছে। মঙ্গলবার গিনেস বুক কর্তৃপক্ষ মেইলের মাধ্যমে আমাদের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন