প্রখ্যাত সাংবাদিক রিয়াজ উদ্দিন আহমেদসহ সদ্য প্রয়াত সাংবাদিক শামছুল আলম বেলাল ও পীর হাবিবুর রহমান স্মরণে দোয়া মাহফিল ও আলোচনা সভা করেছে নিউইয়র্ক বাংলাদেশ প্রেসক্লাব। গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নিউইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসস্থ নবান্ন পার্টি সেন্টারে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে বক্তারা মরহুম সাংবাদিকদের দেশের সাহসী সাংবাদিক হিসেবে উল্লেখ করে জনগণের কল্যাণে মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে সমন্নুত রাখতে দেশ ও প্রবাসের সাংবাদিকদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
নিউইয়র্ক বাংলাদেশ প্রেসক্লাবের সভাপতি এবং সাপ্তাহিক বাংলা পত্রিকার সম্পাদক ও টাইম টেলিভিশনের সিইও আবু তাহেরের সভপতিত্বে আয়োজিত অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত ও বিশেষ দোয়া- মুনাজাত পরিচালনা করেন প্রেসক্লাবের কোষাধ্যক্ষ ও ইয়র্ক বাংলা সম্পাদক রশিদ আহমদ।
প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ও আজকালের বিশেষ প্রতিনিধি মনোয়ারুল ইসলামের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আলোচনায় অংশ নেন ঢাকাস্থ জাতীয় প্রেসক্লাব ও বিএফইউজের সাবেক ভরপ্রাপ্ত সভাপতি এবং আজকালের প্রধান সম্পাদক মনজুর আহমদ, নিউইয়র্ক বাংলাদেশ প্রেসক্লাবের অন্যতম উপদেষ্টা মঈনুদ্দীন নাসের, প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ও সাপ্তাহিক বাংলাদেশ সম্পাদক ডা. ওয়াজেদ এ খান, সাবেক সভাপতি ও বর্ণমালা.কম সম্পাদক মাহফুজুর রহমান, সাপ্তাহিক জন্মভ‚মি সম্পাদক রতন তালুকদার, প্রথম আলো নিউইয়র্কের সম্পাদক ইব্রাহিম চৌধুরী খোকন, সাপ্তাহিক প্রবাস সম্পাদক মোহাম্মদ সাঈদ, বিশিষ্ট কলামিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা আবু জাফর মাহমুদ, সিনিয়র সাংবাদিক মাইন উদ্দিন আহমেদ ও আবু নাসের চৌধুরী, বিশিষ্ট সাংবাদিক আকবর হায়দার কিরন, জেবিবিএর একাংশের সভাপতি ও মূলধারার রাজনীতিক গিয়াস আহমেদ, কমিউনিটি অ্যাক্টিভিস্ট কাজী আশরাফ হোসেন নয়ন ও মিনহাজ আহমেদ, বিএমএ নিউইয়র্কের ইয়াং ফিজিশিয়ান সেক্রেটারি ডা. বর্নালী হাসান, প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সাপ্তাহিক হককথা সম্পাদক এবিএম সালাহউদ্দিন আহমেদ, সাপ্তাহিক মুক্তচিন্তা সম্পাদক ফরিদ আলম, এনসিএন টিভি’র বার্তা প্রধান আবিদুর রহিম, প্রেসক্লাবের সহ সাধারণ সম্পাদক মমিনুল ইসলাম মজুমদার, সাংগঠনিক সম্পাদক ও ইন্ডিপেনডেন্ট টেলিভিশন যুক্তরাষ্ট্র প্রতিনিধি এসএম সোলায়মান, ফটো সাংবাদিক নিহার সিদ্দিকী, বিশিষ্ট লেখক-সাংবাদিক মাহবুব রহমান, সৈয়দ সুজাত আলী, ইশতিয়াক আহমেদ রুপু, রওশন হক, শেলী জামান খান, সাপ্তাহিক আজকালের ব্যবস্থাপক আবু বকর সিদ্দিক প্রমুখ। অনুষ্ঠানে ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক তোফাজ্জল লিটন ও আজকালের নজরুল ইসলামসহ আরো অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, মরহুম রিয়াজ আহমেদ ছিলেন যেকোন সাংবাদিকেন জন্য ‘আইকন’। ছিলেন আপাদমস্তক সাংবাদিক, আচার-ব্যবহার আর কথাবার্তায় ছিলেন অমায়িক। ছিলেন অনুস্মরণীয়, অনুকরণীয় মানুষ। লোভ-লালসার উর্ধ্বে। তিনি জাতীয় প্রেসক্লাব, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) এবং ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে)-এর শীর্ষ পদে একাধিকবার নির্বাচিত হয়ে নেতৃত্ব দিয়েছেন। কিন্তু কোনদিন কোন লোভ লালসার কাছে মাথা নত করেননি। রিয়াজ উদ্দিন আহমেদের সিদ্ধান্তেই স্বৈরাচারী এরশাদের পতন না হওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশে ১১ দিন সংবাদপত্র প্রকাশ বন্ধ ছিলো। কোন হুমকি-ধামকি তাকে টলাতে পারেনি।
সাংবাদিক শামছুল আলম বেলাল সম্পর্কে বক্তারা বলেন, একজন ভালো ও সাহসী সাংবাদিক হিসেবে তার পরিচিতি ছিলো সর্বমহলে। তাকে নিয়ে সাংবাদিকরা গর্ব করতে পারেন।
সাংবাদিক পীর হাবিবুর রহমান সম্পর্কে বক্তারা বলেন, পীর হাবিব হতে চেয়েছিলেন রাজনীতিক, হলেন সাংবাদিক-কলামিস্ট। তিনি ছিলেন সৎ ও সাহসী সাংবাদিক। সত্য প্রকাশে ছিলেন নির্ভিক। ব্যক্তি জীবনে ছিলেন আড্ডাপ্রিয় মানুষ। লেখালেখিতে আওয়ামী লীগ-বিএনপি, জাতীয় পার্টির সমালোচনা করেছেন অকপটে।
বক্তারা বলেন, জন্মের পর মৃত্যু অবধারিত থাকলেও রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ, শামছুল আলম বেলাল ও পীর হাবিবুর রহমান অসময়েই চলে গেলেন। তাঁদের মৃত্যুতে পেশাগত সাংবাদিকতায় অপূরণীয় ক্ষতি হলো। বক্তারা তাদের রুহের মাগফিরাত কামনা করেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন