বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) কুষ্টিয়া জেলা শাখার উদ্যোগে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে বাজারে চাল, ডাল, ভোজ্য তেল, পেঁয়াজ, মরিচ গুঁড়ো দুধ, শাকসবজীসহ নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম অস্বাভাবিক বৃদ্ধির প্রতিবাদে জেলা প্রশাসকের বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।
মঙ্গলবার সকালে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও কুষ্টিয়া জেলা বিএনপির সভাপতি সাবেক এমপি বীর মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ মেহেদী আহমেদ রুমী ও বিএনপি স্থানীয় সরকার বিষয়ক সম্পাদক ও কুষ্টিয়া জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাবেক এমপি বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যক্ষ সোহরাব উদ্দিনের নেতৃত্বে এই স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে।
জেলা প্রশাসকের পক্ষে স্মারকলিপি গ্রহণ করেন স্থানীয় সরকার কুষ্টিয়ার উপ-পরিচালক মৃনাল কান্তি দে।
স্মারকলিপি প্রদানের সময় উপস্থিত ছিলেন, কুষ্টিয়া জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি বশিরুল আলম চাঁদ, যুগ্ম-সাধারন সম্পাদক মিরাজুল ইসলাম রিন্টু, আব্দুর রাজ্জাক, সাংগঠনিক সম্পাদক এ্যাড. শামিম উল হাসান অপু, যুব বিষয়ক সম্পাদক মেজবাউর রহমান পিন্টু, সদর থানা বিএনপির সদস্য সচিব জাহিদুল ইসলাম বিপ্লব, জেলা মৎস্যজীবী দলের আহ্বায়ক নূরুল ইসলাম আসাদ, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সহ-সভাপতি আলোঙ্গীর হোসেন, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মুক্তিযুদ্ধের প্রজন্ম কুষ্টিয়া জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক শাহারিয়া ইমন রুবেল, সাবেক জেলা ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল ইসলাম রাব্বি, সাবেক সাংগঠনিক রোকনুজ্জামান রাসেল, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মুক্তিযুদ্ধের প্রজন্ম কুষ্টিয়া শহর শাখার আহ্বায়ক নাহিদুল ইসলাম রুপল, ছাত্র আইন ফোরাম কুষ্টিয়া জেলা শাখার আহ্বায়ক আহমেদুল রহমান রাব্বিসহ বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
স্মারকলিপিতে উল্লেখ করেন, মোটা চাল এখন ৫৫ থেকে ৬০ টাকা, চিকন চাল ৭০ থেকে ৮০ টাকা, আটা ৪৫ থেকে ৫০ টাকা, ভোজ্য তেলা ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা, মসুর ডাল ১১০ থেকে ১৩০ টাকা, গুঁড়ো দুধ ৫৯০ থেকে ৬৫০ টাকা, কাঁচা মরিচ ১০০ টাকার নীচে নামে না। প্রত্যেকটি জিনিস এই ভরা মওসুমে বহুগুন বৃদ্ধি পেয়েছে। জ্যামিতিক হারে এই দাম বৃদ্ধি সরকারের গণবিরোধী বজিসহ নীতির বর্ধিত প্রকাশ। হরিলুট, টাকা পাচারসহ সীমাহীন দুর্নীতির মাধ্যমে জাতীয় অর্থনীতির ভয়াবহ ক্ষতি করে দফায় দফায় বিদ্যুৎ, জ্বালানী তেল, গ্যাস ও পানির দাম বৃদ্ধি করেছে আওয়ামী সরকার। এই বৃদ্ধির 'চেইন রিঅ্যাকশন' হিসেবেই নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম হু হু করে বাড়ছে। গত ১০ বছরে বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি হয়েছে ৯০ শতাংশ, গ্যাসের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে ১৪৪ শতাংশ, ডিজেলের দাম বেড়েছে ৮২ শতাংশ এবং পানির দাম বেড়েছে ২৬৪ শতাংশ। এই দাম বৃদ্ধি নজীরবিহীন ও অস্বাভাবিক। জনগণের নির্বাচিত সরকার থাকলে এই ধরণের সীমাহীন দাম বৃদ্ধি পেতো না। জবাবদিহিতা নেই বলেই দাম বৃদ্ধির পেছনে অনৈতিক সিন্ডিকেট কাজ করছে। ক্ষুধা ও অনাহারে ক্লিষ্ট জনগণের জীবনকে ঝুঁকির মধ্যে নিপতিত করেছে ক্ষমতাসীন গোষ্ঠী, যেন সরকারের কোন দায় নেই। সারাদেশে দুর্ভিক্ষের ছায়া প্রতিদিনই বিস্তৃত হচ্ছে। এছাড়াও গাড়ীভাড়া, বাড়ীভাড়াসহ জীবনযাত্রার ব্যয় বাড়ছে লাগামহীনভাবে। এমনিতেই কর্মসংস্থান নেই, তার ওপর নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যবৃদ্ধিতে নাভিশ্বাস সাধরণ মানুষের। মধ্যম ও নিম্ন আয়ের মানুষকে পথে বসিয়ে দিচ্ছে। অভাবের তাড়নায় মা সন্তান বিক্রি করছে, কেউ কেউ আত্মহত্যা করছে। চৈত্রের তীব্র রোদের মধ্যে দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁড়িয়ে টিসিবি থেকে তুলনামূলক কম মূল্যে নিত্যপণ্য কেনার জন্য ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড়ে বোঝা যায় বর্তমান পরিস্থিতি কত ভয়াবহ। চাহিদার তুলনায় পণ্য কম থাকায় দুই/তিন ঘন্টার মধ্যে শেষ হয়ে যায় বিক্রি এবং তার পরে পণ্য কিনতে আসা ক্রেতারা খালি হাতেই ফিরে যান। এমতাবস্থায় ক্ষুধা, অনাহার, অর্ধাহারে বিপন্ন দেশের মানুষকে এই শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে অতি দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি আপনার প্রতি আহবান জানাচ্ছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন