কলাপাড়ায় দেশের দক্ষিনাঞ্চল কুয়াকাটা ও সমুদ্রতীরবর্তী উপকূলীয় জনপদে বেড়েছে ব্যাপকহারে তরমুজের চাষ। এখন আবহাওয়া ও পরিবেশ তরমুজ চাষের বেশ উপযোগী। এছাড়াও কম খরচে অধিক লাভবান হওয়ায় কৃষকরা বেশ আগ্রহী হয়ে উঠেছেন তরমুজ চাষে। তরমুজ অপেক্ষাকৃত সুমিষ্ঠ হওয়ায় ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়ের কাছে এর চাহিদাও প্রচুর। উপকূলের বিস্তীর্ন মাঠ জুড়ে রয়েছে তরমুজের সবুজ গাছ। ফুল-ফলে ভরে গেছে কৃষকের স্বপ্নের ক্ষেত। এখনই সবুজ পাতার ফাঁকে উকি দিচ্ছে তরমুজ। চৈত্রের তপ্ত রোদে দিনের বেশির ভাগ সময় চাষীরা পার করছেন ক্ষেত পরিচর্যা। উৎপাদন ও দাম ভালো পাওয়ায় কলাপাড়ায় গত বছরের চেয়ে এ বছর দ্বিগুন পরিমাণ জমিতে তরমুজ চাষাবাদ হয়েছে।
কলাপাড়া উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, গত বছর কলাপাড়ায় দুই হাজার হেক্টর জমিতে চাষাবাদ হয়েছিল। সেখানে এবার চাষাবাদ হয়েছে আরো বেশি। ভিক্টর সুগার, ওশেন সুগার, গেন্ডারি, বাংলালিংক, ব্লাকবেরি, স্থানীয় ও অন্যন্যা জাতের তরমুজ চাষ হয় এ এলাকায়।
সরেজমিনে গিয়ে ঘুরে দেখা যায়, কলাপাড়ার ১২টি ইউনিয়নে তরমুজের ক্ষেত ঘুরে দেখা যায় নতুন বিপ্লবের সাক্ষী হতে মাঠে নেমেছেন চাষীরা, সবুজ পাতার ফাঁকে উকি দিচ্ছে তরমুজ। যেখানে চোখ যায়, সেখানেই তরমুজ। পুরো ভরা মৌসুম জুড়ে চলছে পরিচর্যা, কাটা, পরিবহন ও বাজারজাত করা নিয়ে চাষিদের প্রস্তুতিপর্ব। এদিকে চাষের উপযোগী জমি কমে যাওয়ায় তরমুজ চাষের জন্য বিখ্যাত ধানখালী ইউনিয়নে অনেক কৃষক পার করছে বেকার সময়। গত মৌসুমে করোনায় সরবরাহ বা বাজারজাত করতে না পারায় দাম পাননি চাষীরা। তবে এবার সেই ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে পারবেন বলে আশা প্রকাশ করেন তারা। তবে মিষ্টি পানি সংরক্ষণের জন্য ভরাট হয়ে যাওয়া খালগুলো খননের জোর দাবি জানান প্রান্তিক কৃষকরা।
ধুলাস্বর, লতাচাপলী ও ডালবুগঞ্জ ইউনিয়নে কাওয়ারচর ও গঙ্গামতি গ্রামের তরমুজ চাষী জনি রহমান, সবির উদ্দিন, মোবারক হোসেন এ প্রতিনিধিকে জানান, বৃষ্টি হওয়ার কারনে তরমুজ ক্ষেতে গাছের অবস্থা একটু খারাপ হয়েছে, এজন্য গাছে ভাইরাস ধরেছে। এবছর চালান লইতে সমস্যা হতে পারে। ফলন ভাল হয় নাই। বৃষ্টির পানিতে তরমুজ ক্ষেত তলিয়ে যাওয়ার কারণে আমাদের কপালে এখন ভাজ পড়েছে। মিষ্টি পানি সংরক্ষণের জন্য ভরাট হয়ে যাওয়া খালগুলো যদি সরকার খনন করতো তাহলে কৃষকেরা সুফল ভোগ করতো।
ধানখালী ইউনিয়নে দেবপুর গ্রামের তরমুজ চাষি নয়ন সিকদার জানান, গত বছর কাজের লোকজনের বেতন দিয়ে ভাল টাকা লাভ হয়েছি। এ বছর এখনও বলতে পারবনা কিন্তু গাছের অবস্থা এখনো ভাল রয়েছে। অনেক টাকা এ বছর তরমুজের পিছনে ব্যয় করছি। আমার তরমুজ ক্ষেতের পাশাপাশি রয়েছে মিষ্টি কুমরার চাষ, করলা, মুসুরি ডাল। গত মৌসুমে করোনায় সরবরাহ বা বাজারজাত করতে না পারায় দাম ভাল হয়নি। তবে এবার সে ক্ষতি কিছুটা হলেও পুষিয়ে উঠতে পারবেন বলে আশা করেন।
কলাপাড়া উপজেলা কৃষিকর্মকর্তা এ আর এম সাইফুল্লাহ গণমাধ্যমকে জানায়, কলাপাড়ায় দুই হাজার হেক্টরের বেশি জমিতে তরমুজ চাষাবাদ হয়েছে। আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে এবছর এবছর তরমুজের বাম্পার ফলন হবে বলে তিনি জানান।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন