শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মহানগর

মেয়াদোত্তীর্ণ প্রশাসকেই চলছে জবির চার দফতর

জবি সংবাদদাতা : | প্রকাশের সময় : ১৩ মার্চ, ২০২২, ১২:০৩ এএম

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের চারটি দফতর চলছে মেয়াদোত্তীর্ণ প্রশাসক দিয়ে। দীর্ঘদিন ধরে এই দফতরগুলোর পরিচালকের মেয়াদ শেষ হলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন ভিসি এসে কাউকে নিয়োগ দেননি। সাবেক ভিসি অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমানের ছকেই চলছে এসব দফতর। এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মকর্তা মহলে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। সিনিয়র শিক্ষকরা একাধিকবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির কাছে নতুন পরিচালক নিয়োগের দাবি জানালেও কোন সাড়া মিলেনি। এছাড়াও বর্তমানে চলতি দায়িত্বে থাকা পরিচালকরা পুনরায় পূর্ণ মেয়াদে দায়িত্ব পেতে লবিং চালিয়ে যাচ্ছেন। কেউ কেউ আবার পদ ধরে রাখতে ভিসির পছন্দের লোক হওয়ার চেষ্টা করছেন। বর্তমানে দায়িত্বে থাকা পরিচালকদের এসব কর্মকা- দেখে বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক সিনিয়র শিক্ষক প্রশ্ন তুলছেন। কেউ কেউ বলছেন শিক্ষকদের পড়াশোনা এবং গবেষণায় মনোযোগ থাকবে তারা কেন প্রশাসনিক পদ পেতে মরিয়া হয়ে উঠবে। এসব শিক্ষক শিক্ষকতা ছেড়ে কর্মকর্তা হতে চায় কিনা তা নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করেছেন অনেকে।

বর্তমান ভিসি যোগদানের ৮ মাস হতে চলেছে। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ চার দফতর প্রধানের মেয়াদ শেষ হলেও নতুন করে কাউকে দায়িত্ব দেওয়া হয়নি। তবে যেকোন সময় রদবদল হতে পারে বলে জানিয়েছেন ভিসি অধ্যাপক ড. ইমদাদুল হক।
সূত্র জানায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থ ও হিসাব দফতরের পরিচালক একাউন্টিং এন্ড ইনফরমেশন সিস্টেম বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক কাজী মো. নাসির উদ্দীনের নিযুক্তির মেয়াদ গত বছরের ২২ জুন শেষ হয়েছে। এরপর নতুন পরিচালক নিযুক্ত না করে পরদিন ২৩ জুন থেকে আবার নাসির উদ্দীনকে অনির্দিষ্টকালের জন্য অর্থ ও হিসাব দফতরের পরিচালক হিসাবে নিযুক্ত করা হয়েছে। তিনি পরবর্তী পরিচালক নিয়োগ না হওয়া পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করবেন। তার বিরুদ্ধে অতীতে অতিরিক্ত কাজ দেখিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থ লোপাটের অভিযোগ রয়েছে। মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও তিনি বহাল তবিয়তে দায়িত্বে রয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের যাবতীয় অর্থ কোন খাতে কত টাকা বরাদ্দ দিতে হবে সেটিও তার পরামর্শে করা হয় বলেও অভিযোগ রয়েছে।
একই অবস্থা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর দফতরে। ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোস্তফা কামালের নিযুক্তির মেয়াদ গত বছরের ২৪ জুলাই শেষ হয়েছে। পরদিন ২৫ জুলাই পুনরাদেশ না দেওয়া পর্যন্ত তাকে প্রক্টর হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে বলা হয়েছে। এই পদে আসতে অনেকেই উপাচার্যের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ অব্যাহত রাখছেন। তবে বর্তমানে দায়িত্বে থাকা প্রক্টরও তার পদ ধরে রাখতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন পুলের প্রশাসক হিসেবে ২০১৭ সালের ২০ জুলাই থেকে দায়িত্ব পালন করে আসছেন প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আব্দুল্লাহ আল মাসুদ। ২০১৯ সালের ২০ জুলাই দায়িত্বের মেয়াদ শেষ হলে নতুন কাউকে নিয়োগ না দিয়ে তাকেই পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করতে বলা হয়।
গত বছরের ১৪ মার্চ জনসংযোগ, তথ্য ও প্রকাশনা দফতরের পরিচালক বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. মিল্টন বিশ্বাসের দায়িত্বের মেয়াদ শেষ হলে পরদিন ১৫ মার্চ ওই পদে উপ-পরিচালক মো. সাইফুল ইসলামকে পরিচালক পদে দায়িত্ব প্রদান করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী দফতর প্রধান হিসেবে শিক্ষক নিয়োগ দেওয়ার কথা থাকলেও তার পরিবর্তে একজন কর্মকর্তা দিয়ে দফতরের কার্যক্রম চালানো হচ্ছে।
এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের আইটি দফতরে কম্পিউটার সায়েন্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. উজ্জল কুমার আচার্য্য আইটি দফতরের শুরু থেকেই পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। শুরু থেকে একটানা আইটি দফতরের দায়িত্ব দেওয়া হলেও পুনরায় গত বছরের ২ মার্চ এই শিক্ষককে আইটি দফতরের পরিচালক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তার মেয়াদ আগামী ৩ মার্চ শেষ হবে।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় মনোবিজ্ঞান বিভাগের সিনিয়র অধ্যাপক এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট মেম্বার অধ্যাপক ড. কাজী সাইফুদ্দীন বলেন, কোন রকমের অতিরিক্ত দায়িত্ব দেয়া উচিত না। মেয়াদ শেষ হলেই নতুন কাউকে পূর্ণ মেয়াদে নিয়োগ দিয়ে দিতে হবে। এর ফলে ভেতরে ভেতরে অনেকের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হচ্ছে। আবার অনেকে এসব অতিরিক্ত দায়িত্ব দেখে শিখতেছে পরে তারাও কোন দায়িত্বে গেলে অতিরিক্ত দায়িত্ব পাওয়ার জন্য বসে থাকবে। তাই এসব এখনই বন্ধ করতে হবে।
এ বিষয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ড. মো. ইমদাদুল হক বলেন, এই পদগুলোর দায়িত্বের মেয়াদ শেষ হওয়ায় অতিরিক্ত দায়িত্বে দেয়া হয়েছে। যে কোনো সময় রদবদল হবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন