বগুড়ার ধুনট উপজেলায় আওয়ামী লীগের সম্মেলনে হামলা-ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে। গতকাল বুধবার ধুনট সদর ইউনিয়ন পরিষদ চত্বর এলাকায় এই হামলায় আওয়ামী লীগ কর্মী মাঠপাড়া গ্রামের খোকা, চালাপাড়া গ্রামের আজিজুর রহমান, সেলিম তালুকদার, আব্দুর রাজ্জাক, বাবলু ও উল্লাপাড়া গ্রামের সাগর হোসেনসহ ১০জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।
সংঘর্ষ ও হামলার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পুলিশ জানায়, গতকাল বুধবার ধুনট সদর ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে ৫, ৬, ৭, ৮ ও ৯ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। উপজেলা আওয়ামী লীগের একাংশের সভাপতি টিআইএম নূরুন্নবী তারিক ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হাই খোকনের অনুসারীরা এ সম্মেলনের আয়োজন করে। সকাল থেকে ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতাকর্মীরা সম্মেলন স্থলে সমাবেত হন।
বেলা ১১টার দিকে উপজেলা আওয়ামী লীগের অপর অংশের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি গোলাম সোবহান ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মহসিন আলমের অনুসারী একদল নেতাকর্মী অতর্কিতভাবে সম্মেলন স্থলে হামলা করে। এসময় নেতাকর্মীরা ইউনিয়ন পরিষদ ভবনের একটি কক্ষে ঢুকে ভেতর থেকে দরজা লাগিয়ে আত্মরক্ষা করে। তবে হামলার সময় অন্তত ১০জন নেতাকর্মী মারপিটের শিকার হোন। এছাড়া সম্মেলন স্থলে চেয়ার ভাংচুর করেছে হামলাকারীরা।
খবর পেয়ে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিলে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নুরুন্নবী তারিক ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হাই খোকনসহ নেতাকর্মীরা সম্মেলন স্থলে পৌঁছান এবং সংক্ষিপ্তভাবে সম্মেলন শেষ করেন।
হামলায় আহত আওয়ামী লীগ কর্মী সেলিম তালুকদার বলেন, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সম্মেলনের জন্য আমরা সেখানে সমবেত ছিলাম।
অতর্কিতভাবে লাঠি-রড ও অস্ত্র নিয়ে এমপি গ্রুপের লোকজন পুলিশের সামনেই সেখানে হামলা চালায়। অধিকাংশ নেতাকর্মী পরিষদের একটি ঘরে উঠে আত্মরক্ষা করে। কিন্তু আমরা ক’জন ঘরের ভেতরে ঢুকেও মারপিটের শিকার হয়েছি।
অন্যদিকে উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মহসিন আলম বলেন, সদর ইউনিয়নে রাজাকারের ছেলে মাসুদ রানার নেতৃৃত্বে আওয়ামী লীগের সম্মেলন আয়োজন করা হয়। আমাদের নেতাকর্মীদের একটি অংশ সেখানে উপস্থিত হয়ে স্বাধীনতার এই মাসে তার নেতৃৃত্বের প্রতিবাদ জানায়।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নুরুন্নবী তারিক বলেন, কেন্দ্রীয় নির্দেশনা অনুযায়ী ওয়ার্ড সম্মেলন ছিল। সেখানে নেতাকর্মীরা সমবেত ছিলেন। ইতিপূর্বে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে যেসব নেতাকর্মী বহিস্কৃত হয়েছে, তারা সেখানে হামলা চালিয়ে ভাংচুর ও নেতাকর্মীদের মারপিট করেছে। তারা সম্মেলন বানচাল করার চেষ্টা করেছিল, কিন্তু আমরা শেষ পর্যন্ত সম্মেলন সফল করেছি।
ধুনট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কৃপা সিন্ধু বালা বলেন, ধুনট সদর ইউনিয়ন পরিষদে আওয়ামী লীগের ওয়ার্ড সম্মেলন ছিলো। সেখানে এক পক্ষের নেতাকর্মীরা হামলা চালিয়ে চেয়ার ভাংচুর করেছে। দু’একজন আহত হওয়ার কথা শুনেছি। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
উল্লেখ্য, ধুনট উপজেলায় দীর্ঘদিন যাবত আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা এমপি হাবিবর রহমান এবং তার বিরোধীরা পৃথকভাবে সাংগঠনিক কাজকর্ম পরিচালানা করে আসছেন। এ ঘটনায় বিব্রতবোধ করছেন দলের সিনিয়র নেতারা ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন