শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

শিবগঞ্জে ইউএনও’র চালকের বিরুদ্ধে ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগ

শিবগঞ্জ (চাঁপাইনবাবগঞ্জ) উপজেলা সংবাদদাতা : | প্রকাশের সময় : ৩১ জানুয়ারি, ২০২২, ১২:০১ এএম

চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার গাড়ি চালক আবদুল খালেক বাবুর বিরুদ্ধে ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার দাইপুখুরিয়া ইউনিয়নের কয়লার মাঠ-জালসুখার বিলে। এ বিষয়ে গতকাল রোববার সকালে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন শাহাবাজপুর ইউনিয়নের মুসলিমপুর গ্রামের বদিউজ্জামানের ছেলে আবদুস শুকুর।

অভিযোগে জানান, দাইপুখুরিয়া ইউনিয়নের কয়লার মাঠ-জালসুখার বিল সারা বছর পানিতে ডুবে থাকে। কৃষকরা কোন ফসল আবাদ করতে পারে না। তবে জমি খননের মাধ্যমে পুকুর তৈরির জন্য গত ২ জানুয়ারি চকপাড়া গ্রামের সেরাজুল ইসলামের কাছ থেকে বাৎসরিক ২৫ হাজার টাকা চুক্তিতে চার বিঘা জমি বর্গা নিয়ে ও নিজেদের আরো ১৪ বিঘা জমিসহ মোট ১৮ বিঘা জমিতে পুকুর খননের কাজ শুরু করেন আবদুস শুকুরসহ তিন মৎস্য চাষী। গত ৪ জানুয়ারি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার গাড়ি চালক আবদুল খালেক বাবু মৌখিকভাবে তাদের পুকুর খনন কাজে বাঁধা দিয়ে এক লাখ টাকা ঘুষ দাবি করলে ৬ জানুয়ারি উপজেলা শিক্ষা অফিসের পাশে শাহিনের চায়ের দোকানের পেছনে বাবুর হাতে ২০ হাজার টাকা প্রদান করেন। দুদিন পর আরও দেয়া হয় ৩০ হাজার টাকা। কিন্তু এতেও তিনি সন্তুষ্ট হননি, দাবি করেন আরও ৫০ হাজার টাকা। আবদুস শুকুরের কাছে কথোপকথনের একটি অডিও রেকর্ড সংরক্ষিত আছে। অভিযোগে উল্লেখ রয়েছে গত ২৪ জানুয়ারি হঠাৎ করে দাইপুখুরিয়া ইউনিয়ন পরিষদের ৭-৮ জন গ্রামপুলিশ চেয়ারম্যানের অজুহাত দেখিয়ে পুকুর খনন কাজে বাঁধা দিয়ে ড্রেজারের ব্যাটারি ও চাবি নিয়ে যান।

এদিকে স্থানীয় কয়েকজন ইটভাটা মালিক জানায়, দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে একই স্থানে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার গাড়ি চালক আবদুল খালেক বাবু চাকরি করে আসছেন। ফলে প্রশাসনের দাপটে পুরো উপজেলা চষে বেড়াচ্ছেন অর্থ আদায়ে। তার কাছ থেকে রেহাই পাননি অবৈধভাবে পদ্মা ও পাগলা নদীর মাটি-বালু উত্তোলনকারী ব্যবসায়ীরা। এমনকি বাদ পড়েনি আশ্রয়ণ প্রকল্পের উপকারভোগীরা। বাড়ি বরাদ্দ দেওয়ার নামে একাধিক ব্যক্তির কাছ থেকে তিনি হাতিয়ে নিয়েছেন ১৫-২০ হাজার টাকা করে। এছাড়া দ্বিতীয় ধাপে আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাড়ি নির্মাণ কাজের তদারকির দায়িত্ব পেলে লাখ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে গাড়ি চালকের বিরুদ্ধে। অন্যদিকে স্থানীয় কয়েকজন পুকুর খননকারী ব্যবসায়ী জানায়, গত মৌসুমে বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে পুকুর খনন ও ড্রেজার মেশিন ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে প্রায় ১০-১২ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন গাড়ি চালক।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার গাড়ি চালক আবদুল খালেক বাবু তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। দাইপুখুরিয়া ইউপি চেয়ারম্যান আলোমগীর রেজা জানান, স্থানীয় লোকজনের মৌখিক অভিযোগের ভিত্তিতে কয়লার মাঠ-জালসুখার বিল থেকে গ্রামপুলিশ দিয়ে ড্রেজারের ব্যাটারি ও চাবি আনা হয়েছে। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। তিনি চাবি দিতে নিষেধ করেছেন। তবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাকিব আল রাব্বি বলেছেন, অবৈধভাবে কোন পুকুর খনন করতে দেয়া যাবে না। চালকের টাকা নেওয়ার বিষয়ে তিনি অবগত নন। প্রমাণসহ অভিযোগ পেলে চালকের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন