মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলার দড়গ্রাম থেকে তিল্লী ইউনিয়নে যাতায়াতের সড়কের পুনঃনির্মাণ কাজ গত এক বছরেরও বেশি সময় ধরে বন্ধ রয়েছে। দুই কিলোমিটারের বেশি সড়কটির পুনঃনির্মাণ কাজ করতে গিয়ে মাটি কাটার পর বালি ফেলে রেখে আর কোনো কাজ করছে না সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার। সড়কে বালি ফেলে রাখায় চলাচলে মারাত্মক ভোগান্তি পোহাচ্ছে স্থানীয় ১০ গ্রামের হাজারো মানুষ। সাটুরিয়া উপজেলা প্রকৌশলী সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারকে সড়কের কাজ করার জন্য বারবার তাগাদা দিলেও ঠিকাদার কোনো পাত্তা দিচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে।
সাটুরিয়া উপজেলা প্রকৌশলীর কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, দুই বছর আগে শুরু হয় সাটুরিয়া উপজেলার দড়গ্রাম ইউনিয়নের কাকিলাবাড়ির আকবর দেওয়ানের বাড়ি থেকে চরতিল্লী পর্যন্ত পর্যন্ত ২ হাজার ২৯৫ মিটার সংযোগ সড়কের পুনঃনির্মাণ কাজ। তার আগে ২০১৯-২০ অর্থবছরে ১ কোটি ৯৫ লাখ টাকা বরাদ্দে ২০১৯ সালের ১৪ নভেম্বর সড়কের পুনঃনির্মাণ কাজের কার্যাদেশ দেওয়া হয়।
মেসার্স সেলিম এন্টারপ্রাইজ ও সুরমা এন্টারপ্রাইজ নামের দুই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান পায় এ কার্যাদেশ। গত বছরের ১৯ মে এই প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। তবে দুই বছর আগে কাজ শুরু করার পর এক বছর ধরে সড়কটির মাটি কেটে বালি ফেলে রাখা হয়েছে। আর বালি ফেলে রাখায় সড়কে চলাচল করতে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে স্থানীয় ১০ গ্রামের হাজারো মানুষকে।
তিল্লীর চর এলাকার দোকানদার মো. মজিবর জানান, সড়কটিতে সংস্কার কাজ শুরু হওয়ার পর সড়কের মাটি ভেকু দিয়ে কেটে নদী থেকে ড্রেজার দিয়ে বালু ফেলা হয়। তারপর থেকে গত এক বছরের বেশি সময় ধরে কোন ধরনের সংস্কার কাজ না করে সড়কটি এভাবে ফেলে রাখা হয়েছে। সড়কে বালুর কারণে যানবাহন এমনকি রিকশা বা ভ্যান গাড়িও চলাচল করতে পারে না।
চর তিল্লী এলাকার কৃষক কসিমুদ্দিন বলেন, রাস্তাটি এভাবে কেটে রাখায় আমাদের কৃষিপণ্য পরিবহন করে বাজারে নিতে পারছি না। এর ফলে ক্ষেতেই পচে যাচ্ছে শাকসবজি। এতে আমরা লোকসানের মুখে পড়েছি। এক বছর হবে রাস্তার মাটি কেটে ফেলে রেখেছে। আর কাজ হবে কি না, বুঝতে পারছি না।
স্থানীয় মো. সাদেক বলেন, আগে এই সড়কে রিকশা বা ভ্যান দিয়ে চলাচল করতাম। কিন্তু এখন হেঁটেও চলাচল করা যায় না। সড়ক পুনঃসংস্কারের জন্য এক বছর ধরে রাস্তা কেটে রেখেছে ঠিকাদার। এখন সামান্য বৃষ্টি হলেই পানি জমে রাস্তা কাদাযুক্ত হয়ে চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়ে।
তিল্লী ৯নং ওয়ার্ডের নব নির্বাচিত ইউপি সদস্য মো. বিনদ আলী জানান, সড়কটি দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ চলাচল করে। সড়কের পুনঃনির্মাণ কাজ এভাবে মাসের পর মাস ফেলে রাখায় চরম ভোগান্তি মানুষের। সড়কে ভ্যান রিকশা ঠেলে ঠেলে নিতে হয়। সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মো. আবুল হোসেন বলেন, পল্লী বিদ্যুতের খুঁটির জন্য সংস্কার কাজের মালপত্র আনা নেওয়ার যানবাহন ঢুকতে পারে না। এ জন্য কাজ বন্ধ আছে। দ্রুত কাজ শুরু হবে।
সাটুরিয়া উপজেলা প্রকৌশলী এ এফ এম তৈয়াবুর রহমান বলেন, জনগণের দুর্ভোগ লাগবে দ্রুত সময়ের মধ্যে সড়কের পুনঃনির্মাণ কাজটি বাস্তবায়নের জন্য সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে ইতোমধ্যে ৫টি চিঠি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু বারবার তাগিদ দিলেও ঠিকাদার পাত্তা দিচ্ছেন না।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন