রোববার, ০৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

মহানগর

করোনা টিকার দ্বিতীয় ডোজ ভণ্ডুল করে দিলো আসল সোহাগের সব পরিকল্পনা!

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৩০ জানুয়ারি, ২০২২, ৯:৫০ পিএম

মাসিক পাঁচ হাজার টাকা ভাড়ায় জেল খাটছে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি নকল সোহাগ। তার প্রকৃত নাম হলো মো. হোসেন। বাবা মৃত হাসান উদ্দীন। অন্যদিকে, জেলের বাইরে ভালই চলছিল আসল মো. সোহাগের (৩৪) দিনকাল। একেবারেই নির্ভার হতে দেশ ছাড়ার পরিকল্পনা করেছিল। সংগ্রহ করেছিল আমিরাতের ভিসা। তবে এর আগে বাবার নাম পাল্টে সে সংগ্রহ করেছিল জাতীয় পরিচয়পত্র এবং পাসপোর্ট। কিন্তু বাধ সেধেঁছে করোনা টিকার দ্বিতীয় ডোজ। ভণ্ডুল করে দিয়েছে আসল সোহাগের সব পরিকল্পনা। রাজধানীর সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আজ টিকা দিতে গিয়েই র‌্যাব-১০ এর জালে ধরা পড়েছে সে।

২০১০ সালের ২৬ নভেম্বর কদমতলী আউটার সার্কুলার রোডে নোয়াখালী পট্টির নান্নু জেনারেল স্টোরের সামনে বেলা সোয়া ২টার দিকে টিটুকে গুলি করে খুন করে। এ ঘটনায় বড় সোহাগ (৩৪), মামুন (৩৩), ছোট সোহাগসহ (৩০) অজ্ঞাতনামা আরও ৩/৪ জনকে আসামি করে মামলা হয়। কদমতলী থানার মামলা নং-৪৯।তাং-২৬/১১/২০১০। আজ রবিবার কারওয়ানবাজারে র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাব-১০ এর অধিনায়ক (সিও) অতিরিক্ত ডিআইজি মাহফুজুর রহমান এসব কথা জানান।

মাহফুজুর রহমান বলেন, কদমতলী এলাকায় ২০১০ সালের ২৬ নভেম্বর হুমায়ুন কবীর ওরফে টিটু হত্যাকাণ্ডে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি এই সোহাগ। একই বছরের ২২ ডিসেম্বর গ্রেফতার হয়ে ২০১৪ সালের ১৬ মে জামিনে মুক্তি লাভ করার পর থেকেই সে পলাতক ছিল। ২০১৭ সালের ২৮ ডিসেম্বর মামলার ১নং আসামি সোহাগের অনুপস্থিতিতে আদালত তাকে যাবজ্জীবন সাজার রায় ঘোষণা করেন। পরবর্তীতে পরিকল্পনা অনুযায়ী সোহাগ তারই ফুফাতো ভাই হোসেনকে (৩৫) (বাবা মৃত হাসান উদ্দিন) নকল সোহাগ সাজিয়ে ২০১৮ সালের ১ জানুয়ারি আদালতে আত্মসমর্পণ করে। আদালত জামিন নামঞ্জুর করে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

র‌্যাব-১০ এর সিও আরও বলেন, পূর্ব-পরিকল্পনা অনুযায়ী মাদকাসক্ত হোসেন ওরফে নকল সোহাগকে মাসিক পাঁচ হাজার টাকার বিনিময়ে জেল হাজতে পাঠায় সোহাগ। শর্ত ছিল ২/৩ মাসের মধ্যেই তাকে জেল থেকে বের করে আনা হবে। ছেলে-বেলা থেকেই হোসেন (৩৫) মাদকাসক্ত। তার বিশেষ সখ্যতাও ছিল সোহাগের সঙ্গে। ২০২১ সালের মাঝামাঝি সময়ে একটি গণমাধ্যমে টিটু হত্যা মামলায় একজনের পরিবর্তে অন্যজন জেল খাটছে এমন প্রতিবেদন প্রকাশের পর বিষয়টি আদালতের নজরে আসে। আদালত কারা কর্তৃপক্ষের কাছে প্রতিবেদন চাইলে হাজতে থাকা আসামি নকল সোহাগ প্রমাণিত হয়। এরপর থেকেই র‌্যাব আসল সোহাগকে খুঁজতে থাকে। এরই মধ্যে বিশেষ দায়রা আদালত ও দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-৪, প্রকৃত আসামির (সোহাগ) বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে অধিনায়ক, র‌্যাব-১০, ধলপুর, ঢাকা বরাবর অনুলিপি প্রেরণ করেন।

শিগগিরই হয়তো সে দেশত্যাগ করে ফেলতো জানিয়ে র‌্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, গ্রেফতার এই ব্যক্তি অত্যন্ত ধূর্ত। বাবার নাম গিয়াস উদ্দীন পাল্টে শাহ আলম ফকির নামে পাসপোর্ট সংগ্রহ করে। এই পাসপোর্টের বিপরীতে এরইমধ্যে সে আরব আমিরাতের ভিসা সংগ্রহ করে ফেলেছিল। কাদের সহায়তায় সে এই রকম ভয়ঙ্কর কাজটি করেছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদেই সে বলেছে, তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় ২টি হত্যা মামলা, ২টি অস্ত্র মামলা ও ৬টি মাদক মামলাসহ মোট ১০টি মামলা রয়েছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন