শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

সাভারে টিকা নিতে উপচেপড়া ভিড়

স্টাফ রিপোর্টার, সাভার থেকে : | প্রকাশের সময় : ২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ১২:১২ এএম

আগামী ২৬ ফেব্রুয়ারি শেষ হচ্ছে করোনাভাইরাসের প্রথম ডোজের টিকা প্রদান এই ঘোষণা জানার পর থেকেই সাভার টিকা কেন্দ্রে উপচেপড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁড়িয়ে থাকার পর শুরু হয় হট্টগোল। এ সময় টিকা নিতে আসা লোকজন বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে লাঠিপেটা শুরু করে পুলিশ ও স্বেচ্ছাসেবকরা। এ ঘটনায় স্বাস্থ্যকর্মীসহ আহত হয়েছে অন্তত ১৫। তবে লাইনে অতিরিক্ত মানুষের চাপে সামাজিক দূরত্বের বালাই না থাকায় বাড়াচ্ছে সংক্রমণের শঙ্কা। নেই কোনো স্বাস্থ্যবিধি।
গতকাল বুধবার দ্বিতীয় দিন নির্ধারিত সময় সকাল ৮টা থেকে টিকা দেওয়ার কথা থাকলেও ভোর চারটা থেকেই সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পাশে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব হেলথ ম্যানেজমেন্ট (বিআইএইচএম) কেন্দ্রে ভিড় করতে থাকেন হাজার হাজার মানুষ। যাদের অধিকাংশই গার্মেন্টস শ্রমিক।
করোনাভাইরাসের টিকা নিতে আসা সাধারণ মানুষের অভিযোগ, টিকা নিতে ভোর থেকেই কেন্দ্রের সামনে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়েছেন তারা। কিন্তু দুপুর গড়িয়ে গেলেও ভিড়ের কারণে তারা টিকা নিতে পারেননি। এসময় প্রচন্ড গরম ও মানুষের ভিড়, হুড়োহুড়ি ও লাঠিপেটায় আহত হয়েছে অনেকেই। মেয়েদের গায়ের ওড়না, পায়ের স্যান্ডেল, মোবাইল ও মানিব্যাগসহ মূল্যবান জিনিস খুইয়েছেন টিকা নিতে আসা অনেকেই। কর্তৃপক্ষের শৃঙ্খলা না থাকায় এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
টিকা প্রত্যাশী আমেনা বেগম জানান, ঘণ্টার পর ঘন্টা লাইনে দাঁড়িয়ে আছি। হুড়োহুড়ি ধাক্কা ধাক্কিতো আছেই, কত মানুষ পড়ে গিয়ে আহত হয়েছে। একজনতো ধাক্কা সামলাতে না পেরে ড্রেনে পড়ে রক্তাক্ত জখম হয়েছে। তিনি বলেন, বয়স্ক অনেক মহিলাদের লাইনে বেশিক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকা খুবই কষ্টকর। মহিলাদের জন্য আলাদা টিকা কেন্দ্র হলে ভালো হতো। তিনি বলেন, ভিড় সামলাতে না পেয়ে লাঠিপেটাও করেছে দায়িত্বরত লোকজন।
আশুলিয়ার কাঠগড়া এলাকা মমিনুল ইসলাম জানান, টিকা দেওয়ার জন্য ভোর থেকে লাইনে দাঁড়িয়ে আছি দুপুর হলেও এখনও দিতে পারি নাই। এরমধ্যে হুড়হুড়িকে কয়েকবার পড়েও গেছি। এতো ভয়াবহ অবস্থা জানলে তো আর আসতাম না এই ঝামেলার মধ্যে। এদিকে টিকা কেন্দ্রের মাইকে বেশ কয়েকটি শিশু হারিয়ে যাওয়ার সংবাদও ঘোষণা দিতে শোনা গেছে।
সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা সায়েমুল হুদা জানান, আমাদের সক্ষমতার চেয়ে অনেক বেশি জনগণ এখানে টিকা নিতে আসছে। সরকারের ঘোষণার পর ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনার পর সাধারণ মানুষ টিকা নিতে আসছেন। এতে আমরা খুবই খুশি। কিন্তু এখনকার পরিস্থিতি মোকাবিলা আমাদের জন্য খুবই কষ্টকর হয়ে যাচ্ছে। ভিড়ে কিছু কিছু লোক আহত হয়েছেন। তাদের কেউ কেউ হাসপাতালে ভর্তিও আছেন। সংখ্যাটা স্বাস্থ্যকর্মীসহ ১০ থেকে ১২ জন হবে হয়তো। তিনি আরো বলেন, ২৬ ফেব্রুয়ারির পরও প্রথম ডোজ কন্টিনিউ করা হবে। তাই আমি সাভারবাসী ও গার্মেন্টস শ্রমিকদের অনুরোধ করবো আপনাদের অস্থির হওয়ার কোনো কারণ নাই।
সাভার মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাইনুল ইসলাম জানান, আমরা শুধু স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কর্তৃপক্ষকে সহায়তা করছি। তবে সাভারের মতো জনবহুল এলাকায় হটাৎ হাজার হাজার লোক টিকা নিতে আসায় আমাদেরও বেগ পেতে হচ্ছে। টিকা নিতে আসা মানুষের ওপর লাঠিপেটার বিষয়টি কোনভাবেই কাম্য নয়। এটা কেন ঘটেছে তা খতিয়ে দেখা হবে বলেও জানান ওসি।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন