শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মহানগর

খুলনায় বিএনপির সম্মেলন উপলক্ষে প্রস্তুতি সভা রাজনীতিতে ফিরতে পারেন লবী-খোকনরা

প্রকাশের সময় : ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬, ১২:০০ এএম

এ.টি.এম. রফিক/আশরাফুল ইসলাম নূর, খুলনা থেকে : দীর্ঘ সাত বছর পর খুলনা মহানগর ও জেলা বিএনপির সম্মেলনকে ঘিরে নেতাকর্মীদের মধ্যে চলছে নানান জল্পনা-কল্পনা। সম্মেলনে ইলেকশন না সিলেকশনের মাধ্যমে কমিটি গঠন করা হবে- তা নিয়েই শুরু হয়েছে হিসাব-নিকাশ। নিজেদের পদ-পদবী নিয়ে ইতোমধ্যেই ভাবতে শুরু করেছেন পদ প্রত্যাশীরা। আবার, খুলনার রাজনীতিতে নিষ্ক্রিয় খুলনা-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আলহাজ আলী আসগর লবী নগর কমিটিতে ও জেলা শাখার সাবেক আহŸায়ক নুরুজ্জামান খোকনসহ তাদের অনুসারিরা রাজনীতিতে ফিরছেন বলে নেতাকর্মীদের মধ্যে চলছে কানাঘুষা।
দলীয় সূত্র জানায়, কেন্দ্র থেকে সম্মেলনের তাগিদ থাকায় গত বৃহস্পতিবার মহানগরীর দলীয় কার্যালয়ে নগর কমিটির কার্যনির্বাহী কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় দলের মহানগর শাখার সম্মেলন আগামী ২ মার্চ সার্কিট হাউজ ময়দানে অনুষ্ঠানের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এছাড়া সভায় আগামী ২৩, ২৪, ২৫, ২৬ ও ২৭ ফেব্রæয়ারি মহানগরীর সদর, সোনাডাঙ্গা, খালিশপুর, দৌলতপুর ও খানজাহান আলী থানা সম্মেলন অনুষ্ঠানেরও সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। অন্যদিকে, আগামী ২৯ ফেব্রæয়ারি খুলনা জেলা বিএনপির কাউন্সিলের তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে। ইতিমধ্যে ৯টি উপজেলার সম্মেলন শেষ পর্যায়ে। সর্বশেষ ২০০৯ সালের ২৫ নভেম্বরে খুলনা বিএনপির সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছিল।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, ২০০১ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর খুলনা মহানগর বিএনপি নেতা নজরুল ইসলাম মঞ্জু ও আলী আজগর লবী অনুসারীদের মধ্যে গ্রæপিং সৃষ্টি হয়। ওই সময় প্রবীণ নেতা এম নূরুল ইসলাম নগর বিএনপির সভাপতি ও নজরুল ইসলাম মঞ্জু সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ওই কমিটি ভেঙে দিয়ে আলী আজগর লবীকে মহানগর বিএনপির আহŸায়ক করা হলে দ্ব›েদ্বর সূত্রপাত ঘটে। তবে এক-এগারোর সময় আলী আজগর লবী মামলায় অভিযুক্ত হলে তার অনুসারীরা নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েন। এরপর আর খুলনার রাজনীতিতে ফিরে আসতে পারেননি তিনি। লবীর অবর্তমানে তার অনুসারীদের অধিকাংশ নজরুল ইসলামের সাথে হাত মেলান। এরপর ২০০৯ সালের ২৫ নভেম্বর সার্কিট হাউজ ময়দানে নগর বিএনপির সর্বশেষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনে নজরুল ইসলাম মঞ্জুকে সভাপতি ও মনিরুজ্জামান মনিকে সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা করা হয়েছিল। সেই থেকে খুলনায় বিএনপির নেতৃত্বে অধিষ্ঠিত নজরুল ইসলাম মঞ্জু। তবে দলের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকসহ প্রায় সকল নেতাকর্মীর বিরুদ্ধেই রয়েছে শতাধিক মামলা। এখন আবার মহানগর বিএনপির সাবেক আহŸায়ক আলহাজ আলী আসগর লবী খুলনার রাজনীতিতে ফিরছেন এমনি গুঞ্জন চলছে নেতাকর্মীদের মধ্যে। যদিও তার পক্ষে মহানগর বিএনপির সভাপতি প্রার্থী হিসেবে নেতাকর্মীদের মাঝে ও কেন্দ্রীয় নেতাদের সাথে লবিং করছেন শাহারুজ্জামান মোর্ত্তজা।
মহানগর বিএনপি’র একাধিক নেতা বলেন, দীর্ঘদিন ধরে সম্মেলন না হওয়া ও অঙ্গ সংগঠনের পূর্ণাঙ্গ কমিটি না থাকায় দল সাংগঠনিকভাবে অনেকটা দুর্বল হয়ে পড়েছে। এছাড়া নগর যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল এবং ছাত্রদলেরও পূর্ণাঙ্গ কমিটি না থাকায় নতুন নেতৃত্ব তৈরি হচ্ছে না। এ অবস্থায় দলের নগর সম্মেলনে দিনক্ষণ ঘোষণায় নেতাকর্মীরা অনেকটা উচ্ছ¡সিত হয়ে উঠেছেন। তবে সম্মেলনে ইলেকশন না সিলেকশনের মাধ্যমে কমিটি গঠন করা হবে- তা নিয়ে নেতাকর্মীদের মধ্যে চলছে নানান জল্পনা-কল্পনা।
মহানগর সভাপতি নজরুল ইসলাম মঞ্জু বলেন, সম্মেলন সফল করতে ৮টি সাব কমিটি গঠন করা হবে। সম্মেলন উৎসবমুখর করতে নানা প্রস্তুতি চলছে। তবে সম্মেলনে কাউন্সিলে গোপন ভোটের মাধ্যমে নেতা নির্বাচন প্রক্রিয়ার ওপর গুরুত্ব দেয়া হবে বলেও জানান তিনি।
জেলা বিএনপিসাধারণ সম্পাদক অ্যাড. শফিকুল আলম মনা বলেন, ইতিমধ্যে কয়রা ও বটিয়াঘাটা উপজেলায় সম্মেলন সম্পন্ন হয়েছে। আগামীকাল সোমবার দাকোপ উপজেলা বিএনপির সম্মেলন। যতদ্রæত সম্ভব উপজেলা সম্মেলন শেষ করে আগামী ২৯ ফেব্রæয়ারি জেলা বিএনপির সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। উল্লেখ্য, ২০০৯ সালের ৩০ ডিসেম্বর জেলা বিএনপির দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে অধ্যাপক মাজিদুল ইসলামকে সভাপতি ও অ্যাড. শফিকুল আলম মনাকে সাধারণ সম্পাদক পুনঃ নির্বাচিত করা হয়েছিল।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন