বুধবার, ০১ মে ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১, ২১ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

মহানগর

দেশের ৩১ শতাংশ মৃত্যুর কারণ হৃদরোগ

২ দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক বৈজ্ঞানিক সম্মেলন শুরু

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ৪:৩৬ পিএম

দেশের মানুষের মৃত্যুর এক নম্বর কারণ হৃদরোগ। প্রতিবছর বিশ্বে যে পরিমাণ লোক মারা যায়, তার ৩১ শতাংশ মারা যাচ্ছে হৃদরোগে। বর্তমানে যে হারে হৃদরোগ হচ্ছে, তাতে আগামী ২০৩০ সালে বিশ্বে ২৩ মিলিয়ন লোক মারা যাবে। একই সঙ্গে হৃদরোগের বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলো। ভৌগোলিক কারণে অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলদেশ, ভারতসহ এ অঞ্চলে হৃদরোগের ঝুঁকি বেশি। কারণ, আমাদের দেশের মানুষ অল্প বয়সে ধূমপান করে, চর্বিযুক্ত খাবার বেশি খায়। কোন খাবার স্বাস্থ্যকর আর কোনটা অস্বাস্থ্যকর, সে বিষয়ে আমাদের দেশের অনেকেরই ধারণা কম। আবার ভৌগোলিক কারণে এ দেশের মানুষের উচ্চতা কম। এর ফলে তাদের হার্টের করোনারি আর্টারি (ধমনি) সরু থাকে, যা সাধারণত অল্পতেই কোলেস্টেরলে বন্ধ হয়ে যাওয়ার প্রবণতা দেখা দেয়।

শুক্রবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশ কার্ডিওভাসকুলার রিসার্চ ফাউন্ডেশন ও যুক্তরাষ্ট্রের ইন্টারভেনশনাল একাডেমির যৌথ উদ্যোগে ২ দিনব্যাপী হৃদরোগ বিষয়ক আন্তর্জাতিক বৈজ্ঞানিক সম্মেলনের প্রথম দিনে বিশেজ্ঞরা এসব কথা বলেন। রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে প্রধান অতিথি থেকে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) ভিসি প্রফেসর ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ।

ভিসি প্রফেসর ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, হৃদরোগ প্রতিরোধে গুরুত্ব দিতে হবে। ধূমপান করা যাবে না, নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে। ডায়েট কন্ট্রোল করা উচিত এবং জীবনে ডিসিপ্লিন থাকতে হবে। মানসিক চাপ মুক্ত থাকুন। লবন ও চিনির ব্যবহার যথাযথ ও পরিমিত হতে হবে। যথাসম্ভব লবন ও চিনি খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। তবেই হৃদরোগ প্রতিরোধ করা যাবে। ভিসি বলেন, দেশের হৃদরোগ চিকিৎসাসেবার অনেক উন্নতি হয়েছে। তবে প্রয়োজনীয় সংখ্যক বিশেষজ্ঞের অভাব রয়েছে। এজন্য হৃদরোগ বিষয়ক কোর্সসমূহে ছাত্র ভর্তির সংখ্যা বৃদ্ধি করা হবে। বিএসএমএমইউ দেশে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক তৈরিতে বড় অবদান রাখছে এবং এই কার্যক্রম আরো জোরদার করা হবে। তিনি বলেন, দেশের হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ও চিকিৎসকগণ দেশেই রোগীদের উন্নত চিকিৎসাসেবা প্রদান করায় দেশের মানুষ উপকৃত হচ্ছে, একই সাথে বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় হচ্ছেÑ যা দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে।

বাংলাদেশ কার্ডিওভাসকুলার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের সভাপতি ও বিএসএমএমইউ’র হল প্রভোস্ট প্রফেসর ডা. এসম মোস্তফা জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন ইউজিসি’র প্রফেসর ডা. সজল কৃষ্ণ ব্যানার্জী, যুক্তরাষ্ট্রের কার্ডিওভাসকুলার বিশেষজ্ঞ ডা. রাজেশ এম ডেভ, ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ কার্ডিওভাসুকলারের (এনআইসিভিডি) সাবেক পরিচালক প্রফেসর ডা. আব্দুল্লাহ আল শফি মজুমদার, বাংলাদেশ সোসাইটি অফ কার্ডিওভাসুকলার ইন্টারভেনশনের সভাপতি প্রফেসর একেএম ফজলুর রহমান, এনআইসিভিডি’র পরিচালক প্রফেসর ডা. মীর জামাল উদ্দিন। অনুষ্ঠানে দেশের হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ও চিকিৎসকবৃন্দসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ফ্যাকাল্টিরা অংশগ্রহণ করেন। প্রথম দিনে ১৭টি বৈজ্ঞানিক সেশন অনুষ্ঠিত হয় এবং আগামীকাল শনিবার লাইভ ট্রান্সমিশন বিষয়ক উল্লেখযোগ্য একটি সেশনসহ ২ দিনে মোট ২৩টি সেশন এই আন্তর্জাতিক সম্মেলনে অনুষ্ঠিত হবে।

এদিকে শুক্রবার সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যসেবা ও চিকিৎসাশাস্ত্রের মানন্নোয়নে অবদানের জন্য ১৩ জন কৃতি চিকিৎসককে স্মারক সম্মাননা প্রদান করা হবে। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন শিক্ষা মন্ত্রী ডা. দীপু মনি। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন এ্যাটর্নি জেনারেল আবু মোহাম্মদ আমিন উদ্দিন। যে সকল গুণী শিক্ষক ও চিকিৎসককে সম্মাননা দেয়া হবে সেই বরেণ্য বিশিষ্ট ব্যক্তিরা হলেনÑ প্রফেসর শেখ আলী আশরাফ, ন্যাশনাল প্রফেসর ব্রিগেডিয়ার (অব.) আব্দুল মালিক, সংসদ সদস্য ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি প্রফেসর ডা. প্রাণ গোপাল দত্ত, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও এমিরেটাস প্রফেসর ডা. এবিএম আব্দুল্লাহ, ন্যাশনাল প্রফেসর ডা. এ কে আজাদ খান, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি প্রফেসর ডা. মাহমুদ হাসান, ইউজিসি’র প্রফেসর ডা. সজল কৃষ্ণ ব্যানার্জী, প্রফেসর সিরাজুর রহমান খান, প্রফেসর সুফিয়া রহমান, প্রফেসর মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম, প্রফেসর এম আমজাদ হোসেন ও ব্রিগেডিয়ার জেনারেল প্রফেসর নুরুন নাহার ফাতেমা বেগম।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন