ইটের আঘাতে মাথা থেতলে প্রেমিকাকে খুনের পর রক্তাক্ত লাশের পাশে বসে সিগারেটে টান দেন প্রেমিক। পরে সিগারেটের অবশিষ্টাংশ লাশের পোশাকে চেপে ধরে আগুন ধরিয়ে দেন। এতে লাশ পুড়ে বিকৃত হয়ে যায়। পার্বত্য জেলা রাঙামাটিতে সংগঠিত ওই নির্মম হত্যাকাণ্ডে জড়িত আসামি মাহিবুর কামালকে (২৩) নেত্রকোণা থেকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-৭ চট্টগ্রামের একটি বিশেষ টিম। গ্রেফতারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে গতকাল রোববার এসব তথ্য জানান র্যাবের কর্মকর্তারা।
গত ১১ মার্চ রাতে রাঙামাটি জেলার কাপ্তাই উপজেলায় বিএফআইডিসি মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একটি পরিত্যক্ত টয়লেটে ওই নারীকে খুন করা হয়। পরদিন বিকেলে টয়লেটের ভেতর থেকে নারীর পোড়া লাশ উদ্ধার করা হয়। র্যাব কর্মকর্তারা জানান, খুনের শিকার হাছিনা বেগম সুমির (২৮) পরিবার কিংবা পুলিশ কারও সন্দেহের তালিকায় ছিলেন না মাহিবুর। সুমির মোবাইলে কলের সূত্রে পাওয়া যায় তার সন্ধান। গত শনিবার সন্ধ্যায় নেত্রকোণা জেলার মদন উপজেলায় অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত মাহিবুরকে গ্রেফতার করা হয়। সুমি রাঙামাটি জেলা সদরের দোভাষী বাজার এলাকায় মায়ের সঙ্গে থাকতেন। আর অভিযুক্ত মাহিবুর কামাল কাপ্তাই উপজেলার মুরগির টিলা এলাকার মনির ভাণ্ডারির ছেলে। সুমির সঙ্গে তার স্বামীর একবছর আগে ছাড়াছাড়ি হয়। সুমি এলাকায় মাদক বিক্রির সঙ্গে জড়িত। মাহিবুর ইয়াবা আসক্ত। ইয়াবা কেনাবেচার সূত্রে দু’জনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক হয়। একবছর ধরে তারা ঘনিষ্ঠভাবে মেলামেশা করেন।
১৮ মার্চ মাহিবুরের অন্য এক নারীর সঙ্গে বিয়ের কথা ছিল। ১১ মার্চ সেটা জানতে পেরে সুমি তার সঙ্গে দেখা করতে যান। স্কুলের পরিত্যক্ত টয়লেটে দু’জন এ বিষয়ে কথা বলার একপর্যায়ে তাদের মধ্যে ঝগড়া হয়। এর জেরে মাহিবুর তার মাথায় ইট দিয়ে আঘাত করেন। তাতে সুমি লুটিয়ে পড়েন। এরপর আরও ১৫ থেকে ২০ বার তার মাথায় আঘাত করে মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়। পরে সিগারেটের আগুন থেকে সুমির শরীরে আগুন ধরিয়ে দেন। এতে সুমির শরীরের প্রায় অর্ধেক পুড়ে যায় এবং মুখমণ্ডল বিকৃত হয়ে যায়। র্যাবের হাতে গ্রেফতারের পর খুনের বর্ণনা দিয়ে এর দায় স্বীকার করেন ওই প্রেমিক।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন