শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

দক্ষিণাঞ্চলে ফেরি বিড়ম্বনা কমলেও মানসম্মত যাত্রীসেবা চালু হয়নি

বিআরটিসিও উদাসীন

নাছিম উল আলম : | প্রকাশের সময় : ৩০ জানুয়ারি, ২০২২, ১২:০১ এএম

দক্ষিণাঞ্চলে ১২টি গুরুত্বপূর্ণ সেতু নির্মিত হওয়ায় ফেরি ঘাটের সংখ্যা অর্ধেক হ্রাস পেলেও মানসম্মত ও যাত্রীবান্ধব যানবাহন চলাচলের বিষয়টি এখনো নিশ্চিত হয়নি। এখনো গন্তব্যে নির্দিষ্ট সময়ে পৌঁছানো এ অঞ্চলের মানুষের ভাগ্যের ব্যাপার। তবে সড়ক-মহাসড়কে কোন যানজট নেই, আছে অহেতুক বিলম্বের বিড়ম্বনা। আগামী জুনের মধ্যে বরিশাল-খুলনা মহাসড়কের বেকুঠিয়াতে ‘৮ম বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতু’ চালু হলে চরখালী ফেরিতেও যানবাহন পারাপার প্রায় বন্ধ হয়ে যাবে। ফলে এ অঞ্চলের সড়ক অধিদফতরের ফেরি পয়েন্ট অবশিষ্ট থাকবে ১৯টি। অথচ দুই দশক আগেও এ অঞ্চলের ৪০টি ফেরি ঘাটে জনদুর্ভোগ ছিল নিয়মিত ঘটনা।
কিন্তু এ অঞ্চলের প্রায় ১৩৫ কিলোমিটার জাতীয় মহাসড়ক, ২৯০ কিলোমিটার আঞ্চলিক মহাসড়ক ও ১ হাজার ২শ’ কিলোমিটার জেলা সংযোগ সড়কে মানসম্মত গণপরিবহন ও পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের অনৈতিক কর্মকাণ্ড কবে বন্ধ হবে তা অজ্ঞাত।

বরিশাল থেকে মাত্র ৩৮ কিলোমিটার দূরত্বের পটুয়াখালী জেলা সদর এবং ১০৮ কিলেমিটার দূরত্বের কুয়াকাটায় পৌঁছাতে যথাক্রমে দুই থেকে আড়াই ঘণ্টা ও প্রায় ৪ ঘণ্টা পর্যন্ত সময় লাগছে। বাস মালিক ও শ্রমিকরা বিলম্বের জন্য লেবুখালীতে ফেরি পারাপারের বিড়ম্বনাকে দায়ী করে আসলেও পায়রা সেতু চালু হওয়ার পরেও পরিস্থিতির খুব একটা উন্নতি হয়নি। বিআরটিসি বরিশাল-কুয়াকাটা রুটে মানসম্মত ও বাতানুকূল বাস সার্ভিস সম্প্রসারণে কোন উদ্যোগ নেয়নি।

দক্ষিণাঞ্চলে অনুমোদিত প্রায় ৪০টি রুটের বাসগুলো যাত্রীবান্ধব নয়। লোকাল বাসের মত মাত্রাতিরিক্ত যাত্রী বোঝাই করে পথে পথে বিলম্ব করে বলেও অভিযোগ যাত্রীদের। বরিশাল-পটুয়াখালী মিনিবাস মালিক সমিতি দক্ষিণাঞ্চলের বেশিরভাগ রুটের গণপরিবহন পরিচালনা ও নিয়ন্ত্রণ করে। সারাদেশ থেকে পর্যটকরা সড়ক ও নৌপথে বরিশালে পৌঁছে এ মহাসড়ক ধরেই কুয়াকাটায় যাতায়াত করছে। দীর্ঘদিনের লেবুখালীতে ফেরির বিড়ম্বনা না থাকলেও পটুয়াখালী ও কুয়াকাটাগামী গণপরিবহনে দ্রত ও সময়মত গন্তব্যে পৌঁছানোর বিষয়টি পরিপূর্ণ নিশ্চিত হয়নি।

অপরদিকে বরিশাল বাস মালিক সমিতি মহানগরী থেকে বানারীপাড়া, স্বরুপকাঠি, ভুরঘাটা, মীরগঞ্জ ছাড়াও মাদারীপুর ও বাংলাবাজার পর্যন্ত আঞ্চলিক রুটে বাস পরিচালনা ও নিয়ন্ত্রণ করে আসছে। কিন্তু প্রায় সব রুটেই মানসম্মত বাসের অভাব রয়েছে। লোকাল গাড়ির মত চলাচল করায় যাত্রীদের দুর্ভোগের কমতি নেই।
তবে এ ব্যাপারে বরিশাল-পটুয়াখালী মিনিবাস মালিক সমিতি ও পরিবহন শ্রমিক নেতৃবৃন্দ নানা বাণিজ্যিক সমস্যার কথা তুলে ধরেন। পায়রা সেতুতে ফেরি ভাড়ার তিন থেকে পাঁচগুণ টোল নির্ধারন ও ডিজেলের দাম ২৩% বৃদ্ধিতে তাদের উদ্বেগের কথাও জানান। বর্ধিত টোল প্রত্যাহার সম্ভব না হলে পুনরায় ফেরি সার্ভিস চালুরও দাবি জানিয়েছেন। অন্যথায় বরিশাল থেকে কুয়াকাটা পর্যন্ত ১০৮ কিলোমিটার মহাসড়কে ৬টি সেতুর টোল পরিশোধ করে চলতে হলে ভাড়া আরো বৃদ্ধি করতে হবে বলেও জানান বাস মালিকরা।
বিআরটিসির বরিশাল বাস ডিপোর ১৪টি এসি বাসের মধ্যে ৯টি বাংলাবাজার রুটে চলাচল করছে। অপর ৬টির মধ্যে কুয়াকাটা-বাংলাবাজার এবং কুয়াকাটা-খুলনা রুটে দু’টি করে এবং ভান্ডারিয়া থেকে বাংলাবাজার ও বরিশাল-কুয়াকাটা রুটে মাত্র ১টি করে বাস চলছে।

এ ব্যাপারে বিআরটিসি’র বরিশাল বাস ডিপোর ব্যবস্থাপক জানান, সদর দফতরে আরো ৪টি এসি বাসের চাহিদা দেয়া হয়েছে। তবে গাড়ি সঙ্কটে এসব বাসের বরাদ্ধ পাওয়া যায়নি। নতুন এসি বাস পেলে বরিশাল-কুয়াকাটা ও গোপালগঞ্জ হয়ে খুলনা-বেনাপোল রুটে বাস সার্ভিস সম্প্রসারণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন