বাবা-মা সন্তানকে আদর, স্নেহ, মায়া-মমতা, ভালোবাসা দিয়ে বড় করে তোলেন। কিন্তু পরিশেষে বৃদ্ধ বয়সে এই বাবা-মার কপালে সন্তানের ভালোবাসার বদলে অনেক ক্ষেত্রেই জুটে অবহেলা। সেদিনই দেখলাম, এক বৃদ্ধাকে চক্ষু হাসপাতালের উদ্দেশ্যে একা হাঁটছেন। যদিও তার ঘরে চারটি ছেলে। সন্তানরা জায়গা-জমি লিখে নিয়ে গেছে, এখন আর তার মায়ের যত্ন নেওয়ার প্রয়োজনবোধ করে না। আরেক বৃদ্ধাকে দেখলাম, যানজট পূর্ণ রাস্তায় হুইলচেয়ার চালিয়ে যাচ্ছেন একা একা। কদিন আগে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা শাসনগাঁও এলাকায় সন্তানদের দ্বারা রাস্তায় ফেলে যাওয়া বস্তা বন্দি আশি বছর বয়সী বৃদ্ধা হাসিনা বেগমের মৃত্যু হলো। আজকাল এমন ঘটনা প্রায়ই ঘটছে। সারা জীবন সন্তানকে কষ্ট করে বড় করে যখন তারা বৃদ্ধ বয়সে একটু স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলবে সেই সময়েও তাদের লড়তে হচ্ছে পেটের তাগিদে। সন্তানরা তাদের খাবারের দায়িত্ব না নেওয়ায় কেউ রিকশা চালাচ্ছেন, কেউ ডাব বিক্রি করছেন, কেউ বাদাম বিক্রি করছেন আর কেউবা এই শীতের রাতে পাতলা একটা চাদর গায়ে কলা বিক্রির আশায় বসে আছেন। যাদের আঙ্গুল ধরে হাঁটতে শেখা তাদের একটু বয়স হলেই জোড় করে বৃদ্ধাশ্রমে দিয়ে আসার ঘটনাও ঘটছে। কিন্তু এটা তো কারো কাম্য হতে পারে না। আজকে যারা তরুণ, আগামী দিনে তারাও তো একই পরিস্থিতিতে পড়তে পারেন। তাই, বিষয়টি নিজেদের ক্ষেত্রে ঘটলে কেমন অনুভূতি হবে, সেটা একবার ভাবুন। তাহলেই বুঝতে পারবেন, আমাদের বৃদ্ধ বা-মায়েরা আমাদের কাছ থেকে কী আচরণ প্রত্যাশা করে। আমাদেরই বা কী করা উচিৎ। আসুন, আমরা প্রত্যেকে আমাদের বৃদ্ধ বাবা-মার প্রতি যত্নশীল হই। তাদের দায়িত্ব নিই। বৃদ্ধ বয়সে তাদেরকে একটু ভালোভাবে বাঁচার ব্যবস্থা করে দিই।
জিন্নাতুন নেসা (শান্তা)
শিক্ষার্থী, পুলিশ লাইন্স স্কুল অ্যান্ড কলেজ, বগুড়া।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন