বুধবার, ১৫ মে ২০২৪, ০১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ০৬ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

কুয়াকাটায় বিমানবন্দর স্থাপিত হলে দেশী-বিদেশী পর্যটকে মুখরিত হবে সমুদ্র সৈকত

কলাপাড়া(পটুয়াখালী) প্রতিনিধি | প্রকাশের সময় : ১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ১১:৫৮ এএম

সাগরকন্যা কুয়াকাটা প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অপরূপ লিলাভূমি, দীর্ঘ ১৮ কিলোমিটার সমুদ্র সৈকত। দেশের পর্যটন কেন্দ্রগুলোর মধ্যে সমুদ্র সৈকত কুয়াকাটা অন্যতম একটি পর্যটন কেন্দ্র। ইতোমধ্যেই বিশ্বব্যাপী সুখ্যাতি অর্জন করেছে সাগরকন্যা খ্যাত কুয়াকাটা। সমুদ্রের গর্জন, উত্তাল ঢেউ, সূর্যোদয়-সূর্যাস্ত, দীর্ঘতম সৈকত দেশী-বিদেশী ভ্রমণ পিপাসু দর্শনার্থীদের কাছে টানে সবসময়। কিন্তু আন্তর্জাতিক মানের এ পর্যটন কেন্দ্রে বিমানবন্দর না থাকায় দেশী-বিদেশী ভিআইপি পর্যটক আসছেন না এমনটাই দাবী করেছেন পর্যটন নির্ভর প্রতিষ্ঠান, সংগঠন, ব্যবসায়ীসহ ভ্রমণ পিপাসু পর্যটকরা।

সমুদ্রের বিশালতায় বিশাল সম্ভাবনাময় পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটা। যার ডাকে সায় দিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছুটে আসেন পর্যটকরা। প্রকৃতির অপার সৌন্দর্যের আকর্ষণে বার বার ছুটে আসে সৌন্দর্যলোভী পর্যটকরা। বিশেষ করে পুঞ্জিকার পাতার ছুটির দিনে ব্যাপক পর্যটকদের চাপ থাকে এখানে। মৌসুমের সময় আবাসিক হোটেলগুলোর ধারণ ক্ষমতার চেয়ে কয়েকগুন বেশী পর্যটক আসেন। একবার আসলেই প্রকৃতির অপার সৌন্দর্যের লীলাভূমি কুয়াকাটার প্রেমে পড়ে যে কেউ। বার বার বেড়াতে আসার জন্য মন ব্যাকুল হয়ে ওঠে। তাই সুযোগ হলেই ভ্রমণ পিপাসুরা ছুটে আসেন সাগরকন্যা কুয়াকাটায়। কুয়াকাটা আজ সারা বিশ্বব্যাপী পরিচিত, পর্যটকদের পদভারে মুখরিত কুয়াকাটা পর্যটন কেন্দ্র সুখ্যাতি অর্জন করেছে বিশ্বময়। কিন্তু বিমান বন্দর না থাকার কারণে সমৃদ্ধ হচ্ছে না সূর্যোদয়-সূর্যাস্তের বেলাভূমি কুয়াকাটা এমনই দাবী করছে আগত পর্যটকরা।

পর্যটন সূত্রে জানা যায়, কুয়াকাটাকে পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার উদ্যোগ বহু আগে শুরু হলেও মূলত ১৯৯৮ সাল থেকে এর আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়। সূর্যোদয়-সূর্যাস্তের অপরূপ লীলাভূমি কুয়াকাটা ধীরে ধীরে দেশী-বিদেশী পর্যটকদের কাছে প্রিয় হয়ে ওঠে। পর্যটকদের কেন্দ্র করে ইতোমধ্যে এখানে গড়ে ওঠেছে অসংখ্য আবাসিক হোটেল, খাবার হোটেল, প্রশাসনিক নিরাপত্তা ব্যবস্থাসহ অন্যান্য সুযোগ সুবিধা। সৈকতের কোল ঘেষে রয়েছে বিশাল বনাঞ্চল। পশ্চিম দিকে সুন্দর বনের পূর্বাংশ ফাতরার বন, লেবুর বন, নারিকেল বাগান, ঝাউবাগান, গঙ্গামতি ও কাউয়ার চরের সংরক্ষিত বনাঞ্চল অন্যতম। আগত পর্যটকরা কুয়াকাটায় বেড়াতে এসে আশেপাশের বিভিন্ন পর্যটন ষ্পটগুলো ঘুরে দেখেন। পাশাপাশি সমুদ্রের কোলঘেষা বনাঞ্চল ঘুরে ফিরে ছবি তুলেন। আকাশ পথের সুযোগ না থাকায় দেশের ভিআইপি এবং বাহিরের পর্যটকরা আসছে না বলে জানান ব্যবসায়ীরা।

কুয়াকাটা ট্যুরিস্ট বোর্ড মালিক সমিতির সভাপতি জনী আলমগীর বলেন, কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতকে আধুনিক পর্যটন কেন্দ্রে রূপান্তরিত করতে সরকার মাষ্টারপ্লান প্রস্তুত করেছেন। মাষ্টারপ্লানে বিমান বন্দর আছে। কিন্তু দীর্ঘ বছরেও রহস্যজনক কারনে তা বাস্তবায়ন হচ্ছে না। বিমানবন্দর থাকলে আমরা কক্সবাজারের মতো সারা বছর বিদেশী পর্যটক পেতাম।

সিলেট থেকে ঘুরতে আসা কিশোরী নিলার সাথে কথা হয়। তিনি বলেন, আমি কুয়াকাটায় ২য় বার এসেছি। আমরা অনেকেই সড়ক পথে চলাচল করতে পারি না। সারা পথ বমি করতে করতে এসেছি। বিমানে আসার সুযোগ থাকলে ভাল হতো। খুলনা থেকে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কয়েকজন বন্ধু নিয়ে জাহিদ পারভেজ এসেছেন কুয়াকাটায়। সৈকতে দাঁড়িয়ে কথা হয়েছে তার সাথে। তিনি বলেন, বিমান বন্দর থাকলে খুবই ভালো হতো। আকাশ পথের আনন্দ নিয়ে সৈকতের আনন্দ উপভোগ করতে পারতাম।

কুয়াকাটা ট্যুরিজম ম্যানেজমেন্ট অ্যাসোসিয়েশন (কুটুম) সাধারণ সম্পাদক হোসাইন আমির বলেন, কুয়াকাটার সাথে আকাশ পথের যোগাযোগ ব্যবস্থা না থাকার কারণে প্রধানমন্ত্রীর ঘোষিত আন্তর্জাতিক মানের পর্যটন কেন্দ্রের কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। বিমান বন্দর হলে দেশী-বিদেশী ভিআইপি পর্যটক আসবে। আরো একধাপ এগিয়ে যাবে আমাদের কুয়াকাটা।

আভিজাত হোটেল সিকদার রিসোর্ট এন্ড ভিলাসের জেনারেল ম্যানেজার আল-আমিন বলেন, কুয়াকাটায় বিদেশী পর্যটকদের সেবা দেওয়ার মতো অনেকগুলো হোটেল আছে। কিন্তু বিমান বন্দর না থাকার কারণে দেশের বাহিরের পর্যটকরা খুব একটা আসছেন না।

টুরিষ্ট পুলিশ কুয়াকাটা জোনের সহকারী পুলিশ মো: আব্দুল খালেক বলেন, দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সমুদ্র সৈকত কুয়াকাটা। এখানে সড়ক পথের যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো হলেও আকাশ পথের ব্যবস্থা নেই। যার কারণে দেশের ভিআইপি ও বিদেশী পর্যটকের সংখ্যা খুবই কম। বিমান বন্দর হলে বিদেশী পর্যটকদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে।

কুয়াকাটা পৌরসভার মেয়র মো: আনোয়ার হাওলাদার বলেন, কুয়াকাটা পর্যটক কেন্দ্রকে আরও সমৃদ্ধ করার জন্য বিমান বন্দর খুবই জরুরী। বিমান বন্দর না থাকার কারণে বিদেশী পর্যটক আসছে না। বিদেশী পর্যটক আনতে হলে দ্রæত সময়ের মধ্যে আকাশ পথের ব্যবস্থা করা অতীব জরূরী বলে দাবী করে তিনি প্রধানমন্ত্রীর সু-দৃষ্টি কামনা করেন।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন