রাজধানীর মুগদা, খিলগাঁও, শাহবাগ ও ওয়ারীতে পৃথক ঘটনায় এক স্কুল শিক্ষার্থীসহ প্রাণ হারিয়েছেন চারজন। গত বুধবার রাতে ও গতকাল বৃহস্পতিবার তাদের লাশ উদ্ধার করা হয়। তাদের মধ্যে মুগদার স্কুল শিক্ষার্থী শান্তা আক্তার, খিলগাঁওয়ের রওশনারা বেগম ও ওয়ারীর অজ্ঞাত এক নারীর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এছাড়া শাহবাগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্মচারী স্টাফ কোয়ার্টারের সামনের রাস্তায় কাভার্ডভ্যানের ধাক্কায় ইয়াসিন নামে এক মোটরসাইকেল আরোহী নিহত হয়েছেন। পরে ময়নাতদন্তের জন্য তাদের লাশ উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়।
মৃত শান্তার দুলাভাই মাসুম বলেন, শান্তা মানিকনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিলো। গত বুধবার গভীর রাতে বাসার সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে গলায় ফাঁস দেয়। পরিবারের লোকজন বিষয়টি টের পেয়ে তাকে উদ্ধার করে মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। তবে কি কারণে সে গলায় ফাঁস দিয়েছে সে বিষয়ে আমরা জানতে পারিনি।
মুগদা থানার এসআই আবুল হোসেন বলেন, শান্তার মা মারা যাওয়ার পরে তার বাবা দ্বিতীয় বিয়ে করেন। তবে পরিবারের কারও সঙ্গে কোন বিষয় নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়নি। সে মোবাইল ফোনও ব্যবহার করত। আত্মহত্যার কারণ সম্পর্কে পরিবারের কেউ কিছু বলতেও পারছে না। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
খিলগাঁও থানার এসআই মোছা. সনিয়া পারভীন বলেন, গত বুধবার রাতে ৯৯৯ থেকে কল পেয়ে খিলগাঁও কবরস্থানের একটি গাছের ডালে রশি দিয়ে গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় রওশনারার ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করি। প্রাথমিকভাবে তার স্বজনদের কাছে জানতে পেরেছি, দীর্ঘদিন ধরে মানসিক সমস্যায় ভুগছিলেন তিনি। সে কারণে আত্মহত্যা করতে পারেন। তবে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে সঠিক কারণ জানা যাবে। মৃতের ছেলে সজীব বলেন, তার মা প্রায় ১০-১২ বছর ধরে মানসিক সমস্যায় ভুগছিলেন। বুধবার রাতে তিনি বাসা থেকে বের হয়ে যান। পরে খবর পান, তার মা আত্মহত্যা করেছে।
এদিকে, ওয়ারী ওয়ান্ডারল্যান্ড পার্কের প্রথম গেটের ভেতর থেকে অজ্ঞাতনামা এক নারীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। ওয়ারী থানার এসআই মো. শাহজাহান মিয়া বলেন, ওই নারী ভবঘুরে ছিলেন বলে এলাকার লোকজন জানিয়েছেন। ওই পার্কেই তিনি থাকতেন, সেখানেই ঘুমাতেন। ধারণা করা হচ্ছে, অসুস্থজনিত কারণে তার মৃত্যু হয়েছে। তবে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে সঠিক কারণ জানা যাবে।
অপরদিকে, গতকাল বিকেল ৩টার দিকে নীলক্ষেত ও পলাশীর মাঝামাঝি এলাকায় কাভার্ডভ্যানের ধাক্কায় ইয়াসিন নামে এক মোটরসাইকেলের এক আরোহী নিহত হয়েছেন। নিহতের মামা মুরাদ হোসেন জানান, নিহত ইয়াসিন লক্ষ্মীপুর চন্দ্রগঞ্জ উপজেলার মৃত আবুল কেরামতের ছেলে। জিগাতলা সরকারি কলোনির পাশে একটি ভাড়া বাসায় থাকতেন। একটি ফুড ডেলিভারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতেন। দুর্ঘটনার খবর পেয়ে তিনি ঢামেক হাসপাতালে ছুটে আসেন।
শাহবাগ থানার এসআই কাউসার আহমেদ ভূঁইয়া জানান, ইয়াসিন বাইক চালিয়ে নীলক্ষেত থেকে পলাশীর দিকে যাচ্ছিলেন। এসময় পেছন থেকে একটি কাভার্ডভ্যান তাকে ধাক্কা দেয়। এতে গুরুতর আহত হন ইয়াসিন। তাৎক্ষণিকভাবে ওই কাভার্ডভ্যানের চালক তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে তার মৃত্যু হয়। কাভার্ডভ্যান চালক মানিক মিয়াকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয়েছে।
হাসপাতালে অভিযুক্ত কাভার্ডভ্যান চালক মানিক মিয়া বলেন, একটি রিকশাকে ওভারটেক করছিল মোটরসাইকেল আরোহী ইয়াসিন। তখন রিকশার সঙ্গে ধাক্কা লেগে মোটরসাইকেল রাস্তায় পড়ে যায়। এরপর তার গাড়ির সঙ্গে ধাক্কা লাগে। পরে তিনি গাড়ি থামিয়ে আহতাবস্থায় ইয়াসিনকে হাসপাতাল নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন