শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সারা বাংলার খবর

শেরপুর গারো পাহাড়ে অবশেষে বন্যহাতির জন্য তৈরি হচ্ছে ‘অভয়ারণ্যে’

ঝিনাইগাতী(শেরপুর) সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৩ মার্চ, ২০২২, ৩:৫০ পিএম

অবশেষে শেরপুর গারো পাহাড়ে বন্য হাতির জন্য তৈরি হচ্ছে ‘অভয়ারণ্যে। হাতি-মানুষের দ্বন্দ্ব নিরসনে ইতোমধ্যে জমি নির্ধারণ ও মালিকানা চিহ্নিত করার কাজ শুরু করছে বন বিভাগ। পাশাপাশি জবর দখলে থাকা বনভূমি উদ্ধারেও কাজ চলছে বলে জানা যায়।

উল্লেখ্য যে, জেলার ঝিনাইগাতী, শ্রীবরদী ও নালিতাবাড়ী উপজেলার বিশাল এলাকা জুড়ে রয়েছে গারো পাহাড়। এই বনাঞ্চলে অবাধে ঘুরে বেড়াতো বন্য হাতির পাল। কিন্তু এক শ্রেণীর দুর্নীতিপরায়ন বনকর্মকর্তা -কর্মচারি ও কাঠ চোরদের যোগশাজসে বনাঞ্চলের কাট কেটে উজার ও জনবসতি গড়ে উঠায় বন্যহাতি আশ্রয়স্থল হারিয়ে লোকালয়ে আসতে থাকে এবং খেতের ফসল ও বাড়িঘরে তান্ডব চালিয়ে মানুষের জানমালের ব্যাপক ক্ষতি সাধন অব্যাহত রাখে। গত ২৭ বছরে হাতির আক্রমণে কমপক্ষে ৮০-৯০ জন মানুষ প্রাণ হারায়- অহত হন ৫ শতাধিক মানুষ এবং হাতি ও মারা পড়ে প্রায় ৩০/৩৫টি। এ নিয়ে পত্র পত্রিকায় ব্যাপক লেখালেখি ও মানুষের আহাজারিতে অবশেষে টনক নড়ে বনবিভাগের। তাই অবশেষে হাতি মানুষের দ্বন্দ্ব নিরসনে পাহাড়ের সীমান্ত দিয়ে তৈরি হচেছ বন্য হাতির ‘অভয়ারণ্যে’। ইতোমধ্যে জরিপ কাজ শুরু করেছে বন বিভাগ। পাহাড়ের লোকজন আশা করছেন, হাতির জন্য অভয়ারণ্যে হলে পাহড়ে কৃষকদের ফসলের ক্ষতি হবে না, পাশাপাশি বাড়ি-ঘরে হামলা করবে না হাতির পাল।

তাই আশায় বুকবেঁধে পাহাড়ের লোকজন খুশি। ঝিনাইগাতীর ছোট গজনী এলাকার বাসিন্দা আছমত আলী, সরুফা বেগম ও লাল চাঁন জানান, এ এলাকায় প্রায় প্রতিদিনই হাতির পাল আসে, তান্ডব চালায়। যদি অভয়ারণ্যে হলে যদি হাতির আক্রমণ না হয় তবে আল্লাহ বাঁচাবেণ।
ছোট গজনী এলাকার বাসিন্দা হোসেন আলী বলেন, ‘ভাই খুব একটা ভালো খবর দিলেন, আমরা খুব খুশি। কারণ আমাদের এ এলাকা গজনীর পাশাপাশি, এজন্য প্রায় প্রতিদিনই হাতির পাল আসে এবং হানা দেয় বাড়ি-ঘরে। পরে আমরা ঢাক, ঢোল পিটিয়ে হাতির পালকে খেদাই দেই।’
নালিতাবাড়ীর পানিতাহা গ্রামের কৃষক লাল মিয়া বলেন, ‘মেলা দিন (অনেক দিন) ধইরি হুনতাছি (শুনতেছি) হাত্তির (হাতি) জন্য আস্তা (অভয়ারণ্যে) হবো, কই হয় না তো, এল্লে (এগুলো) হুদাই। যদি আস্তা (অভয়ারণ্যে) হয় তাহলেতো বালাই (ভালো) অইবো (হবে)।’

শ্রীবরদীর বালিজুড়ি রেঞ্জের ভারপ্রাপ্ত রেঞ্জঅফিসার মো. রবিউল ইসলাম বলেন, ‘বালিজুড়ি, ঝিনাইগাতী ও নালিতাবাড়ী পর্যন্ত হাতির জন্য অভয়ারণ্যে হবে। ইতোমধ্যে মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে জমি নির্ধারণ ও মালিকানা চিহ্নিত করার কাজ করছি। পাশাপাশি অবৈধভাবে জবর দখল করে থাকা জমিগুলোও উদ্ধার শুরু করেছি। আমরা আশা করি, গারো পাহাড়ের যে একটা ঐতিহ্য তা খুব দ্রyত সময়ের মধ্যে ফিরে আসবে।’
শেরপুর জেলা প্রশাসক মো. মোমিনুর রশীদ বলেন, অভয়ারণ্যের প্রস্তাবটি পাস হয়ে বন মন্ত্রনালয়ের মাধ্যমে বন বিভাগে রয়েছে। ইতোমধ্যেই প্রাথমিক কাজ শুরু হয়েছে। আশা করছি, হাতি-মানুষের যে একটা দীর্ঘদিনের সংঘাত তা শেষ হবে।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন