মহিষ হলো প্রথম, ঘোড়া দ্বিতীয় পদ্মার চরে অনুষ্ঠিত হলো ঐতিহ্যবাহী ঘোড়া ও মহিষ দৌড় প্রতিযোগিতা। কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার দয়রামপুর গ্রামে পদ্মার চরে অনুষ্ঠিত হলো শত বছরের ঐতিহ্যবাহী ঘোড়া ও মহিষ দৌড় প্রতিযোগিতা। গত শুক্রবার বিকেলে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে উপজেলার দয়রামপুর যুব সংঘের উদ্যোগে পদ্মার চর বালুর মাঠে এই প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। মাঠের চারপাশে বসে হাজার হাজার দর্শক আকর্ষণীয় এ প্রতিযোগিতা উপভোগ করেন।
রুহুল উদ্দীন স্বাধীনের ধারা বর্ণনায় প্রতিযোগিতায় সভাপতিত্ব করেন বিশিষ্ট ক্রীড়া ব্যক্তিত্ব ইকবাল সর্দার। প্রতিযোগিতার প্রধান অতিথি ছিলেন জগন্নাথপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও শিলাইদহ রবীন্দ্র কলেজের অধ্যাপক ফারুক আযম হান্নান। প্রতিযোগিতায় ঘোড়া গাড়ির ৪ জন ও মহিষের গাড়ির ৪ জন অংশগ্রহণ করেন। এতে দয়রামপুরের সাহেব সর্দার মহিষের গাড়ি নিয়ে প্রথম ও একই গ্রামের আকাশ ইসলাম ঘোড়ার গাড়ি নিয়ে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেন।
প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অধিকারীকে সোফাসেট ও দ্বিতীয় স্থান অধিকারীকে পাওয়ার ফ্যান পুরস্কার দেওয়া হয়। খাঁন ইলেকট্রনিকস অ্যান্ড ডিজিটাল ফার্নিচারের সৌজন্যে প্রতিযোগীদের মাঝে এই পুরস্কার দেওয়া হয়। এছাড়াও প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী প্রত্যেক প্রতিযোগীকে সান্ত্বনা পুরস্কার প্রদান করা হয়।
ব্যতিক্রমধর্মী এই প্রতিযোগিতা উপভোগ করতে আসা দয়রামপুর এলাকার হাবিবুর রহমান জানান, ঘোড়া ও মহিষ দৌড় প্রতিযোগিতা খুবই কম হয়। গ্রাম বাংলার এই ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে আমাদের এলাকায় এ বছর এ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। ভবিষ্যতেও এ ধরনের আয়োজন করার দাবি জানান তিনি।
পাশের গ্রাম মির্জাপুর থেকে প্রতিযোগিতা দেখতে আশা গোলাপী আক্তার বলেন, ঘোড়া ও মহিষ দৌড় প্রতিযোগিতা আমি শুধু বইতে পড়েছি আর মুরুব্বিদের মুখে শুনেছি। কিন্তু এই প্রথমবার আমি এই প্রতিযোগিতা দেখলাম, খুব ভালো লাগছে।
ঘোড়া ও মহিষ প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া আনোয়ার হোসেন জানান, আমি ২০ বছর যাবত ঘোড়া গাড়িতে মালামাল পরিবহন করি। এই ঘোড়া থেকে আমার রুটি-রুজির ব্যবস্থা হয়। প্রতি বছর যদি এই ধরনের প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয় তাহলে আমরা যারা গাড়িয়াল আছি তারা এই পেশায় আরো অনুপ্রাণিত হবো।
অপর প্রতিযোগী সোহেল বলেন, ঘোড়া ও মহিষ দৌড় প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে আয়োজকদের পাশাপাশি আমাদেরও অনেক টাকা খরচ হয়। তারপরও আমার দাবি এ ধরনের ঐতিহ্যবাহী খেলা যাতে বার বার আয়োজন করা হয়। তাহলে আমাদের ঘোড়া লালন পালন ও প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে আগ্রহের সৃষ্টি হবে। আয়োজকদের একজন ইকবাল সরদার জানান, এখন থেকে প্রতি বছর এই ধরনের আয়োজনের ধারাবাহিকতা বজায় রাখা হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন