পঞ্চগড় সদর উপজেলার ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জগদল দ্বিমূখী উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা ৩ মাস ধরে বন্ধ রয়েছে। ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অবসরে যাওয়ায় পর ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বভার গ্রহণ নিয়ে সহকারী প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষকের দ্বন্দ্বে শিক্ষক কর্মচারীদের বেতন-ভাতা বন্ধ রয়েছে।
বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, প্রধান শিক্ষক মো. আনারুল হক গত বছরের ৯ নভেম্বর অবসর গ্রহণ করেন। প্রধান শিক্ষক ১০ নভেম্বর থেকে সহকারী প্রধান শিক্ষক ছাদেকুল ইসলামকে লিখিতভাবে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বভার প্রদান করেন। ২০ নভেম্বর বিদ্যালয় পরিচালনা এডহক কমিটির সভাপতি তহিদুল ইসলাম তার মনোনীত ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ও সাঙ্গ-পাঙ্গ নিয়ে প্রধান শিক্ষকের আসনে বসা ছাদেকুল ইসলামকে বের করে দিয়ে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে গোলাম মোস্তফাকে বসিয়ে দেন। ২৪ নভেম্বর জেলা প্রশাসক বরাবর ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক অবৈধভাবে দায়িত্বভার প্রদান প্রসঙ্গে একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়। পরে সভাপতি শিক্ষক ছাদেকুল ইসলামকে ৯ দিনে পরপর তিনবার কারণ দর্শানোর নোটিশ করেন। কমিটি তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করে আদেশ নির্দেশ অমান্য করায় এবং শৃঙ্খলা ভঙ্গের প্রমাণ পাওয়ায় শিক্ষক ছাদেকুল ইসলামকে চাকরি হতে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
এ বিষয়ে ছাদেকুল ইসলাম জানান, একযোগে তিনটি কারণ দর্শানোর নোটিশ ও একটি অফিস আদেশের কপি একই খামে পাই। আমি নোটিশের জবাব আর কি দিব। তিনি আরও বলেন, ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বে আমি থাকলে বিদ্যালয়ের ৬২টি দোকানঘর থেকে প্রতিমাসে যে আয় হয় সেটা লুটেপুটে খেতে পারবে না বিধায় আমাকে সরানোর এতো অপচেষ্টা সভাপতির।
বিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মচারীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বভার নিয়ে সহকারী প্রধান ও জেষ্ঠ্য শিক্ষকের দ্বন্দ্বে ৩ মাস ধরে বেতন-ভাতা পাচ্ছেন না। পরিবারের খরচ কোনোভাবেই মেটানো সম্ভব হচ্ছে না। বেতন বন্ধ হওয়ায় আমরা খুব কষ্টে আছি। ফলে ধার-দেনা করে আমাদের সংসার চালাতে হচ্ছে।
বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক আনারুল হক জানান, যেদিন থেকে অবসর নিয়েছি তারপরের দিন থেকে লিখিতভাবে সহকারী প্রধান শিক্ষক ছাদেকুল ইসলামকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছে।
বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি তহিদুল ইসলাম জানান, সহকারী প্রধান শিক্ষক ছাদেকুল ইসলাম শৃঙ্খলা ভঙ্গসহ বেশকিছু অসদাচরণের জন্য তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। পরে জেষ্ঠ্যতার ভিত্তিতে সহকারী শিক্ষক গোলাম মোস্তফাকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছে। বেতন শিটে জটিলতায় বেতন-ভাতা বন্ধ রয়েছে। তবে কিছু দিনের মধ্যে ঠিক হয়েছে যাবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন