ঝুঁকিপূর্ণভাবে গাছ কাঁটতে গিয়ে সুজন পাঠান নামে এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ৯টার দিকে ভেদরগঞ্জ উপজেলার মধ্য মহিষার গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। লাশের ময়নাতদন্ত নিয়ে গাছ মালিক ও শ্রমিক পরিবারের মধ্যে মতবিরোধ সৃষ্টি হয়েছে।
নিহতের পরিবার, গাছ কাঁটার অপর শ্রমিক ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গাছ কাঁটার জন্য মধ্য মহিষার গ্রামের ফারুক চৌধুরী স্থানীয় আব্দুর রহিম ও সুজন পাঠানকে নিয়োগ করেন। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে রহিম ও সুজন গাছ কাঁটা শুরু করে। ডাল কাটার জন্য নিরাপত্তা ছাড়া সুজন গাছে ওঠে। গাছের ডাল কাঁটা শেষে ডালের সাথে প্রায় ২৫ ফুট উপর থেকে সুজন মাটিতে পড়ে যায়। গুরুতর আহত সুজনকে গাছ মালিক ফারুক চৌধুরী, অন্যান্য শ্রমিক ও পরিবারের সদস্যরা শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে আসে। হাসপাতালের জরুরি বিভাগে দায়িত্বরত চিকিৎসক সুজনকে মৃত ঘোষণা করেন। প্রত্যক্ষদর্শী শ্রমিক আব্দুর রহিম জানায়, তারা ফারুক চৌধুরীর গাছ কাঁটতে যায়। একটি কড়ই গাছের ডাল কাটার জন্য সুজন প্রায় ২৫ ফুট উপরে ওঠে। একটি ডাল কাঁটা হলে সেই ডালের সাথে সুজন মাটিতে পড়ে যায়।
শক্ত রশি দিয়ে কোমর ও গাছের সাথে বাঁধা থাকলে এই ধরণের দুর্ঘটনা ঘটত না। নিরাপত্তার জন্য সেখানে কোন ব্যবস্থা ছিল না।
নিহত সুজনের মা ছালেহা জানান, সুজনের হাবসা ও সুমাইয়্যা নামে দুটি মেয়ে সন্তান রয়েছে। এর মধ্যে একটি ছেলে হলেও সুজনের স্ত্রীকে (ইয়াছমিন) ধরে রাখতাম। এখন কোন ভরসায় তাকে ধরে রাখব। এখন সুজনের স্ত্রী-সন্তানদের কি হবে? সুজন একা চলে গেছে, এলোমেলো করে দিয়ে গেছে পুরো পরিবার। লাশ কাটার ঘরে আমার ছেলেকে রাখা হয়েছে। আমার ছেলের শরীর যেন না কাঁটা হয়।
গাছ মালিক ফারুক চৌধুরী বলেন, গাছ কাঁটার শ্রমিকরা সব সময় যেভাবে গাছ কাঁটে আজও সেই পদ্ধতিতেই গাছ কাঁটা শুরু করে। শ্রমিকের জন্য আলাদা কোন নিরাপত্তার ব্যবস্থা ছিল না। যদিও এটা দুর্ঘটনা তবুও সুজনের পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করব। লাশের ময়নাতদন্ত হলে ভবিষ্যতের জন্য ঝামেলা মুক্ত থাকা যায়। চেয়ারম্যানের সাথে আলাপ করে লাশ ময়নাতদন্তের ব্যবস্থা করব।
শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আব্দুস সোবাহান বলেন, লাশ মর্গে রাখা হয়েছে। নিহতের পরিবার ময়নাতদন্ত ছাড়া লাশ গ্রহণ করতে চায়। জেলা প্রশাসকের অনুমতি ছাড়া বিনা ময়নাতদন্তে লাশ হস্তান্তর করা সম্ভব না।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন