পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পাবিপ্রবি) ভিসি অধ্যাপক ড. এম রোস্তম আলীর দেয়া অবৈধ নিয়োগ বাতিল, গণনিয়োগ বন্ধ এবং সেশনজটমুক্ত ক্যাম্পাসের দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এসময় তারা উপাচার্যের দুর্নীতির তদন্ত ও বিচার চেয়ে কুশপুত্তলিকা দাহ করা হয়। গতকাল বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান গেট থেকে বিক্ষোভ শুরু হয়। বিক্ষোভে বিশ্ববিদ্যালয়ের শতাধিক শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন। মিছিলটি ভিসির বাসভবন, একাডেমিক ভবন, বিজ্ঞান ভবন, স্বাধীনতা চত্বরসহ ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থানে প্রদক্ষিণ করে প্রধান গেটে অবস্থান নেয়। পরে প্রধান গেট সংলগ্ন ঢাকা-পাবনা মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে উপাচার্যের কুশপুত্তলিকা দাহ করেন শিক্ষার্থীরা। এসময় শিক্ষার্থীরা ‘অবৈধ নিয়োগ মানি না, মানবো না সহ ভিসি বিরোধীসহ নানা সেøাগান দেন।
এসময় ফজলে রাব্বি, অয়ন, মহনা, সানজিদা, রুবেল, তাহমিমুলসহ বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীরা জানায়, আমাদের ভিসি এমন পর্যায়ে দুর্নীতি করেছেন যে, শেষ পর্যায়ে রাতের আধারে পালিয়ে যেতে হয়েছে। আমরা তার মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই অপরাসণ এবং দুর্নীতির বিচার চাই।
এসময় শিক্ষার্থীরা বলেন, ভিসি অধ্যাপক ড. এম রোস্তম আলী গত চার বছরে বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যাপক অনিয়ম দুর্নীতি করেছেন। নিজে নিয়োগ বোর্ডের সভাপতি থেকে সম্পূর্ণ অনৈতিক ও বিধিবহির্ভূতভাবে ভাতিজি কানিজ ফাতেমা কনক, ভাগিনা হাসিবুর রহমান, ভাইয়ের ভায়রার ছেলে মীর রমজানসহ ডজনখানেক আত্মীয়কে নিয়োগ দিয়েছেন। এছাড়া মেয়াদ শেষে নিয়োগ বাণিজ্য করে শ’খানেক গণনিয়োগ দিয়েছেন। এমনকি পত্রিকা মারফত আমরা জেনেছি তার ভাতিজা রফিকুল ইসলাম বাবু এবং ভাতিজি বিলকিসকে দিয়েও নিয়োগ বাণিজ্য করেছেন। আমরা সরকারের কাছে এসব অবৈধ নিয়োগ বাতিল ও গণনিয়োগ বন্ধের দাবি জানাচ্ছি। ভিসির দুর্নীতির তদন্ত দাবি করে তারা বলেন, ভিসি পদে নিয়োগ পাওয়ার পর থেকেই তিনি অনিয়ম-দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েন।
নিয়োগ বাণিজ্য, উন্নয়ন প্রকল্পে কমিশন খাওয়া, ভুয়া ভাউচার করে টাকা লোপাট করা, ১০ কোটি টাকার বই ক্রয়ে হরিলুট, লেকের মাছ লুট, বাড়ি ভাড়া ফাঁকি দেয়া, গাড়ি বিলাসিতাসহ নানা অনিয়ম-দুর্নীতি করেছেন। আমরা এসবের তদন্ত চাই।
সেশনজট মুক্ত ক্যাম্পাসের দাবি জানিয়ে আন্দোলরত শিক্ষার্থীরা আরও জানান, তার অদক্ষতা ও অজ্ঞতার কারণে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে সেশনজট মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। তিনি আমাদের জীবনের মূল্যবান সময় নষ্ট করে দিয়েছেন। ইউজিসির বার্ষিক সম্পাদন চুক্তি পর্যন্ত তিনি বরখেলাপ করেছেন। ফলে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের র্যাংকিং একেবারে নিচে নেমে গেছে, ৪৬টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ৪৬তম।
এদিকে ছুটির কারণে একদিন বিরতি দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অফিস তালা দিয়ে গতকাল বুধবারও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন কর্মকর্তারা। ফলে এদিনও নিজ কার্যালয়ে প্রবেশ করতে পারেননি রেজিস্টার বিজন কুমার ব্রহ্ম। দাবিগুলো বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা। এবিষয়ে ভিসি ড. এম রোস্তম আলীর মুঠোফোনে একাধিক যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি। প্রক্টোর হাসিবুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করেও কোনও মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন