বরগুনার তালতলীতে সোনাকাটা ইকো পার্কের প্রবেশ খাল পারাপারের জন্য বিকল্প ব্যবস্থা না করে পুরানো ব্রিজ ভেঙে নতুন ব্রিজ নির্মাণ করছে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এতে প্রতিদিন হাজারো পর্যটকসহ স্থানীয় মানুষ খাল পারাপারে চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। পারাপারের জন্য স্থানীয় উদ্যোগে ছোট নৌকার ব্যবস্থা করা হলেও ভোগান্তির কমতি নেই সেখানে। শুধুমাত্র খাল পারাপারে ভোগান্তির জন্য মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন পর্যটকরা। সোনাকাটা টেংরাগিরি পর্যটন এলাকায় পর্যটকদের ভ্রমণ হ্রাস পাওয়ায় সরকার বিশাল অঙ্কের রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এলাকাবাসী ও পর্যটকরা দ্রুত বিকল্প সড়ক নির্মাণের জন্য জোর দাবি জানিয়েছেন।
সুন্দরবনের পর দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম শ্বাসমূলীয় বনাঞ্চল উপজেলার সর্বদক্ষিণের সোনাকাটা ইউনিয়নের টেংরাগিরি বনের দক্ষিণাংশ বঙ্গোপসাগরের কোলঘেঁষে গড়ে ওঠা প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি সম্ভাবনাময় পর্যটন কেন্দ্র সোনারচর। বনজ সম্পদে পরিপূর্ণ সমুদ্র তীরে অবস্থিত এ এলাকাটি আনন্দ বিনোদনের জন্য দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রতিনিয়ত আসছে অগণিত পিকনিক পার্টি। পর্যটকদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠছে সোনারচরে অবস্থিত এই ইকোপার্কটি।
অসাধারণ এ পর্যটন স্পটটির চারদিকে সবুজ সারি সারি গাছ। সামনে বিশাল সমুদ্র সৈকত। সৈকতে যেতে হলে একটি খাল পার হয়ে যেতে হয়। এই খালের পুরানো ব্রিজটি ভেঙে নতুন ব্রিজ নির্মাণ করা হচ্ছে দীর্ঘদিন ধরে। কিন্তু ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান পর্যটকসহ স্থানীয়দের চলাচলের জন্য কোন প্রকার বিকল্প ব্যবস্থা করেনি। ৭২ মিটার দৈর্ঘ্যের সেতু নির্মাণ করছে আমির ইঞ্জিনিয়ারিং নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। কাজ শুরুর দিকে আগের পুরোনো সেতুটি ভেঙে ফেলে তারা।
বিকল্প যোগাযোগ ব্যবস্থা তৈরি না করায় টেংরাগিরি ইকোপার্কের সোনাকাটা সমুদ্রসৈকতে হাজার হাজার মানুষের চলাচলে অবর্ণনীয় সমস্যা হচ্ছে। একমাত্র পারাপারের সমস্যার কারণে টেংরাগিরি ইকোপার্ক সমুদ্রসৈকত পর্যটকশূন্য হয়ে পড়তে পারে বলে সচেতন মহল মনে করছেন। শুধুমাত্র একটা খেয়ার জন্যই বনবিভাগ প্রতিদিন হারাচ্ছে বিশাল অঙ্কের রাজস্ব।
টেংরাগিরি ইকোপার্কের সমুদ্র সৈকত প্রবেশপথে নির্মাণাধীন ব্রিজটির কাছে গিয়ে দেখা যায়, অর্ধশতাধিক পর্যটক খেয়া পারাপারের জন্য অপেক্ষা করছে। খেয়া পারাপারে নৌকাটিতে ধারণক্ষমতার তিন চার গুণ বেশি লোক পার হচ্ছে। অসংখ্য পর্যটককে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয় খেয়া পারাপারের জন্য। একাধিক পর্যটক জানান, এখানে ঘুরতে এসে ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে। বনের ভেতর যেতে হলে একটি নদী পার হতে হয়। কিন্তু এখন পর্যন্ত ব্রিজ নির্মাণ না করার ফলে পর্যটকরা নিরুৎসাহিত হয়ে ইকো পার্কে প্রবেশ না করে অধিকাংশ ফিরে যাচ্ছে।
তালতলী উপজেলার রেঞ্জ অফিসার মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, ব্রিজ নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠানকে একাধিকবার বলা হলেও ব্রিজ নির্মাণের ক্ষেত্রে কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। ব্রিজ নির্মাণে ধীরগতির কারণে এখানে পর্যটক কমে যাচ্ছে। সরকার হারাচ্ছে প্রচুর রাজস্ব।
তালতলী উপজেলা প্রকৌশলী আহম্মদ আলী বলেন, ওই খালে পানির স্রোত মাত্রাতিরিক্ত থাকায় বিকল্প হিসেবে কোন সাঁকো তৈরি করা সম্ভব হয়নি। এ ব্যাপারে তালতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. কাওছার হোসেন বলেন, এ ব্যাপারে খুব শিগগিরই একটি কার্যকরী একটা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে যাতে পর্যটকরা সোনাকাটা ইকোপার্ক স্বাচ্ছন্দ্যে ভ্রমণ করতে পারেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন