শীতকালে আমাদের শরীর খারাপ হওয়ার আশঙ্কা বেশি থাকে। বছরের এই সময়ে আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হয়ে পড়ে। ফলে শরীরে নানাবিধ জীবাণুর আক্রমণ বেড়ে যায়। সেই সঙ্গে ঠাণ্ডার উপদ্রপ তো আছেই। এ কথাও ঠিক যে, শীতের ঠাণ্ডা আমাদের শরীরের উপকারেও লাগে। শীতের ঠাণ্ডা কীভাবে শরীরের জন্য উপকারী সে বিষয়ে বিস্তারিত জানিয়েছেন হারবাল গবেষক ও চিকিৎসক ডা. আলমগীর মতি। যেমন-
ঘুমের ঘাটতি দূর করে : কাজের চাপ হোক কী স্ট্রেস, নানা কারণে আজকের যুব সমাজের চোখে একেবারেই ঘুম নেই। ফলে শরীর এবং মস্তিষ্ক পর্যাপ্ত পরিমাণে রেস্ট না পাওয়ার কারণে বাড়ছে নানাবিধ রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা। ঠাণ্ডার কারণে শরীরের ভিতরের তাপমাত্রা কমতে শুরু করে। ফলে ঘুম আসতে সময় লাগে না। একটি গবেষণায় দেখা গেছে ঘুমানোর সময় ঘরের তাপমাত্রা যদি ১৫.৫-১৯ ডিগ্রির মধ্যে থাকে, তাহলে সব থেকে ভালো ঘুম হয়।
ক্ষিদে বাড়ে : শীতকালে আমাদের ক্ষিদে বেড়ে যায়। ফলে ভালো-মন্দ খাওয়ার প্রবণতা বাড়ে। ঠিকমতো খাওয়া-দাওয়া করলে শরীরে পুষ্টির ঘাটতি দূর হয়। ফলে ভিতর থেকে শরীর শক্তিশালী হয়ে ওঠে, সেই সঙ্গে রোগভোগের আশঙ্কাও হ্রাস পায়।
ওজন হ্রাস পায় : অতিরিক্ত ওজনের কারণে যদি চিন্তায় থাকেন, তাহলে সেই চিন্তা দূর হওয়ার সময় এসে গেছে। ঠাণ্ডার সময় শরীর প্রতি মুহূর্তে নিজেকে গরম রাখার চেষ্টা চালিয়ে যায়। এই কাজটা শরীর করে থাকে চর্বি গলানোর মধ্যে দিয়ে।
ফলে স্বাভাবিকভাবেই শরীরে জমে থাকা অতিরিক্ত মেদ বার্ন হতে শুরু করায় ওজন কমতে শুরু করে। শীতকালে আমাদের শরীরে জমতে থাকা খারাপ ফ্যাট বা ব্রাউন ফ্যাট গলতে শুরু করে। ফলে ওজন কমতে একেবারেই সময় লাগে না।
শীতকালে আরেকভাবে ওজন কমে থাকে। পৃথক এক গবেষণায় দেখা গেছে ঠাণ্ডার সময় আমাদের কাঁপুনি হয়েই থাকে। এমনটা হওয়ার সময় প্রচুর পরিমাণে চর্বি ঝরতে শুরু করে। প্রায় ১ ঘণ্টা শরীরচর্চা করলে যে পরিমাণ চর্বি ঝরে, সেই একই পরিমাণ ঝরে প্রায় ১৫ মিনিট কাঁপুনি হলেও।
শরীরের প্রদাহ কমে : ঠাণ্ডার মৌসুমে শরীরের ভিতরে প্রদাহ বা ইনফ্লেমশন কমতে থাকে। ফলে যে কোনো ধরনের যন্ত্রণা কমতে একেবারেই সময় লাগে না। শীতকালে যেমন ব্যথা লাগার আশঙ্কা বাড়ে, তেমনি যন্ত্রণাও কমে খুব তাড়াতাড়ি।
মানসিক অবসাদ দূর হয় : ঠাণ্ডার সময় আমরা সহজে বাড়ি থেকে বেরতে চাই না। অনেকটা সময় পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কাটানোর সুযোগ মেলে। স্বাভাবিকভাবেই স্ট্রেস কমতে শুরু করে। সেই সঙ্গে ব্রেন পাওয়ারও বৃদ্ধি পায়।
মশাবাহীত রোগের প্রকোপ কমে : ঠাণ্ডায় মশারা এত মাত্রায় কাবু হয়ে পড়ে যে ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া এবং ম্যালেরিয়ার প্রকোপ স্বাভাবিকভাবেই হ্রাস পায়।
ত্বকের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটে : আমাদের অনেকের মনে হয় যে শীতকাল মানেই আমাদের ত্বকের বারোটা বেজে যাওয়া। বাস্তবে কিন্তু ঠাণ্ডার সময় ত্বকের নানাভাবে উপকার হয়।
শীতকালে ত্বকের ভিতরে থাকা শিরা-ধমনীতে রক্তের সরবরাহ বেড়ে যায়। ফলে অক্সিজেন সমৃদ্ধ রক্ত পৌঁছে যাওয়ার কারণে স্বাভাবিকভাবেই স্কিনের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটতে শুরু করে। ত্বকের আর্দ্রতা হারানো ছাড়া আর কোনো স্কিনের সমস্যা কিন্তু শীতকালে হয় না!
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন