আমার বয়স ৪৮ বছর, একজন ব্যাংকার। অনেকদিন ধরেই ডায়াবেটিসে ভুগছি। নিয়মিত ওষুধ খাই। আমাকে অনেকেই বলেছেন এক্সারসাইজ করলে বøাড শুগার নিয়ন্ত্রণে থাকে। আমি খাওয়াদাওয়া নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করি। কখনই এমন কিছু খাইনা যাতে আমার শরীরের উপর খারাপ প্রভাব পড়ে। এরপরেও কি এক্সারসাইজ করা জরুরি? কোন ধরনের এক্সারসাইজ করব? কোন সহজ পদ্ধতি থাকলে জানাবেন। আর এক্সারসাইজ করার সময় কোন রকম সাবধানতা অবলম্বন করা কি জরুরি?
মারুফ আজাদ, মুগদাপাড়া, ঢাকা।
আপনি যে নিজের খাওয়াদাওয়া নিয়ে সচেতন এটা খুব ভালো। কিন্তু এর সঙ্গে এক্সারসাইজও করতে হবে। আপনাকে ডায়েট আর ওয়ার্কআউট দু’টোকেই সমান গুরুত্ব দিতে হবে। দেখবেন, উপকার পাবেন। যতই ব্যস্ত থাকুন না কেন দিনের মধ্যে কিছুটা সময় বের করুন। ভালো থাকার কোন শর্টকাট পদ্ধতি হয় না। আপনি যদি নিজের শরীরের একটু যতœ নেন দেখবেন ভালো থাকবেন। কার্ডিও-রেসপিরেটরি ফিটনেসই হল আপনার সুস্থ থাকার চাবিকাঠি। কারণ, নিয়মিত এক্সারসাইজ করলে ক্যালরি বার্ন হয়, যা অতিরিক্ত ওজন কমিয়ে সঠিক ওজন মেনটেইন করতে সাহায্য করে। এক্সারসাইজ শরীরে ইনসুলিনের কার্যকারিতা বাড়িয়ে শরীর সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। বলতে পারেন, এক্সারসাইজ ইনসুলিনের মতো কাজ করে। ফলে রক্তে গøুকোজের পরিমাণও নিয়ন্ত্রণে থাকে। কার্ডিও অ্যাক্টিভিটি হার্ট ও ফুসফুসের কার্যকারিতা বাড়াতে সাহায্য করে। ফলে হার্ট ও ফুসফুস ভালো থাকে। এখানেই কার্ডিও এক্সারসাইজের প্লাস পয়েন্ট। অনেক সময় আবার স্ট্রেস থেকে রক্তে গøুকোজ লেভেল বেড়ে যায়, যা ডায়াবেটিসের অন্যতম কারণ। এক্সারসাইজ স্ট্রেস কমাতে সাহায্য করে, রক্তে গøুকোজ লেভেল নিয়ন্ত্রণে রাখে। এর থেকেই নিশ্চয় বুঝতে পারছেন এক্সারসাইজ করাটা কেন জরুরি।
সপ্তাহে তিনদিন কার্ডিও ভাসকুলার এক্সারসাইজ করতে পারেন। আস্তে আস্তে রপ্ত হয়ে গেলে সপ্তাহে চার-পাঁচদিন করুন। তবে সপ্তাহে ছ’দিনের বেশি এক্সারসাইজ করবেন না। সপ্তাহে একদিন শরীরকে বিশ্রাম দেওয়া জরুরি। হাঁটা, জগিং, স্কিপিং, টেনিস, ব্যাডমিন্টন, সাঁতার ট্রাই করতে পারেন। সিঁড়ি দিয়ে ওঠা নামা করুন নিয়মিত। বাইসাইকেল চালাতে পারেন। ইচ্ছে হলে অ্যারোবিক্সও ট্রাই করতে পারেন। একটু অন্যরকম কিছু করতে চাইলে বক্স্যারোবিকস, ট্রামপোলিন ওয়ার্কআউটও ট্রাই করতে পারেন। ক্রস ট্রেনিং এক্সারসাইজ করলেও উপকার পাবেন।
আর হ্যাঁ, এক্সারসাইজ করার সময় অবশ্যই কিছু সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। এক্সারসাইজ করার আগে ওয়ার্মআপ করে নেবেন। এতে শরীর এক্সারসাইজ করার জন্য তৈরি হয়ে যাবে, আর চোট লাগার সম্ভাবনাও কম। এক্সারসাইজ করার পর কিছুক্ষণ (যতক্ষণ না আপনার হার্ট রেট নর্মাল হচ্ছে) বিশ্রাম নেবেন। এক্সারসাইজ করার সময় সঠিক জুতো পরবেন, না হলে পায়ে চোট লেগে যেতে পারে। এই কটা জিনিস একটু মেনে চলুন। উপকার পাবেন।
হরমোন ও ডায়াবেটিস বিশেষজ্ঞ
সহকারী অধ্যাপক
এন্ডোক্রাইনোলজি বিভাগ
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়
কমফোর্ট ডক্টর’স চেম্বার, ১৬৫-১৬৬, গ্রীনরোড, ঢাকা
মোবাঃ ০১৭৩১৯৫৬০৩৩, ০১৫৫২৪৬৮৩৭৭।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন