শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ০৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ০৮ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

বঙ্গোপসাগরের বুকে অনন্য এক ভুবন ‘চর বিজয়’

কলাপাড়া(পটুয়াখালী)প্রতিনিধি | প্রকাশের সময় : ১ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ৫:০১ পিএম

চারদিকে অথই জলরাশি,আর শুধু ধু-ধু বালু। বঙ্গোপসাগরের বুক চিরে জেগে ওঠা এক অনন্য ভুবন ‘চর বিজয়’। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চেনা-অচেনা পাখির কলকাকলীতে মুখরিত থাকে এ চরে। বালিয়াড়িতে অগণিত লাল কাঁকড়া নৃত্য। এ যেন ভিন্ন নয়নাভিরাম নীল দিগন্তবিস্তৃত অপরূপ সৌন্দর্যের হাতছানি। গঙ্গামতী সৈকত থেকে দক্ষিণ-পূর্ব কোণে প্রায় ৪০ কিলোমিটার দূরে গভীর এ দ্বীপটির অবস্থান। তবে কুয়াকাটায় আগত দেশী-বিদেশী পর্যটকদের কাছে যোগ হয়েছে এক নতুন মাত্রা। এ দ্বীপটি পর্যটন শিল্পে ঘটবে বৈপ্লবিক পরিবর্তন এমন প্রত্যাশা করেছেন আগত পর্যটকসহ ট্যুরিস্ট ব্যবসায়িরা।

স্থানীয় ও ট্যুরিস্ট ব্যবসায়িদের সূত্রে জানা গেছে, বর্ষা মৌসুমে পানিতে ডুবে থাকলেও শীত মৌসুমে প্রায় পাঁচ হাজার একর আয়তন নিয়ে জেগে ওঠে এ চর। ইলিশসহ সামুদ্রিক মাছের অভয়ারণ্য হওয়ায় সারা বছর এর আশপাশে থাকে জেলেদের উপস্থিতি। ভ্রমণপিপাসুদের একটি দল এই দ্বীপের সন্ধান পায়। জেলেদের ভাষায় ‘হাইরের চর’ হলেও এটির নাম দেয়া হয়েছে ‘চর বিজয়’। বিজয়ের মাসে চরটি আবিষ্কার হয় বলেই চর শব্দের সঙ্গে বিজয় শব্দটি যুক্ত করে লাল সবুজের জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন তারা। পরে জেলা প্রশাসকের উদ্যোগে বন বিভাগ ওই চরে গোল, ছইলা, কেওড়া ও সুন্দর গাছের চারা রোপন করে। বর্তমানে অস্থায়ী বাসস্থান তৈরি করে মাছ শিকার ও শুঁটকি প্রক্রিয়াজাত করে জেলেরা। এর ফলে ওই চরে লাল কাকড়ার ছুটাছুটি ও অতিথি পাখির অবাধ বিচরনে বাধাঁগ্রস্থ হচ্ছে বলে একাধিক পর্যটকরা জানিয়েছেন।
পর্যটন সংশ্লিষ্ট সংগঠন কুয়াকাটা টুরিজাম ম্যানেজম্যন্ট অ্যাসোসিয়েশন কুটুমের সাধারন সম্পাদক হোসাইন আমির বলেন, সে দিন ছিল ২০১৭ সালের ৩ ডিসেম্বর। সৈকতের একটি চায়ের দোকানে বসে আমারা কয়েক জন মিলে কথা বলছিলাম নুতন জায়গায় বেড়াতে যাব। হঠাৎ করে এক জেলে বলেন ভাই সাগরের মাঝে জেগে উঠেছে বিশাল একটি চর। তখন বুদ্ধি করলাম কি ভাবে যাব। পরে ফেসবুক আইডিতে একটি পোস্ট দিলাম “নতুনের সন্ধানে আমরা” যাচ্ছি, আপনারাও সঙ্গী হতে পারেন। এরপর ২০১৭ সালে ৫ ডিসেম্বর কয়েক জন মিলে ট্রলার যোগে ওই চরে যাই। এর পর শুরু হয় এ চরটির শুভ সুচনা। প্রতিবছর শীত মৌসুমে কয়েক লাখ অতিথি পাখির আগমন ঘটে। আর শীত কমে আবার পাখিগুলো যে যার মতো অন্যত্র চলে যায়। প্রতিদিনই পর্যটকরা ট্রলার যোগে এ চরটিকে দেখতে যায়। কুয়াকাটা সৈকত থেকে ট্যুরিস্ট বোট নিয়ে মাত্র দেড় ঘণ্টায় চরবিজয় পৌঁছানো যায়। বঙ্গোপসাগরের বুকে এ যেন এক অনন্য ভুবন ‘চর বিজয়’।

তবে ইউ এস এইড ওয়ার্ল্ড ফিস ইকোফিস-২এক্টিভিটি প্রকল্পের সহযোগী গবেষক সাগরিকা স্মৃতি এ চরটি থেকে ফিরে এসে বলেন,এই চরটিতে প্রতিনিয়ত পর্যটকরা যাচ্ছে।আরা তাদের ফেলে রাখা প্লাষ্টিক বর্জ ক্রমনয় দূষন বাড়াচ্ছে।এছাড়া পর্যটকদের সমাগমের কারনে অতিথি পাখি, ললা কাঁকড়া ও সামুদ্রিক কচ্ছপের অবাধ বিচরন কমে যাবে বলে তিনি ধারনা করেন। এছাড়া এই চরটির আশপাশে ছোট ফাঁসের জাল দিয়ে জেলেরা বিভিন্ন প্রজাতির সামুদ্রিক মাছের পোনা নিধন করছে। তবে জেলেদের পাতা জালে অতিথি পাখিও মারা পড়ছে বলে তিনি জানিয়েছেন।

মহিপুর বনবিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ বলেন, চরটিতে পর্যায়ক্রমে ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চলের আওতায় আনা হবে।পশু পাখির আভায়ারন্য গড়ে তোলার জন্য বেশ কিছু ম্যানগ্রোভ জাতীয় গাছের চারা রোপন করার পরিকল্পনা রয়েছে।

কুয়াকাটা পৌর মেয়র আনোয়ার হাওলাদার বলেন,সাগরের মধ্যখানে একটুকরা ভুমি।এটি কুয়াকাটার জন্য আর্শিবাদ। তবে পযটকদের ভ্রমনের জন্য চর বিজয়কে আকর্ষনিয় পর্যটন স্পট হিসেবে গড়ে তোলার দাবি করেছেন তিনি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহিদুল হক সাংবাদিকদের জানান, জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে চর বিজয়ে সবুজ বেষ্টনী করা পরিকল্পনা রয়েছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (4)
M Saifur Rahman ২ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ৬:৩৫ পিএম says : 0
চর বিজয়কে পরিকল্পিত উন্নয়ন ধারায় নিয়ে সিঙ্গাপুর শহরের মত করে গড়ে তোলা যায় । এমন ভাবে সরকারী বেসরকারী সকল বিবেকবান মানুষের সাম্প্রতিক চাহিদা খুবই গুরুত্বপূর্ণ যাতে এমন‌ পরিকল্পনা প্রনয়ন করতে পারেন ।
Total Reply(0)
শাপলা শিরিন ৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ১০:০৩ পিএম says : 0
অবশ্যই একটি আশাপ্রদ খবর এটি।দয়া করে সংশ্লিস্ট মহলকে এটার পরিস্কার পরিচ্ছন্নতার দিকে লক্ষ্য রাখতে বিনীত অনুরোধ জানাচ্ছি।
Total Reply(0)
Md Emran Ali ৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ১২:৩১ পিএম says : 0
অবশ্যই সরকারের উচিত এটাকে সংরক্ষণ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা।
Total Reply(0)
S.M. Jalil. ৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ১:২৬ এএম says : 0
The shaol named char Bijoy to my understanding is at its formative stage. It needs protection of the process of formation and maturity. The vision and mission are supposed to be building up of bioresources. This achievement of sustainable resource built up is followed by working out the management plan on the principle of sustainable yield. This is very important so far sustainability to of the formation of land and growing bioresources. It may then extent open public servicing like tourism or be a restricted if technically permit.we do here remember of the management of St.Martin . Thanks.
Total Reply(0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন