বর্তমান ক্ষমতাসীন সরকার ২১ বছরের ছেলেদের মদের লাইসেন্স ও ১০০ জন লাইসেন্সধারীদের জন্য মদের বার অনুমোদন দিয়ে দেশের ভবিষ্যত প্রজন্মকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অবঃ) সৈয়দ মুহাম্মদ ইব্রাহিম (বীর প্রতীক)। তিনি বলেন, মদের লাইসেন্স দেওয়ার এ সিদ্ধান্ত থেকে সরকার বিরত না হলে দেশের জনগণ গভীর সংকটে পড়বে।
আজ শনিবার ইসলামী কানুন বাস্তবায়ন কমিটির “মাদকের ভয়াবহতা, যুব সমাজের নৈতিক সংকট-সমাধানে করণীয়” শীর্ষক গোল টেবিল বৈঠকে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এসময় তিনি মুসলিম প্রধান দেশের সরকারকে অবিলম্বে এধরনের ঘৃণিত এবং হঠকারী দেশ বিরোধী সিদ্ধান্ত বাতিল করার দাবি জানান। বীর প্রতিক ইবরাহিম, প্রয়োজনে দেশের সকল মানুষের সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে মদের লাইসেন্স ও অনুমোদন রুখে দিতে হবে।
অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে মাওলানা আবু তাহের জিহাদী বলেন, মাদকের ভয়াবহতা সম্পর্কে জানে না এমন লোক পৃথিবীতে খুব কমই আছে। মাদকের নেশায় কেউ একবার আসক্ত হয়ে পড়লে ঐ ব্যক্তিকে ফিরিয়ে আনা খুবই কঠিন। তাই এ ব্যাপারে মা-বাবা ভাই-বোন সহ পরিবারের সদস্যদের সচেতন হওয়া জরুরি। মাদকদ্রব্য মানুষের দৈহিক ও মানসিক সমস্যা সৃষ্টি করে। সেই সাথে মাদক গ্রহীতা নেশার টাকা সংগ্রহের জন্য বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকান্ডে জড়িয়ে পারিবারিক, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় সমস্যা সৃষ্টি করে। মূলত, ইসলাম কল্যাণমূলক পরিপূর্ণ জীবন বিধান। এজন্য ইসলাম মাদক ও নেশাদ্রব্য গ্রহণকে হারাম করেছে। সরকারের প্রতি মদের এ সিদ্ধান্ত বাতিল করতে বিশেষ আহ্বান জানান তিনি।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ও নর্দান মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের সাবেক সহযোগী অধ্যাপক ডাঃ মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, মাদক রোধে আমাদের সবাইকে অধিক সচেতন হতে হবে। মাদক সেবনের কারণে মুখমন্ডল ফুলে যাওয়া, মুখ চোখ নাক লাল হওয়া, ক্ষুধামন্দা, স্মরণশক্তি কমে যাওয়া, হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হওয়া, বুক ও ফুসফুস নষ্ট হওয়া, চর্ম রোগ বৃদ্ধি পাওয়া, ক্যান্সার, লিভার সিরোসিস, আলসার হওয়া এবং যৌন শক্তি কমে যায়। মাদকের কারণে বাংলাদেশ বড় রকমের অর্থনৈতিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। আসুন দল মত জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে মাদককে সকলে না বলি এবং আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশ থেকে মাদক নির্মূলে ভূমিকা রাখি।
ইসলামী কানুন বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি মাওলানা আবু তাহের জিহাদীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ মসজিদ মিশন এর সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা ড. খলিলুর রহমান মাদানী, বিশিষ্ট আলেমেদ্বীন ড. মুফতি আবু ইউসুফ খান, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট বারের সাবেক সহ-সম্পাদক অ্যাডভোকেট ড. গোলাম রহমান ভূঁইয়া, মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির আইন অনুষদের ডীন প্রফসর মাহবুবুল আলম, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে’র) সাধারণ সম্পাদক মোঃ শহিদুল ইসলাম, প্রফসর ড. আব্দুল মান্নান, বিশিষ্ট আলেমে দ্বীন মাওঃ রফিকুল ইসলাম মিয়াজি, ড. মুফতি জাকারিয়া নুর, অধ্যক্ষ মুফতি মিজানুর রহমান প্রমুখ।
এসময় ইসলামী কানুন বাস্তবায়ন কমিটির পক্ষ থেকে গোল টেবিল বৈঠক থেকে ৩ দফা দাবি পেশ করা হয়। ১. দেশের প্রকৃত উন্নয়নে যুব সমাজ গঠনে সঠিক শিক্ষা নিশ্চিত করতে হবে, ২. সুখী সমৃদ্ধ জাতি গঠনে নৈতিক শিক্ষার পরিবেশ দিতে হবে, ৩. কুরআন ও হাদিসের আলোকে হারাম হালাল নিষিদ্ধ বিষয় গুলো বিবেচনায় রাখতে হবে। মুসলিম প্রধান দেশে সাধারণ মানুষের প্রকৃত চাওয়া পাওয়া প্রত্যাশা পূরণে সরকারকে আরও সচেতন হতে হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন