সুন্দরবন বিষয়ক পৃথক মন্ত্রণালয় ও রাষ্ট্রীয়ভাবে ১৪ ফেব্রুয়ারি সুন্দরবন দিবস পালনের দাবি জানানো হয়েছে। আজ সোমবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) সুন্দরবন দিবস উপলক্ষে আয়োজিত ভার্চ্যুয়াল সভায় বক্তারা এ দাবি জানান।
এ সময় তারা বলেন, সুন্দরবনের সুরক্ষায় এ বনের ওপর নির্ভরশীল দরিদ্র জনগোষ্ঠীর বিকল্প কর্মসংস্থানের জন্য রাষ্ট্রীয় পদক্ষেপ দরকার। দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় অঞ্চলের বিপুল জনগোষ্ঠীর জীবন রক্ষায় সুন্দরবনকে বাঁচিয়ে রাখা জরুরি। আর এজন্য সুন্দরবনে প্রবেশাধিকার আরও সংরক্ষিত হওয়া দরকার। দুবলার চরে শুঁটকি মাছের প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল হিসেবে রাখা হবে কিনা তা নতুন করে ভাববার সময় এসেছে।
সুন্দরবন একাডেমির উদ্যোগে উপকূলীয় জেলা খুলনা, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা, বরগুনা, পিরোজপুর ও রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের সুন্দরবনপ্রেমীদের অংশগ্রহণে ভার্চ্যুয়াল প্ল্যাটফর্মে এ আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। প্রায় পৌনে তিন ঘণ্টা স্থায়ী এ সভাটি শুরু হয় বেলা ১১টায়। সুন্দরবন একাডেমির নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক আনোয়ারুল কাদিরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় সঞ্চালনা করেন সুন্দরবন একাডেমির উপদেষ্টা ও রূপান্তরের নির্বাহী পরিচালক রফিকুল ইসলাম খোকন। সূচনা বক্তব্য রাখেন সুন্দরবন একাডেমির পরিচালক ফারুক আহমেদ। প্রায় ৭০ জন সুন্দরবনপ্রেমী এ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন।
সভায় বক্তব্য রাখেন সুন্দরবন গবেষক অধ্যাপক ড. দিলীপ কুমার দত্ত। সুন্দরবন সন্নিহিত এলাকার সাংবাদিক নেতাদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- পিরোজপুরের মুনীরুজ্জামান নাসিম আলী, সাতক্ষীরার কল্যাণ ব্যানার্জী, বাগেরহাটের আহাদ উদ্দিন হায়দার, মোংলার নূর আলম শেখ, সাতক্ষীরার মোহাম্মদ আলী সুজন, শরণখোলার ইসমাইল হোসেন লিটন, পিরোজপুরের তানভীর আহমেদ, বাগেরহাটের নারীনেত্রী খালেদা হেনা।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন- বাপার সাধারণ সম্পাদক শরীফ জামিল, কারিতাসের ড. সুমন কুমার মালাকার, শ্যামনগরের সামসের নির্বাহী পরিচালক কৃষ্ণপদ মুণ্ডা, বাগেরহাটের মুখার্জী রবীন্দ্রনাথ, বরগুনার জাগো নারীর হোসনেয়ারা হাসি, ডিউক ইবনে আমিন, চট্টগ্রামের মধু গবেষক সৈয়দ মো. মঈনুল আনোয়ার, রংপুর থেকে মিজানুর রহমান, হাফিজুর রহমান মাসুম প্রমুখ।
অতিমারি করোনার ফলে চলমান নিষেধাজ্ঞার কারণে গতবারের মতো এবারও সীমিতভাবে দিবসটি পালিত হয়। বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবনের জীববৈচিত্র রক্ষা ও অনন্য সুন্দর প্রাকৃতিক এ সম্পদ সংরক্ষণে দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে সুন্দরবন একাডেমির আয়োজনে খুলনাসহ সুন্দরবন সন্নিহিত জেলাসমূহে বেসরকারিভাবে সুন্দরবন দিবসের নানাবিধ কর্মসূচি পালিত হয়ে আসছে। দেশের সামগ্রিক পরিবেশসহ উপকূলীয় অঞ্চলের পরিবেশ এবং সুন্দরবন নির্ভর মানুষের জীবিকা ও জীবন রক্ষায় সুন্দরবনের অসাধারণ ভূমিকা প্রশ্নাতীত। এবারের আলোচনা সভার মুখ্য বিষয় নির্ধারিত ছিল- ‘সুন্দরবনের ওপর নির্ভরশীল দরিদ্র জনগোষ্ঠীর বিকল্প কর্মসংস্থান।
এদিকে, আজ ১৪ ফেব্রুয়ারি বেলা ১১টায় খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে সুন্দরবন দিবস উপলক্ষ্যে ফরেস্ট্রি এন্ড উড টেকনোলজি ক্লাবের উদ্যোগে শোভাযাত্রা বের হয়। শোভাযাত্রাটি আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু একাডেমিক ভবনের সামনে থেকে শুরু হয়ে শহিদ তাজউদ্দীন আহমদ ভবনের সামনে দিয়ে হাদী চত্ত্বরে গিয়ে শেষ হয়। শোভাযাত্রা শেষে সেখানে দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে বক্তব্য রাখেন ডিসিপ্লিনের শিক্ষক প্রফেসর এ কে ফজলুল হক। এসময় ডিসিপ্লিনের শিক্ষক ও ক্লাবের সদস্য শিক্ষার্থীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন