অগ্রণী ব্যাংক রাজধানীর মতিঝিলের বি-ওয়াপদা শাখার সিনিয়র অফিসার নজরুল ইসলামের সন্ধান মিলেনি। নিখোঁজের ৩৫ দিন পর্যন্ত পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থা তন্নতন্ন করে খুঁজেও কোন কুল কিনারা করতে পারেনি। তাকে কেউ ধরে নিয়ে গেছে, নাকি তিনি নিজেই আত্মগোপন করেছেন, নাকি তিনি আত্মহত্যা করেছেন- এসব প্রশ্নের কোন উত্তর মিলছে না পুলিশের কাছে।
এক মাসের বেশি সময় ধরে ব্যাংক কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম নিখোঁজ। রাজধানীর উত্তরখান এলাকায় নিজের বাড়ির ভাড়া তুলতে গিয়ে তিনি নিখোঁজ হন। নজরুল ইসলাম অগ্রণী ব্যাংকের মতিঝিলের বি-ওয়াপদা শাখার সিনিয়র অফিসার। তার নিখোঁজের ঘটনায় উত্তরখান থানায় তার স্ত্রী রুবিনা নজরুল একটি জিডি করেছেন। পুলিশ জানিয়েছে, নিখোঁজ নজরুল ইসলাম একজন অতিরিক্ত আইজিপি’র ছোট ভগ্নিপতি।
গত ৭ জানুয়ারি শুক্রবার জুম্মার নামাজের পর উত্তরখানে নিজের বাড়ির ভাড়া তোলার জন্য নজরুল ইসলাম যাত্রাবাড়ী থানাধীন শনির আখড়ার ভাড়া বাসা থেকে বের হন। এরপর থেকে আর তাকে খুঁজে পাওয়া যায়নি।
নিখোঁজের স্ত্রী রুবিনা নজরুল বলেন, নজরুল ৭ জানুয়ারি দুপুরে উত্তরখানের বাড়ির ভাড়া তোলার কথা বলে শনির আখড়ার বাসা থেকে বের হন। তার ব্যবহৃত দুটি মোবাইলের একটি তিনি সঙ্গে নিয়ে যান। তবে সেটিও রাতে বন্ধ হয়েছিল। তার মোবাইল এরকম প্রায়ই বন্ধ থাকে। ওইদিন সন্ধ্যা গড়িয়ে রাত গভীর হয়ে যায় তিনি আসেন না। আমি তার নম্বরে কয়েকবার ফোন দিয়েও নম্বর বন্ধ পাই। এরপর সকল আত্মীয়-স্বজনকে বিষয়টি জানাই। তারাও কেউ খোঁজ দিতে পারছিল না।
নিখোঁজের ঘটনার দুই দিন পর রুবিনা নজরুল ৯ জানুয়ারি উত্তরখান থানায় এবিষয়ে একটি জিডি করেন। রুবিনা ও নজরুল দম্পতির দুই ছেলে। তাদের বড় ছেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর করেছেন। ছোট ছেলে পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী। গ্রামের বাড়ি বরগুনার বেতাগী উপজেলায়।
ঘটনার পর উত্তরখান ও যাত্রাবাড়ী থানার পুলিশ যৌথভাবে ঘটনাটির তদন্ত শুরু করেন। তবে থানা পুলিশ তার কোনো হদিস মেলাতে পারেননি।
পুলিশের তদন্তের সঙ্গে ডিবি, কাউন্টার টেরোরিজম এ্যান্ড ট্রান্স ন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট(সিটিটিসি), পিবিআই, র্যাবের গোয়েন্দা ইউনিট ও আরেকটি শীর্ষ গোয়েন্দা সংস্থা তদন্তে নামে।
উত্তরখান থানার ওসি আব্দুল মজিদ বলেন, আমরা উত্তরখান এলাকার সকল সিসি ক্যামেরার ফুটেজ চেক করেছি, কোথাও তার উপস্থিতি মেলেনি। এই এলাকায় তিনি আসেননি। তার মোবাইলের কথোপকথন চেক করা হয়েছে। তাতেও কিছু মেলেনি। সাম্প্রতিক সময়ে তার কোনো টাকা পয়সার লেনদেনেরও খবর পাওয়া যায়নি। কেউ মুক্তিপণ চেয়েও ফোন দেয়নি। নজরুল ইসলাম ব্যাংকের চাকরির পাশাপাশি উত্তরখান ও তুরাগ এলাকায় টুকটাক জমির ব্যবসা করতেন। জমির ব্যবসা করলেও তার সঙ্গে কারো বিরোধের তথ্য মিলেনি।
ওসি আরো বলেন, শনিরআখড়ার বাসা থেকে বন্ধ মোবাইল নিয়ে বের হওয়ায় তার সর্বশেষ লোকেশন ওই এলাকাতেই দেখাচ্ছে। এরপর মোবাইলটি আর ব্যবহৃত হয়নি। তিনি দেশের বাইরে গেছে কিনা, তা তল্লাশির জন্য ইমিগ্রেশন পুলিশকে চিঠি দিয়েছে উত্তরখান থানা পুলিশ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন