সয়াবিন ও পাম অয়েলের মূল্যবৃদ্ধিতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন দেশের ২৩ বিশিষ্টজন। তারা বলেছেন, নতুন করে ভোজ্যতেল বিশেষত সয়াবিন ও পাম অয়েলের মূল্যবৃদ্ধি সাধারণ মানুষের জীবনকে আরো কষ্টকর করে তুলবে। গতকাল মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে তারা ভোজ্যতেলসহ খাদ্যসামগ্রীর মূল্য নিয়ন্ত্রণের দাবি জানান।
ভোজ্যতেলের দাম বাড়ছে লাগামহীনভাবে। এ নিয়ে চলছে তেলেসমাতি। মন্ত্রণালয় ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে আলোচনা হয় এক রকম, বাজারে চিত্র দেখা যায় আরেক রকম। অজুহাতের অভাব নেই। এক পক্ষ দোষ দিচ্ছে আরেক পক্ষের; মাঝখানে চিঁড়েচ্যাপ্টা হচ্ছে গরিব শীর্ণকায় মানুষ, যাদের শরীরে একটু তেল দরকার। অথচ তারাই এখন বিনা তেলে রান্না করার জোগাড়। গত দুই বছরের ব্যবধানে গ্রাহক পর্যায়ে ভোজ্যতেলের দাম বেড়েছে ৮৭ দশমিক ১৮ শতাংশ। ২০২০ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি বাজারে প্রতি লিটার ভোজ্যতেলের মূল্য ছিল ৭৮ টাকা। দুই বছর পরে ভোক্তাকে এই তেল ক্রয় করতে হচ্ছে ১৪৬ টাকায়। এক বছর আগেও এই তেল বিক্রি হয়েছে ১১২ টাকায়। সরকারি বাণিজ্য সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। এক দিকে নিত্যপণ্যের দামের ঊর্ধ্বগতিতে দিশেহারা নিম্ন আয়সহ নির্ধারিত আয়ের মানুষ। করোনার করুণ এই মুহূর্তে ভোজ্যতেলের দামের এই বাড়াবাড়িতে তারা চোখে অন্ধকার দেখছেন।
২৩ বিশিষ্টজনের বিবৃতি : সয়াবিন ও পাম অয়েলের মূল্যবৃদ্ধিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে দেশের ২৩ বিশিষ্ট নাগরিক বলেছেন, সয়াবিন ও পাম অয়েলের মূল্যবৃদ্ধি সাধারণ মানুষের জীবনকে আরো কষ্টকর করে তুলবে। এক বিবৃতিতে তারা বলেন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত রোববার বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম লিটারে আট টাকা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত দেয়। তাতে বোতলজাত প্রতি লিটার সয়াবিন তেলের দাম হবে ১৬৮ টাকা। আর বোতলজাত পাঁচ লিটার সয়াবিন তেলের দাম হবে ৭৯৫ টাকা। এত দিন ছিল ৭৬০ টাকা। ২০২০ সালের অক্টোবরে পাঁচ লিটার সয়াবিন তেলের দাম ছিল ৫০৫ থেকে ৫১৫ টাকা।
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘প্রায় দুই বছর যাবৎ করোনা পরিস্থিতির কারণে দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ সীমাহীন আর্থিক দুরবস্থায় নিমজ্জিত। করোনাকালে বিপুলসংখ্যক মানুষ কাজ হারিয়েছে, আয় কমেছে অনেকের। এ রকম পরিস্থিতিতে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য, বিশেষ করে খাদ্যসামগ্রীর দাম ক্রমাগত বেড়েই চলেছে। নতুন করে ভোজ্যতেল বিশেষত সাধারণ মানুষ যে তেল ব্যবহার করে সেই সয়াবিন ও পাম অয়েলের মূল্যবৃদ্ধি সাধারণ মানুষের জীবনকে আরো কষ্টকর করে তুলবে।’
বিবৃতিদাতারা বলেন, ‘পরিসংখ্যান বলছে, করোনা মহামারীকালে বিপুল জনগোষ্ঠীর ক্রয়ক্ষমতা হ্রাস পেলেও কোটিপতির সংখ্যা বেড়েছে। ফলে রাষ্ট্র-সমাজ সর্বত্র বৈষম্য ও সামাজিক অস্থিরতা বৃদ্ধির প্রবণতা লক্ষণীয়। সাম্প্রতিক স্থানীয় সরকার নির্বাচনে সহিংসতায় শতাধিক প্রাণহানির ঘটনা এই সঙ্কটের বহিঃপ্রকাশ।’
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন