নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে এক স্কুলছাত্রীকে উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ করায় ভুক্তভোগীর পরিবারের উপর হামলার অভিযোগে মামলা দায়ের করতে দেয়নি গ্রাম্য মাতুব্বররা। একপর্যায়ে উচিৎপুরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ইসমাইল হোসেনসহ কতিপয় মাতুব্বরের চাপের মুখে শিক্ষার্থীর পরিবারকে বাধ্য করে সোমবার রাতে প্রহসনের সালিশ বৈঠকে অভিযুক্ত বখাটেকে জুতাপেটা করা হয়েছে। গ্রাম্য মাতুব্বরদের প্রহসনের সালিশ বৈঠক নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
মঙ্গলবার দুপুরে সকালে ওই ছাত্রীর বাবা স্থানীয় সাংবাদিকদের জানায়, তার মেয়ে উপজেলার আতাদী উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রীকে দীর্ঘ দিন ধরে স্কুলে যাওয়া-আসার পথে উত্ত্যক্ত করে আসছিল পার্শ্ববর্তী দাসিরদিয়া গ্রামের বখাটে ইমরান। এক পর্যায়ে গত রোববার বিকেল ৩টার দিকে বাড়ি ফেরার পথে তাকে বিয়ের প্রস্তাব দিয়ে পিছু নেয় সে। এ সময় তাকে নানাভাবে উত্ত্যক্ত করে। উক্তত্য করতে করতে মেয়েটির বাড়ি দাসিরদিয়া পর্যন্ত চলে আসে বখাটে ও তার সহযোগিরা। এর প্রতিবাদ করলে তার ভাতিজা আরমানের ওপর হামলা চালায় ইমরান ও তার সহযোগীরা। তাকে লাঠি দিয়ে বেধড়ক পেটাতে দেখে তার পরিবারের লোকজন এগিয়ে এলে তাদেরকেও মারধর করা হয়। এঘটনায় তিনি সোমবার দুপুরে তিনজনের নাম উল্লেখ করে পাঁচ অভিযুক্তের বিরুদ্ধে আড়াইহাজার থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দেন।
ওই ছাত্রীর বাবা আরও জানান, অভিযোগে দায়েরের বিষয়টি জানাজানি হলে স্থানীয় মাতুব্বররা বিচার সালিশ করে দেয়ার কথা বলে চাপ প্রয়োগ করতে থাকে। একপর্যায়ে মাতুব্বরদের চাঁপের সোমবার রাতে উচিৎপুরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ইসমাইল হোসেন নের্তৃত্বে প্রহসনের সালিশ বৈঠকে অনুষ্ঠিত হয়। বিচার রাত ৭টায় শুরু হয়ে চলে রাত ১০টা পর্যন্ত। সালিশ বৈঠকে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, উচিৎপুরা ইউনিয়নের সদস্য আলমগীর, সাবেক সদস্য শাহ আলমসহ অন্যান্য স্থাসীয় প্রভাবশালীরা। সালিশে ইউপি চেয়ারম্যানের নির্দেশে বখাটের ছেলের এক আত্মীয় বৈঠকে ইমরানকে অভিযুক্ত করে জুতা পেটা করেন।
এদিকে ইউপি সদস্য আলমগীর হোসেন সালিশ হওয়ার বিষয়টি ম্বীকার করলেও তিনি নিজের উপস্থিত ছিলেন বলে জানান। তাছাড়া ও গ্রামের অন্য মাতাব্বররা উপস্থিত ছিলেন।
এ ব্যপারে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ইসমাইল হোসেন জানান, বিষয়টি মিমাংসা হয়ে গেছে। এই কথা বলে তিনি মোবাইল কেটে দেন। এর পর বার বার ফোন দিলে ও তিনি রিসিভ করেনি।
আড়াইহাজার থানার ওসি আনিচুর রহমান মোল্লা জানান, ভুক্তভোগী পরিবার একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। থানা থেকে একজন অফিসারকে এবিষয়ে তদন্ত করার জন্য দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। মামলার এজাহারে বাদীর জাতীয় পরিচয়পত্রের নাম্বার দিতে হয় বিধায় তাদেরকে জাতীয় পরিচয়পত্রের নাম্বার দেয়ার কথা বলা হয়েছে। এখন পর্যন্ত তারা দেয়নি। তিনি আরও জানান, সালিশের বিষয় তার জানা নেই। তারপরও বিষয়টি খোঁজখবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন