বাগেরহাটের ফকিরহাটে সমলয় পদ্ধতিতে উচ্চ ফলনশীল জাতের বোরো ধান চাষাবাদে চারা রোপন শুরু হয়েছে। এই পদ্ধতিতে চারা উৎপাদন থেকে শুরু করে ফসল ঘরে তোলা পর্যন্ত ব্যবহার করা হয় আধুনিক যন্ত্রপাতি। প্রতিকূল আবহাওয়া থেকে ফসল রক্ষা, সেচ ও সার ব্যবহারে রয়েছে আধুনিক সব পদ্ধতি। ফলে সময় শ্রমিক এবং উৎপাদন খরচ সাশ্রয়ী হবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সরকার যখন ফসলের মাঠে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়াতে চেষ্টা করছে, তখন ধান চাষ পদ্ধতি পাল্টে দেয়ার স্বপ্ন দেখাচ্ছে সমলয় নামে একটি উদ্যোগ। সমলয়ে বিশেষ পদ্ধতিতে মাটি প্রস্তুত করে ট্রেতে করে বীজতলা তৈরি এবং পরম যত্নে মাত্র ২২ দিনেই রোপনের উপযোগী চারা প্রস্তুত করা হয়। কৃষি কর্মকর্তাদের তাকে প্রত্যক্ষ নজরদারি।
ফকিরহাট উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, সমলয় পদ্ধতি অনুসরণ করে এবছর উচ্চ ফলনশীল জাতের বোরো ধান চাষাবাদ করছেন। বাগেরহাটের ফকিরহাট উপজেলার লখপুর ইউনিয়নের খাজুরা এলাকার ৪০ জন কৃষক। এজন্য ৫০ একর জমিতে গড়ে তোলা হয়েছে সমলয় চাষাবাদ স্কীম। কৃষি যান্ত্রিকীকরণ জোরদার করতে এই উদ্যোগ। কৃষি প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় কৃষকের জমি এবং সেচের খরচ বাদে ধানের বীজতলা তৈরি থেকে শুরু করে সমুদয় ব্যয় বহন করছে সরকার। এই পদ্ধতিতে যন্ত্রের সাহায্যে স্বল্প খরচে ধান রোপন থেকে শুরু করে ধান ঘরে তোলা যাবে। এতে কৃষকরা লাভবান হবে।
ফকিরহাট উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. নাছরুল মিল্লাত জানান, কৃষিবান্ধব সরকারের এই মহতি উদ্যোগকে সফল করছে তিনিসহ উপজেলা কৃষি অফিসের সকল কর্মকর্তা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। একই সাথে জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ের কৃষি কর্মকর্তারা সার্বক্ষণিক নজরদারিতে রেখেছেন।
খাজুরা এলাকার কৃষক এরশাদ আলী জানান, কৃষি খামার করতে সবচেয়ে বড় অসুবিধা শ্রমিক সঙ্কট। জনপ্রতি প্রতিদিন ৭ থেকে ৮শ’ টাকা দিয়েও সময় মতো শ্রমিক পাওয়া যায় না। তাছাড়া শ্রমিকের দাম বেশি হওয়ায় ফসলের উৎপাদন খরচ অনেক বেশি হয়। এজন্য ফসল উৎপাদন করলে অনেক সময় লাভ না হয়ে ক্ষতি হয়। কৃষক মো. মাহবুব শেখ ও কামল হোসেন জানায়, এই এলাকায় যন্ত্রের সাহায্যে ধান রোপন এই প্রথম। সল্প সময়ে কম খরচে ম্যাশিন দিয়ে ধান রোপন দেখে তাদের মত অনেক কৃষক এটি ব্যবহারে আগ্রহী হয়েছেন।
বাগেরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের জেলা প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. মোতাহার হোসেন জানান, সমলয় চাষাবাদ পদ্ধতি হলো একটি নির্দিষ্ট মাঠে একই সময়ে একই জাতের ফসল চাষাবাদের মাধ্যমে ফসলের রোপন ও কর্তনের সময় এবং উৎপাদন খরচ অনেক কম হবে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের খুলনা অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক মো. ফজলুল হক জানান, নতুন প্রযুক্তির সঙ্গে কৃষকদের মেলবন্ধন তৈরি হবে। কৃষি যান্ত্রিকি করণের ফলে সময়, শ্রম ও অর্থের লাঘব হবে। বর্তমান সরকার এই ধরনের অরো অনেক প্রনোদণা দিচ্ছে। এটি তারই একটি অংশ। এই প্রযুক্তিতে চাষাবাদ হলে দেশে কম খরচে নিরাপদ ও বর্ধিত খাদ্য উৎপাদন বলে মনে করেন কৃষিবীদরা।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন