শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৩ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

মহানগর

অল্প সময়ের মধ্যেই ক্ষমতার পরিবর্তন আসবে: মির্জা ফখরুল

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৭ মার্চ, ২০২২, ৬:১৯ পিএম | আপডেট : ৮:২৭ পিএম, ৭ মার্চ, ২০২২

অতি অল্প সময়ের মধ্যেই তারেক রহমানের নেতৃত্বেই ক্ষমতার পরিবর্তন আসবে বলে প্রত্যাশা করছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, তারেক রহমান একজন ব্যক্তি নন। তিনি হচ্ছেন একটা রাজনীতির প্রতীক, একটি দর্শনের প্রতীক। আমরা শুধু বিশ্বাসই করি না, এখন আস্থাশীল যে, অতি অল্প সময়ের মধ্যে তারেক রহমানের নেতৃত্বে ও দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার প্রত্যক্ষ-সক্রিয় অংশগ্রহনের মধ্য দিয়ে ইনশাল্লাহ এই দেশকে মুক্ত করতে সক্ষম হবো।

সোমবার (০৭ মার্চ) বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ১৬তম কারাবন্দি দিবস উপলক্ষে সেগুন বাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে উত্তরাঞ্চল ছাত্র ফোরাম ও বাংলাদেশ ছাত্র ফোরামের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব এবং গণতন্ত্র, একই সঙ্গে বাংলাদেশের সমৃদ্ধি- এই জিনিসগুলোকে সামনে নিয়ে জিয়াউর রহমান রাজনীতি শুরু করেছিলেন, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া সেই পতাকা তুলে নিয়ে গিয়েছিলেন এবং এখন সেই পতাকা তারেক রহমানের হাতে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশকে যদি সত্যিকার অর্থেই একটা সুখী-সমৃদ্ধ-গণতান্ত্রিক দেশের পরিণত করতে হয় তাহলে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন জনগণের ঐক্য সৃষ্টি করা। সেই ঐক্য সৃষ্টি করতে হবে অবশ্যই বাংলাদেশে জাতীয়তাবাদের ভিত্তিতে এবং আমাদের নেতা তারেক রহমানের নেতৃত্বে। এখন আর সময় ক্ষেপণ করার সময় নেই। আসুন আমরা সবাই নিজেদেরকে সংগঠিত করি, সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলোকে, রাজনৈতিক ব্যক্তিদের ঐক্যবদ্ধ করি। একটা জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলে আমরা অবশ্যই যেন তাদেরকে পরাজিত করতে পারি সেই জন্য উদ্যোগ নেই-এই আহবান জানাচ্ছি।

মির্জা ফখরুল বলেন, তারেক রহমানকে তারা (আওয়ামী লীগ) ভয় পায়- এটা বাস্তব। কেনো ভয় পায়? তারেক রহমানের যে অসাধারণ সাংগঠনিক দক্ষতা রয়েছে সেই সাংগঠনিক দক্ষতার কারণে তিনি অতি অল্প সময়ের মধ্যে আজকে সারা বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক জাতীয়তাবাদী শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ করতে শুরু করেছেন। এটা তারা অতীতেও দেখেছেন। যখন তিনি দলের সিনিয়র যুগ্ম সচিবের দায়িত্ব নেন এবং যখন তিনি তৃনমূল পর্যায়ের সংগঠন গড়ে তোলার কাজ শুরু করেন তখন থেকে তাদের মনে হয়েছে যে, এই মানুষ যদি দেশে থাকে তাহলে তাদের কোনো অবস্থান থাকবে না। সেই কারণে তারা তারেক রহমানের বিরুদ্ধে যত অপপ্রচার, যত মিথ্যা মামলা একটার পর একটা দিয়ে যাচ্ছে।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, তারেক রহমানের গ্রেফতার কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছিলো না। প্রকৃতপক্ষে তারেক রহমানের গ্রেপ্তার, পরবর্তিতে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার গ্রেফতার এবং সেই সময়ে সিনিয়র নেতৃবৃন্দকে গ্রেপ্তার, পরবর্তিকালে দুই বছরের চক্রান্তের মধ্য দিয়ে দুই বছরে নির্বাচনে স্বাধীনতা বিরোধী শক্তিকে ক্ষমতায় নিয়ে আসা এই সবই ছিলো চক্রান্তের অংশ। ১/১১ যে ঘটনা শুধু বিএনপির বিরুদ্ধে শুধু নয়, এটা ছিলো সমগ্র বাংলাদেশী জাতির বিরুদ্ধে। মূল লক্ষ্যটি ছিলো এখানে এই জাতিকে বিরাজনীতিকরণের প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে সম্পূর্ণভাবে ডি-পলিটিসাইজড একটা স্টেট হিসেবে তৈরি করা।

মন্ত্রীরা মিথ্যা বলে সত্যে পরিণত করতে চায় মন্তব্য করে তিনি বলেন, এরা (মন্ত্রীরা) উন্নয়নের কথা বলে, অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির কথা বলে কিন্তু এতো মিথ্যা কথা বলে যে মিথ্যাগুলো সত্যে পরিণত করতে চায়। কয়েকদিন আগে তারা বলেছে যে, এখানে নাকী কুঁড়ে ঘর শুধু কাব্যের মধ্যে, দারিদ্য নাকী খুঁজে পাওয়া যায় না বাংলাদেশে। অথচ পরিসংখ্যান বলছে, বাংলাদেশে দারিদ্র্যের পরিমান-এটা শুধু আমাদের কথা নয়, আন্তর্জাতিক পর্য়ায়ে যে সংস্থাগুলো আছে তাদের জরিপে বলছে যে, বাংলাদেশে দারিদ্রের পরিমান শতকরা ২ শতাংশ আরো বেড়েছে। মির্জা ফখরুল বলেন, অর্থনৈতিক উন্নয়ন হয়েছে কাদের? শুধুমাত্র আওয়ামী লীগের। তারা এতো বেশি অর্থশালী হয়েছে, এতো বেশি লুট করেছে, এতো বেশি ডাকাতির মধ্য দিয়ে অর্থ-সম্পদকে বিদেশে পাঠিয়ে ব্যবসা তৈরি করেছে যে, তাদের একেবারে গ্রামের ইউনিটের নেতা থেকে শুরু করে শীর্ষ পর্যায় পর্যন্ত এখন দারিদ্র্য দেখতে পায় না।

বিএনপির অন্যতম এই শীর্ষ নেতা বলেন, আমাদের দাবিগুলো খুব পরিস্কার- গণতন্ত্রের মাতা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া তাকে মুক্তি দিতে হবে। দেশনেত্রীকে মুক্তি দেয়ার পরে এই সরকারকে পদত্যাগ করে নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা দিতে হবে এবং সেই নিরপেক্ষ সরকার একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের মধ্য নিয়ে যে নির্বাচন পরিচালনা করবেন সেই নির্বাচনে জনগণের একটি পার্লামেন্ট ও সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়।

তিনি বলেন, তারা (ক্ষমতাসীনরা) বাংলাদেশকে ধ্বংস করে দিয়েছে। তাই এই মুহূর্তে শেখ হাসিনা সরকারের পদত্যাগ করা উচিত, নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করা উচিত।

বিএনপির সহ-প্রচার সম্পাদক আমিরুল ইসলাম খান আলিমের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, কেন্দ্রীয় নেতা শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, জহিরউদ্দিন স্বপন, শ্যামা ওবায়েদ, তাইফুল ইসলাম টিপু, সেলিমুজ্জামান সেলিম, ওবায়দুর রহমান চন্দন, স্বেচ্ছাসেবক দলের গোলাম সরোয়ার, নাজমুল হাসান, মহানগর বিএনপির আরিফা সুলতানা রুমা, ছাত্রদলের ফজলুর রহমান খোকন প্রমূখ নেতারা বক্তব্য রাখেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন