ঢাকাস্থ সউদী দূতাবাস কর্তৃপক্ষ জমাকৃত অর্ধেক পাসপোর্টে ভিসা স্ট্যাম্পিং করছে। জমাকৃত বাকি অর্ধেক পাসপোর্ট কোনো কারণ ছাড়াই ভিসা স্ট্যাম্পিং না করেই সংশ্লিষ্ট এজেন্সিগুলোকে ফেরত দিচ্ছে। এতে সউদী গমনেচ্ছু হাজার হাজার কর্মী চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। দূতাবাস থেকে যথাসময়ে ভিসা না পাওয়ায় শত শত কর্মীর স্বাস্থ্য পরীক্ষার মেয়াদ শেষ হয়ে যাচ্ছে। দ্বিতীয় ও তৃতীয় দফায় স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে পুনরায় দশ হাজার টাকা করে গচ্চা দিতে হচ্ছে এসব সউদীগামী কর্মীকে। এতে যথাসময়ে সউদীতে কর্মী পাঠাতে না পেরে বিড়ম্বনার সম্মুখীন হচ্ছে এজেন্সিগুলো। ফলে সউদী শ্রমবাজার নিয়ে নানা শঙ্কা বিরাজ করছে।
উল্লেখ্য, জনশক্তি রফতানির সবচেয়ে বড় শ্রমবাজার সউদীতে বর্তমানে বিশ লক্ষাধিক বাংলাদেশি নারী-পুরুষ কর্মী কঠোর পরিশ্রম করে প্রচুর রেমিট্যান্স দেশে পাঠাচ্ছে। দূতাবাস থেকে ভিসা ইস্যুর ক্ষেত্রে ধীরগতি পরিলক্ষিত হওয়ায় প্রত্যেক রিক্রুটিং এজেন্সিতে শত শত পাসপোর্টের স্তূপ। প্রতি সপ্তাহে সউদী দূতাবাস থেকে ত্রিশটি পাসপোর্টে ভিসা স্ট্যাম্পিং না হওয়ায় যথাসময়ে কর্মী পাঠাতে পারছে না এজেন্সিগুলো। ফলে সউদী নিয়োগকর্তা ও রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোর মধ্যে নিয়মিত বচসা হচ্ছে। অনেক সউদী নিয়োগকর্তা বাংলাদেশ থেকে কর্মী নিতে অনীহা প্রকাশ করছে। ফকিরাপুল ও নয়া পল্টনস্থ একাধিক রিক্রুটিং এজেন্সির মালিক নাম প্রকাশ না করার শর্তে এ তথ্য জানিয়েছে। গত চার মাস আগে সউদী দূতাবাস কর্তৃপক্ষ কিছু দিন প্রত্যেক সপ্তাহে রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোকে চল্লিশ থেকে পঞ্চাশটি পাসপোর্টে ভিসা স্ট্যাম্পিং করে সরবরাহ করেছিল।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সউদী দূতাবাস কর্তৃপক্ষ অনুমোদিত রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোকে প্রত্যেক সপ্তাহে ত্রিশটি পাসপোর্ট জমা দেয়ার বিধান চালু রেখেছে। রিক্রুটিং এজেন্সিগুলো ভিসা স্ট্যাম্পিং দ্রুত পাওয়ার জন্য অনলাইন প্রক্রিয়ার সকল কার্যক্রম সম্পন্ন করে পাসপোর্ট দূতাবাসে জমা দেয়। এ অবস্থায় মাত্র এক মিনিটেই একটি পাসপোর্টে ভিসা স্ট্যাম্পিং করে দেয়া সম্ভব। দূতাবাস প্রতি সপ্তাহে একটি রিক্রুটিং এজেন্সিকে মাত্র ১৩ থেকে ১৫টি পাসপোর্টে ভিসা স্ট্যাম্পিং করে বাকি পাসপোর্ট কোনো কারণ ছাড়াই ফেরত দিচ্ছে। এতে অনেক সউদীগামী কর্মীর স্বাস্থ্য পরীক্ষার মেয়াদ শেষ হয়ে যাচ্ছে। ফলে বাধ্য হয়েই দ্বিতীয় দফায় অতিরিক্ত দশ হাজার টাকা ব্যয় করে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে পুনরায় ভিসার জন্য দূতাবাসে পাসপোর্ট জমা দিতে হচ্ছে। কিন্তু কী কারণে দূতাবাসে জমাকৃত ত্রিশটি পাসপোর্টে ভিসা ইস্যু করা হচ্ছে না তা বোধগম্য নয়। এ নিয়ে ভুক্তভোগী রিক্রুটিং এজেন্সির মালিক ও বায়রার সাবেক নেতৃবৃন্দ দূতাবাস থেকে কম ভিসা ইস্যু এবং জমাকৃত পাসপোর্ট ভিসা না লাগিয়ে ফেরত দেয়ার বিষয়টি নিয়ে দূতাবাসের সাথে আলোচনা করে সৃষ্ট সঙ্কট নিরসনের জন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেও কোনো সুরাহা পাননি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন