রূপগঞ্জের পূর্বাচল থেকে যানবাহনের তেল চুরি ও বিক্রয় করার অভিযোগে ১১ তেলচোরকে গ্রেফতার করে থানায় সোপর্দ করেছে র্যাব।
জানা যায়, এশিয়ান বাইপাস ও ৩শ ফুট সড়ক (কুড়িল থেকে কাঞ্চন সড়ক) দিয়ে প্রতিদিন চলাচল করে কয়েকশত মালবাহী ট্রাক। চলে যাত্রীপরিবহনে বিআরটিসি বাস আর প্রাইভেটকারসহ বিভিন্ন যানবাহন। এসব যানবাহন থেকে চক্রের সদস্যরা অসাধু গাড়ী চালকদের মাধ্যমে তেল চুরি করতে ওই সড়কের পাশেই তৈরী করেছে অর্ধশতাধিক খুপড়ি দোকান ঘর। সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নির্মাণাধীন পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্প এলাকায় রয়েছে এমন ৩০টির অধিক তেল চুরি কাজে নিয়োজিত সিন্ডিকেট। এদের মাঝে পূর্বাচলের ২, ৮, ৯, ও ১০নং সেক্টর এলাকার ৪টি খুপড়ি দোকান নিয়ন্ত্রণ করে উপজেলার বাগবের এলাকার সুমন মিয়া ও তার লোকজন।
পূর্বাচল ৯নং সেক্টরের আদিবাসি আলমপুরের আমির আলী অভিযোগ করে জানান, ৯নং সেক্টর এলাকার খুপড়ি ঘরে রাতভর তেলচুরি করে দলবেঁধে নেশা করে একটি চক্র। এতে বাঁধা দেয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে ওই সুমন ও তার দলবল আমির আলী ও তার ছেলে আল-আমিনকে হত্যার হুমকি দেয়। এ ঘটনায় রূপগঞ্জ থানায় গত ৩ মার্চ সাধারণ ডায়েরি করেন আল আমিন। প্রতিবাদ করতে গিয়ে এক গৃহবধুকে শ্লীলতাহানি করার অভিযোগও উঠেছে।
পূর্বাচল জুড়ে অবৈধ চোরাই তেল সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছে ৪, ৫, ৬ ও ৭নং সেক্টর এলাকার কালনীর সবুর মিয়ার ছেলে রাজিব মিয়াসহ আরো একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট। যাদের মাঝে রয়েছে উজ্জল, পিয়াস, শরীফ, ওমর, ফয়সালসহ আরো ২০ জনের অধিক সদস্য। অভিযোগ রয়েছে, তারা দিনভর স্থানীয় নানা সন্ত্রাসি কাজে জড়িত থাকে। আর রাত হলেই খুপড়ি দোকানে তেল চুরির কাজে জড়িত থাকে। গত বৃহস্পতিবার র্যাবের অভিযানের সময় তারা গা ঢাকা দেয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে রূপগঞ্জ থানা সহকারী উপ পরিদর্শক (পূর্বাচল ক্যাম্প ইনচার্জ) সাইফুল ইসলাম বলেন, রূপগঞ্জ থানায় দাখিল করা এ ধরনের অভিযোগ পেয়েছি। ঘটনা তদন্ত চলছে। হামলায় জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হবে। তবে চোরাই তেল ব্যবসায়ীদের ধরতে থানা পুলিশের একটি টীম কাজ করছে।
র্যাব-১ এর সহকারী পুলিশ সুপার (মিডিয়া অফিসার) নোমান আহমেদ বলেন, তেল চোর সিন্ডিকেট সক্রিয় এমন খবর পেয়ে গত ৩ মার্চ রাত ও গতকাল শুক্রবার সকালে একাধিক স্পটে অভিযান পরিচালনা করেন র্যাব ১ এর সিপিসি ৩ এর একটি আভিযানিক দল। ওই অভিযানে পূর্বাচলের আশপাশের সক্রিয় ১১ চোরাই তেল কারবারিকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তাদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে রূপগঞ্জ থানায় সোপর্দ করা হয়েছে। যারা জড়িত তাদের আইনের আওতায় আনতে পদক্ষেপ নেয়া হবে। গ্রেফতারকৃতরা হলো- সোহেল, রফিকুল, কামরুল, রাসেল, মাসুম, জুয়েল, আতাউর, শাওন, আক্তার, হানিফ। এ সময় তাদের কাছ থেকে ১৬৫০ লিটার চোরাইকৃত জ্বালানী তেল, ১টি কাভার্ড ভ্যান, ১২টি মোবাইল ফোন, ১৫টি সিমকার্ড, ১টি ড্রাইভিং লাইসেন্স ও নগদ ৪২ হাজার ৪শত টাকা উদ্ধার করা হয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন